12 January, 2019

ক্রিস্টা - ক্রিস্টা ডেভিস। AN ETERNAL MOTHER > MOTHER MARY

"মানব জনম দিয়ে বিধি
পাঠিও আবার পৃথিবীতে
যত মানুষ দেখলাম আমি
মাপার মত নেই যে ফিতে"
একটু পরিবর্তন করে গানটির প্রথম স্তবক লিখতে বাধ্য হলাম।
স্তম্ভিত!
এই অন্ধকার সময়েও এতখানি আলো!
মানুষ হিসাবে জন্ম নেওয়া সার্থক বলে মনে হয়।
এক গর্ভবতী মা জানতেন,তাঁর গর্ভস্থ শিশু জন্মানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাবে এক অন্য জগতে যেখান থেকে কেউ কোনদিন ফিরে আসে না। তবু তিনি জন্ম দিলেন। কেন বলুন তো? তাঁর সন্তানের অঙ্গে হয়তো বাঁচবে অন্য কোন মায়ের সন্তান। ভাবা যায়!
যে পৃথিবীতে মানুষ একটা বোমার ঘায়ে চোখের পলকে মেরে ফেলে লক্ষ মানুষকে, যে পৃথিবীতে গরুর নামে - রামের নামে - আল্লার নামে মানুষ পিটিয়ে মানুষকে খুন করে - সেই পৃথিবীই জন্ম দেয় এমন মায়ের
সেই মায়ের নাম পরে বলছি
১৮ সপ্তাহের মাথাতেই সেই মা জানতে পেরেছিলেন, যাঁর অপেক্ষায় তিনি দিন গুণছেন, সে বাঁচবে না। মাতৃগর্ভেই তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি। যদি তার জন্ম হয়ও, তবে তার আয়ু হবে বড়জোর কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকটা দিন। তার পরেও শিশুকন্যার জন্ম দেন তিনি। একটাই কারণে। যাতে ওই মৃত শিশুর হৃদপিন্ড, ফুসফুস অন্য কোনও শিশুর কাজে লাগে।
মার্কিন মুলুকে টেক্সাসের ক্লিভল্যান্ডে মা ওই শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন বড়দিনে। ডাক্তাররা যা বলেছিলেন, তাই হয়েছিল। মাথার একটা অংশ না নিয়েই জন্ম হয়েছিল শিশুটির। চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় যাকে বলে, ‘অ্যানেনসেফালি’। মা শিশুটির নাম রেখেছিলেন রিলেই আর্কাডিয়া। নিউ ইয়ার্স ইভে যখন গোটা বিশ্ব আনন্দে মাতোয়ারা, তখন তিনি আর তাঁর বয়ফ্রেন্ড ডেরেক লভেটকে কাঁদিয়ে মৃত্যু হয় রিলেইয়ের। মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগেই ক্লিভল্যান্ডে তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন ডাক্তার, নার্সরা। রিলেইয়ের হৃদপিন্ডের উপর নজর রাখতে। রিলেইয়ের মৃত্যুর পর তার হৃদপিন্ড, ফুসফুস অন্য শিশুকে দেওয়া যাবে কি না, তা বুঝে নিতে।
রিলেই ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এক সপ্তাহ বাঁচল ঠিকই, কিন্তু অন্য শিশুদের কাজে লাগার জন্য দিয়ে গেল তার ছোট্ট হৃদপিন্ড, ফুসফুসকে। মৃত্যুর পর রিলেইয়ের হৃদপিন্ড দেওয়া হল একটি মুমূর্ষ শিশুকে। আর তার ফুসফুস গেল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে। গবেষণার জন্য যাঁরা হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন শিশুদের ফুসফুস।
একটি বেসরকারি সংস্থার সহকারী ম্যানেজার কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘‘ও যে থাকবে না, তা তো অনেক আগেই জানি আমি আর ডেরেক। আমি যখন ১৮ সপ্তাহের গর্ভবতী, তখনই ডাক্তাররা আমাকে সেটা বলেছিলেন। গর্ভপাতও করাতে চেয়েছিলেন। আমিই রাজি হইনি। ওকে আমি জন্মাতে দিয়েছিলাম ওর অঙ্গ, প্রত্যঙ্গ দান করব বলে।’’
তিনি জানিয়েছেন, তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর গর্ভে শিশুটির প্রথম নড়াচড়া টের পেয়ে। খুশিও হয়েছিলেন। ‘‘গর্ভে থাকার সময় কোনও সমস্যাতেই ফেলেনি ও। শুধু জন্মের সময় মাথাটা উল্টো দিকে থাকায় প্রসবে কিছুটা অসুবিধা হয়েছিল’’, বলেছেন তিনি।
জন্মের পর যে সাতটা দিন শ্বাস নিয়েছিল রিলেই, তার প্রায় প্রতিটি মুহূর্তই ধরে রেখেছেন তিনি। ভিডিয়ো ক্যামেরায়। ‘‘সেই সব ছবিই সারাটা জীবন ধরে দেখে রিলেইকে মনে রাখব, মনে করব’’, বলেছেন
ক্রিস্টা - ক্রিস্টা ডেভিস।
AN ETERNAL MOTHER > MOTHER MARY
ছবিতে রিলেই আর্কাডিয়া
সংবাদ ও চিত্র সৌজন্যঃ আনন্দ বাজার ই পত্রিকা
সংবাদ সংস্থা
টেক্সাস|
১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১৮:১৩:৫৪
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১৮:১২:০৮

No comments:

Post a Comment