29 December, 2015

জননী জন্মভুমিশ্চ স্বর্গাদপী গরীয়সী

জননী জন্মভুমিশ্চ স্বর্গাদপী গরীয়সী
মা - কি অসাধারণ সন্তানের জন্মদাত্রী তুমি
তাই না –

এবার আমি তোমাকে করি প্রশ্ন
কেন জন্ম হয়েছিল মা তোমার
তোমার ধর্ষণকারীদের জন্ম দেওয়ার জন্য ?
এবার আমি তোমাকে করি প্রশ্ন
তোমার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারার জন্য
তুমি জন্ম দাও পুরুষের !
তুমি কি জন্ম দাও পণের দাবীতে তোমায়
অগ্নিস্নান করানোর জন্য ?
বল মা -
উত্তর দাও
আমার বিবেক আজ তোমার জবাব চায় !

কেন তোমার মাথা নত মা
কেন তুমি মূক ?
কেন তোমার কণ্ঠ তীব্র প্রতিবাদে
আগুন ঝরায় না
বলে ওঠে না
ওরে শয়তান নিজেকে জিজ্ঞাসা কর তুই
কেন আমি তোকে জন্ম দিয়েছিলাম !
আমার শরীরটাকে খুবলে খুবলে খাওয়ার সময়
কেন তোর মনে পড়ে না
এই শরীরটার মত কোন এক শরীর থেকে
মানুষের জন্ম হয় ?
আমার মুখে অ্যাসিড ছুঁড়ে যখন তুই
নাচিস উল্লাসে -
পণের দহন জ্বালায় আমাকে জ্বলতে দেখে
তোর পরিবারের সাথে তুই যখন
আর একটা টাঁকশাল ঘরে আনার চিন্তা করিস -
তখন তোর মনে পড়ে না কেন
তোর মাকে এইভাবে জ্বলতে হলে
তোর জন্ম হত কি করে ?

এ লজ্জা আমার নয় রে
এ লজ্জা তোদের
যখন আমার মত কাউকে বেশ্যা বলিস তোরা
আমি হেসে উঠি প্রচণ্ড উল্লাসে।
আমাকে বেশ্যা বানাল কে রে
কেন বলতে পার না মা
তুই যখন আমাকে বেশ্যা বলিস তখন
একবার ভাব তোর বাবার মত কোন পুরুষ
আমাকে বানিয়েছে বেশ্যা।

আর মাথা নিচু করে থেক না মা
মাথা নিচু করে থাকার দিন
হয়ে গেছে শেষ ।
নগরে – প্রান্তরে আকাশ – বাতাস কাঁপুক
কেঁপে উঠুক সাগর – পাহাড়
তোমার হুংকার প্রলয় আনুক মা
বলে ওঠ তুমি -

শোন তোরা
শপথ নিলাম আমি
আজ থেকে
মানুষ জন্ম নেবে না পৃথিবীতে। ২৯/১২/২০১৫

24 December, 2015

কি করে

আমি একসময়ে ভাবতাম লিখব কি করে
মানুষের মনের কথা কলমে আমার
আনব কি করে ?
কারণ
যা ভাবি
ভাবার জন্য তো পড়তে হয় একটু
দেখি সব কথা লিখে গেছেন ওঁরা
হরপ্পা – মহেঞ্জোদরো হয়ে
আরাকু গুহা গহ্বর থেকে জব্বল পুর বেয়ে
ভারতের ইতিহাস বয়ে
গুহাচিত্রে অথবা প্রস্তর কাজে
অজন্তা - ইলোরা আর খাজুরাহো ছুঁয়ে
সব কিছু বলে গেছেন মানুষের শিল্পী !
মহাভারতের এক সন্তান আমি
যে ভারত বলেছে আমার মধ্যে সে
“সোহং” – কত বিশাল ধারণা
যে দিয়েছে “আত্মন” এর ধারণা
কে তোমার আত্মা বা ওই আত্মন
ধর্মের সুজন্মা সন্তান
একটু বলুন না কে আত্মা
অথবা আত্মন
আমি এক মানুষ বলি –
ধর্মের সুজন্মা সন্তান আত্মা
কাজ আপনার
গীতা বলে
“আমি আত্মা আমাকে পারে না
মৃত্যু বিনাশ করতে,
অস্ত্র ছেদন করতে ব্যর্থ হয়
অগ্নি দগ্ধ করতে পারে না,
জল পারে না সিক্ত করতে
এবং শুষ্ক করতে পারে না বায়ু” |
আমি বিশ্বাসী আত্মায় !
আমায় গাল দিন আমার বামপন্থী বন্ধুরা
আমি হাসব আর তারপর
প্রশ্ন করি বন্ধু
তবে আত্মা কি
আত্মা মানুষের চিন্তন
সুকান্ত ছাই হয়ে গেছে চিতায়
তাঁর আত্মা জাগে এই শব্দ গুচ্ছে
“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আজ
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার”
নজরুলের হাড় আজ কবরেও নেই
গুঁড়ো হয়ে মিশে গেছে মাটিতে
তবু নজরুলের আত্মা বলে
“জাতের নামে বজ্জাতি আজ
জাত জালিয়াত (@Suman Pahari) রা খেলছে জুয়া”
রবি কবি তাঁর আত্মায় –
তাঁর চেতনায় আসা শব্দ লিখেছেন
প্রশ্ন করছেন
খোলা কাগজে
“আমার কবিতা জানি আমি
গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সর্বত্র গামী”
তারপর কবি উত্তর দেন
যে আছে মাটির কাছাকাছি
সে কবির বানী লাগি কান পেতে আছি
লিখিত হয় ট্রামের চাকায় লেগে থাকা দেহাংশ নিয়ে
এক অসহায় কবির প্রশ্ন
“অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া”।
তাহলে আমি লিখব কোন শব্দ দিয়ে
মনের কোন অনুরণন তোমাকে চিন্তা করাবে
তোমাকে ভাবাবে –
সব শব্দ তো বলা হয়ে গেছে
সব কথা হয়ে গেছে শেষ
সব অক্ষর আঁচড় কেটে গেছে চিন্তায়
নতুন করে কি লিখব ?!
নতুন করে কি লিখব – তাই তো
দেখলাম চোখের সামনে
আজও মানুষ ভাবে দুটো রাতের মাঝে একটি দিন
আমি তো তা বিশ্বাস করি না
আমি জানি রবীন্দ্রনাথ – নজরুল – সুকান্ত
জীবনানন্দ হয়ে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পাশ থেকে
শঙ্খ ঘোষ আমায় বাস্তব দেখান
বিভুতি ভূষণ দেখান স্বপ্ন এবং
ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় আর দীপক চন্দ স্যার
আপনারা আমাকে সবসময় মনে করিয়ে দেন
দুটি দিনের মাঝে থাকে একটি রাত !
জীবন বাঁচে অন্ধকারে নয় আলোতে
আমি তাই আলোর কথা লিখি
লিখি আর বলি মনে মনে
"থোড়াসা রুমানি হো যায়ে"
আর লিখে চলি
বদজাতদের খিস্তি পাওয়ার
কিংবা খিস্তি খাওয়ার আনন্দে। শ্রীতোষ ২৪/১২/২০১৫

19 December, 2015

ওরা কাদের লোক ?

রাতের অন্ধকার থেকে সকাল
হয়ে সন্ধ্যা পার হয়
৫ থেকে ৮৫
মানুষের ফেলে
দেওয়া নোংরা কুড়িয়ে যায়।

ওরা "DAS CAPITAL" জানে না -
জানে না "স্বচ্ছ ভারত"
তাই ওরা
ময়লার বিরুদ্ধে সংগ্রামে
নিজেদের শরীরকে ধ্বংস করে
ভারতকে "স্বচ্ছ" করে -
ওরা ওরাই !

ওদের নিয়ে কোন "মহামিছিল" হয় না -
ওরা শ্রমিক
তবু নেই কোন অধিকার শ্রমিকের
মানুষের চেহারায় বাঁচে
আর মানুষের চেহারা ধারী
দানবের হাতে মার খায়
ওরা আমাদের ফেলে যাওয়া বর্জ্য পদার্থ কে
নিজের শরীরে নিয়ে আমাদের বাঁচায় -

তাই তো
ওদের নিয়ে কোন "মহামিছিল" হয় না।

ওরা ওদের মত বাঁচে
আর আমরা
তথাকথিত সভ্য মানুষ গুলো
যারা স্বপ্ন দেখাই "শ্রেণীহীন সমাজের"
অথবা বলি "জয় দেশপ্রেমিক হিন্দু ভারত"
কিংবা অমুক শ্রী - রতন - ভূষণ বিলিয়ে চলি
ওদের দেওয়া করের আনন্দে
ওদের ধর্ষণ করি -

ওরা দেখে আর হাসে
ওদের হাসি কান্না হয়ে ঝরে
অধিকার হীন মানুষের কান্না। শ্রীতোষ ১৮/১২/২০১৫

12 December, 2015

রাজনৈতিক বেশ্যা

পয়সার বিনিময়ে যারা শরীর বিক্রি করে
তাদের বেশ্যা বলে ডাকি
লক্ষণ শেঠ - উদয়ন গুহ - রেজ্জাক মোল্লা
এবং
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী !
যে আপনাকে "বেদের মেয়ে জোছনা" বলেছিল
আজ আপনি তার হাত ধরে আছেন
মাত্র একটি উদাহরণ -
তাই প্রশ্ন করি
ক্ষমতার লোভে যারা আদর্শ বিক্রি করে
তারা কি ?
কি বলে ডাকব তাদের ? শ্রীতোষ ১২/১২/২০১৫

সুজেট তোমাকে

একটু তো নাটক করি -
প্রতিদিন কাঁদি মনে
নারী পেল বেশ্যা হওয়ার অধিকার !
যে মঞ্চে ছিল তার অধিকার সবচেয়ে বেশী
তাকে ক'জন চেনে-
মঞ্চের ইতিহাস জানে ক'জন
তার অর্থে - তার অভিনয়ে জাগে
বঙ্গ নাট্ট মঞ্চ - তবু তো বেশ্যা সে
নটী এক।

তার নামে মঞ্চের নাম হবে
সমাজ মেনে নেবে !
হয় না তো -
বেশ্যা কে বেশ্যার মত থাকতে হবে
তার শরীরে তার অর্থে
নাগরের অধিকার
তাই ব্যবহৃত হল সে
আজকের সুজেটের মত
স্বপ্ন দেখানো হল তাকে
বাড়ি পৌঁছে দেব
তোমার নামে মঞ্চ করে দেব
সে উঠে পড়ল অথবা আপন করে নিল
চলন্ত গাড়ি তে কিংবা মঞ্চে
দেওয়া প্রতিশ্রুতি
ওদের প্রয়োজন হয়ে যখন হয়ে গেল শেষ
ছুঁড়ে ফেলে দিল বিনোদিনী অথবা সুজেটকে
চলন্ত গাড়ি হতে অথবা মঞ্চ হতে
ওদের জন্য আছে ওদের মত অনেক নেকড়ে
যারা বলে চলে
বিনোদিনীরা বহু ভোগ্যা - প্রকাশ্যে ওদের ধর্ষণ
করতে হবে না তোমায় -
তুমি ওদের শরীরের দিকে চেয়ে
জিভ চাট লালসায় -
ওদের মনকে কর ধর্ষণ
তোমার কথায় - তোমার সুন্দর(!) মানসিক চিন্তায়
বিনোদিনী ধন্য হবে - গহর জান ধন্য হবে -
ধন্য হবে
আঙুর বালা আর আম্রপালী অথবা সেই "সুতনুকা"
যারা কারো সন্তান ছিল - ছিল কারো বোন অথবা
হতে পারত কারো মা
ঠিক সুজেটের মত - শ্রীতোষ ১২/১২/২০১৫