05 December, 2017

শেষ চাওয়া

তোকে নির্ভয়া হতে দেব না,
পা চিরে দেওয়া তোর শরীর দেখতে পারব না,
কাঠ কয়লার মত পুড়ে যাওয়া তোর
শরীর নিয়ে রাজনীতির খেলা খেলতে দেখতে পারব না।

ব্যস্ত সময়ে রাজপথের ধারে তোর শরীর নিয়ে খেলার সময়
মানুষের ভিডিও করা দেখতে পারব না
দেখতে পারব না তোর যোনিতে টর্চ
অথবা রাজনীতির প্রয়োজনে তোর নাম নিয়ে
পথে নামতে দেব না কাউকে
(যে ঘটনা ঘটেই নি তোর সাথে)।
পারব না তোর উপরে ঘটা অত্যাচারকে
তোরই পোশাকের দোষ বলে মানতে
মানতে পারব কি সোনা মা?
তোর উপরে ঘটা অত্যাচার তোরই কারণে
কারণ তুই অত রাত্রে পথে বার হয়েছিলি -
অথবা তোর পোশাকের দোষ ছিল -
কিংবা তুই কাউকে PROVOKE করেছিলি
তোর উপরে অত্যাচার করতে।
তুই নষ্ট মেয়ে -
এক চার্চের মাদারের মত
৮০ বছর বয়সের এক নষ্ট মেয়ে তুই।
পণের দাবীতে তোর গোটা শরীরে আঘাত
অথবা তোর বিষে নীল হয়ে যাওয়া দেহ
হয়তো বা জিভ বার করা এক ঝুলন্ত শরীর
সোনা মা আমি দেখতে পারব না।
তাই তোকে নিজের হাতে মারলাম গলা টিপে
ঢুকিয়ে দিলাম তোর কোমল শরীর এক যন্ত্রে
তোকে মারার জন্য মরব আমিও
ঝুলব ফাঁসির দড়িতে
সমাজের ঘৃণা নিয়ে
মরার পরে আমার জিভ বার করা ঝুলন্ত শরীর বলবে
এ পৃথিবী নারী শূন্য হোক
এ আমার শেষ চাওয়া। শ্রীতোষ ০৫/১২/২০১৭

26 November, 2017

ধর্ম ঘটের ইতিহাস।

যখন প্রতিবাদী মানুষ পথে নামতে বাধ্য হয় - ডাকে বন্ধ তখনই এক শ্রেণীর মানুষ হই চই করে ! তারা জানে না সাধারণ ধর্ম ঘটের ইতিহাস। সেই তাঁদের জন্য আমার এ লেখা - ইতিহাসের পৃষ্ঠা ঘাঁটা।
সাধারণ ধর্মঘটের ইতিহাসের পাতা উল্টোলে দেখতে পাই প্রথম সাধারণ ধর্মঘট ঘটেছিল প্রাচীন রোমে খ্রিষ্টের জন্মের ৪৫০ বছর আগে।
An early predecessor of the general strike may have been the secessio plebis in ancient Rome. In the Outline Of History, H.G. Wells recorded "the general strike of the plebeians; the plebeians seem to have invented the strike, which now makes its first appearance in history." Their first strike occurred because they "saw with indignation their friends, who had often served the state bravely in the legions, thrown into chains and reduced to slavery at the demand of patrician creditors." The patricians made a mean use of their political advantages to grow rich through the national conquests at the expense not only of the defeated enemy, but of the poorer plebeian..
"The plebeians, who were expected to obey the laws, but were not allowed to know the laws" (which patricians were able to recite from memory)
তাহলে কেন ধর্মঘট হল? মুল কারণ যাঁদের আইন মেনে চলতে বলা হত তাঁদের আইন জানার কোন অধিকার নেই। আজকের ভারত বর্ষের থেকে খুব একটা ভালো অবস্থা নয় তাই না ? আনন্দের কথা এই ধর্মঘট সফল হয়েছিল - প্লেবিয়ানরা সাধারণ সভায় যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার অধিকার ছিনিয়ে আনতে পেরেছিল। আরও একটি উল্লেখ যোগ্য ঘটনা - এই ধর্ম ঘটের ফলে রোমের আইন আবার নতুন করে লেখা হয়েছিল যাতে সকলের যাতে আইন জানতে পারে সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।
এরপর আসি আধুনিক যুগেঃ
প্রথম প্রতিবাদ হল ইংল্যান্ডে, ১৮১৭ র মার্চে Lancashire weaver দের প্রথম প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত হল radical pamphleteer William Benbow এর নেতৃত্বে। সে সময় শিল্প বিপ্লবের সময়। ১৮৩২ এর জানুয়ারি মাসে Benbow একটি pamphlet প্রকাশ করলেন যার শিরোনাম Grand National Holiday and Congress of the Productive Classes। ১৮৪২ সালে এই আন্দোলন জন্ম দিল আধুনিক যুগের প্রথম সাধারণ ধর্মঘটের। শুনলে গর্বিত হবেন ৫,০০,০০০ শ্রমিক সে সময়ের ধর্মঘটে অংশ নিয়েছিল।
এরপর আমেরিকাঃ
The mass abandonment of plantations by black slaves and poor whites during the American Civil War has, controversially, been considered a general strike. In his classic history Black Reconstruction in America, W. E. B. Du Bois describes this mass abandonment in precisely these terms:
Transforming itself suddenly from a problem of abandoned plantations and slaves captured while being used by the [Southern] enemy for military purposes, the movement became a general strike against the slave system on the part of all who could find opportunity. The trickling streams of fugitives swelled to a flood. Once begun, the general strike of black and white went madly and relentlessly on like some great saga
এরপর অর্ধ শতকের অপেক্ষা - প্রতিবাদের স্থান এবার বেলজিয়াম। তবে তার আগে অনেক সাধারণ ধর্মঘট হয়েছে। যেমনঃ Philadelphia General Strike of 1835 lasted for three weeks, after which the striking workers won their goal of a ten-hour workday and an increase in wages।
এর পরে এল 1877 Saint Louis general strike, which grew out of the events of the Great Railroad Strike of 1877 across the United States and the 1892 New Orleans general strike।
এল রুশ বিপ্লব। অজস্র ধর্মঘট সংগঠিত হল। তারপর এল The 1926 United Kingdom general strike started in the coal industry and rapidly escalated; the unions called out 1,750,000 workers, mainly in the transport and steel sectors, although the strike was successfully suppressed by the government.
সাধারণ ধর্মঘটের ইতিহাস বিশাল বড়। পাঠক ধৈর্য চ্যুত হবেন। তাইঃ
সাধারণ ধর্মঘট বলতে মূলত কি বোঝায় ও পৃথিবীর কিছু অন্যতম সাধারণ ধর্মঘটের তালিকা দিয়ে শেষ করছি।
Ralph Chaplin, editor of the Industrial Workers of the World (IWW) newspaper Solidarity and later, of the Industrial Worker, identified four levels of general strike,
A General Strike in a community.
A General Strike in an Industry.
A national General Strike.
A revolutionary or class strike—the General Strike.[26]
In the 1905 pamphlet The Social General Strike, published in Chicago in 1905, Stephen Naft had previously acknowledged the same four levels of the general strike:
[The name "General Strike"] is often used to designate the strike of all branches in one trade; for instance the general strike of the miners; when helpers and hoisting engineers, etc. are all out. Then it is used as: General Strike of a city, i.e., "General Strike in Florence", or a General Strike in a whole country or province, for the purpose of gaining political rights, i.e., the right to vote; as in Belgium, or Sweden.
তালিকাঃ
The largest general strike that ever stopped the economy of an advanced industrial country – and the first general wildcat strike in history – was May 1968 in France. The prolonged strike involved eleven million workers for two weeks in a row, and its impact was such that it almost caused the collapse of the de Gaulle government. Other notable general strikes include:
494 BC: The Aventine Secession, Ancient Rome, creating the Tribune of the Plebs
449 BC: A secessio plebis leading to the adoption of the Twelve Tables
287 BC: A secessio plebis leading to the adoption of the Lex Hortensia
(Note: "plebeian secession" was a tactic used by the Roman plebs of vacating a city entirely and leaving its ruling elite to fend for itself, thus an even more radical action than a "general strike", yet unlike the latter term, it does not pertain to withholding labour within a wage-system. General strikes in the current sense of the term only begin to take place in a context where in which labour is treated as a commodity, and wage workers collectively organise to halt production.)
1835: 1835 Philadelphia General Strike, Philadelphia, Pennsylvania
1842: 1842 General Strike, Great Britain
1862-1865: The plantation general strike in the Confederate States of the U.S.
1877: St. Louis general strike, St. Louis, Missouri, an outgrowth of the Great Railroad Strike of 1877 in the United States
1886: Walloon jacquerie of 1886 Wallonia
1892: New Orleans General Strike, New Orleans, Louisiana, U.S.
1893: Belgian general strike of 1893, Belgium
1902: Geneva General Strike of 1902, Switzerland
1905: The Great October Strike, Russia; see 1905 Russian Revolution. World's largest general strike.
1907: Geneva General Strike of 1907, Switzerland
1907: New Orleans Levee General Strike, United States
1909: A general strike coupled with a major uprising in Barcelona
1909: Swedish General Strike
1909: Uprising of the 20,000, New York, NY, U.S.
1912: Brisbane General Strike, Australia
1912: Zurich General Strike of 1912, Switzerland
1917: Australian General Strike
1917: Brazilian General Strike
1917: Spanish General Strike
1918: Swiss General Strike
1919: Barcelona General Strike, Spain
1919: Winnipeg General Strike, Winnipeg, Manitoba, Canada
1919: Seattle General Strike, Seattle, Washington, U.S.
1919: General Strike in Basel and Zurich 1919, Switzerland
1920: General strike in Germany to stop Kapp Putsch.
1920: Romanian general strike
1922: Italian General Strike
1920: German passive resistance strikes at the Ruhr
1926: UK General Strike of 1926
1933: French general strike of 1933
1932: Geneva General Strike of 1932, Switzerland
1934: West Coast Longshoremen's Strike, US
1934: Minneapolis Teamsters Strike, US
1934: Toledo Auto-Lite Strike, US
1936: Palestinian general strike
1936: French general strike of 1936
1936: Syrian General Strike
1938: French general strike of 1938
1941: February Strike, Netherlands
1942: Luxembourgian General Strike
1946: Indian General Strike
1946: Oakland, California General Strike
1950: Austrian General Strikes
1950: General strike against Leopold III of Belgium
1953: Hartal 1953, Ceylon
1954: General strike of 1954, Honduras
1956: Finnish General Strike
1958: Bahamas General Strike
1960: 1960-1961 Winter General Strike in Belgium
1968: French General Strike
1972: Quebec General Strike
1973: Uruguayan General Strike
1974: Ulster Workers Council Strike, Northern Ireland.
1984: Uruguayan General Strike
1988: Spanish General Strike
1989: Two-hour general strike of all citizens of Czechoslovakia during the Velvet Revolution
1992: Nepalese General Strike
1995: French Public Sector Strikes
1995: Days of Action, Canada
2000: Cochabamba General Strike, Bolivia
2002: Italian General Strike
2002–2003: Venezuelan General Strike
2005: Bolivian Gas Conflict
2006: April 2006 Nepalese General Strike
2007: Guinea General Strike
2009: French Caribbean General Strikes
2010: Spanish General Strike
2012: Spanish General Strike the 29th of March
2012: The 14th of Novembre took part a European General Strike in countries as Spain, Greece, Italy, Portugal, Cyprus ...
2013: Slovenian Public Sector General Strike
একটি সাধারণ ধর্মঘটের কথা বলিনি এখনও পর্যন্ত আর তা হল পৃথিবীর ইতিহাসে - মানুষের ইতিহাসে সর্ব বৃহৎ সাধারণ ধর্মঘটের কথা।
বন্ধুরা আনন্দিত হবেন সে ইতিহাস আমাদের ভারতবর্ষের ইতিহাস। যে ইতিহাস বলেঃ
সেদিন ১৫০ মিলিয়ন থেকে ১৮০ মিলিয়ন শ্রমজীবী মানুষ হাতে হাত মিলিয়ে তাঁদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে সামিল হয়েছিল। লিখতে গিয়ে কি - বোর্ডের উপর আমার হাত কাঁপছে -
তারিখ হল
০২. ০৯. ২০১৬
তথ্যসূত্রঃ WIKIPEDIA

05 November, 2017

বঙ্গীয় সুশীল সুজনদের প্রতি

নন্দনটা হারিয়ে গেছে
অ্যাকাডেমিটা কালীঘাটে,
মোমবাতি সব বিকিয়ে গেছে
রতন - ভূষণের খোলা হাটে।
পা গুলোতে শেকল পরা
চোখ গুলো তাই বন্ধ,
বিবেক আজি ঘুমিয়ে যে তাই
মুখ বলে না মন্দ।
মরুক রোগে মানুষ গুলো
ধর্ষিতা হোক মেয়েরা,
আমরা আছি পরম সুখে
ডিলিট দিদির পেয়ারা!
শ্রীতোষ (সুশীল সুজন না হওয়ার আনন্দে) ০৫/১১/২০১৭

26 October, 2017

দীপাবলি – কিছু কথা।


(প্রথমেই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নিই উইকিপিডিয়ার প্রতি, এছাড়াও আরও বেশ কিছু ওয়েবসাইটের প্রতি যাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ লেখা রচিত। নাম দিলে লেখা ভারাক্রান্ত হবে তাই আলাদা করে নামোল্লেখ না করার জন্য সকলের কাছে মার্জনা চেয়ে নিলাম।)
দীপাবলি শব্দটির অর্থ প্রদীপসমূহ। [সং. দীপ + আলি, আলী,..] অর্থাৎ প্রদীপের সমষ্টি। দীপাবলি – আলোর উৎসব। যে উৎসব মনের অন্ধকার দূর করে মনকে স্বচ্ছ করে, অজ্ঞানের অন্ধকার থেকে মানুষকে দেখায় জ্ঞানের আলো। এই দিনে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে, বিভিন্ন ভাবে এই উৎসব পালিত হয়।
দীপাবলি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, মরিশাস, গুয়ানা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, সুরিনাম, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিজিতে একটি সরকারি ছুটির দিন।
দীপাবলি বা দেওয়ালি উৎসবের কথা প্রথম পাওয়া যায় পদ্ম পুরাণ ও স্কন্দ পুরাণে যা প্রথম সহস্রাব্দে লিখিত বলে অনুমান করা হয়। স্কন্দ পুরাণে “দিয়া” কে সূর্যের যে আলো থেকে মানুষ তাঁর জীবন শক্তি লাভ করে তার প্রতীক হিসাবে বোঝান হয়েছে। কার্তিক মাসে এই উৎসব পালিত হয়। হিন্দুদের মধ্যে অনেকে এই উৎসবকে প্রথম খৃস্টপূর্বাব্দে রচিত কঠোপনিষদে উল্লিখিত যম – নচিকেতা আখ্যানের সঙ্গে যুক্ত করেন। তাঁদের মতে কার্তিক মাসে নচিকেতা যখন যমের বাড়িতে যান, তখন যম বাড়িতে ছিলেন না। নচিকেতা বিনা জলপানে অভুক্ত এবং নিদ্রাহীন অবস্থায় যমের বাড়িতে তিনদিন – তিন রাত্রি অপেক্ষা করেন। যম ফিরে এসে নচিকেতাকে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে অভ্যর্থনা করেন এবং তিনদিন অপেক্ষা করার প্রতিদানে নচিকেতা কে তিনটি বর দিতে সম্মত হন। এই দিনটিতেই তিনি যমের কাছ থেকে সেই তিনটি বর প্রাপ্ত হন যার ফলে মানুষ ন্যায় – অন্যায়, সত্য – অসত্য, প্রকৃত সুখ এবং সাময়িক আনন্দের মাঝে তুলনা করে সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারে। এক্ষেত্রে “দীপাবলি” শব্দের অর্থ হল জ্ঞানের আলো।
সপ্তম শতকে রাজা হর্ষবর্ধন তাঁর “নাগানন্দ” নাটকে “দীপাবলি” কে উল্লেখ করেছেন “দীপাপ্রতিপদাউৎসব”Deepapratipadutsava (Deepa = light, pratipada = first day, utsava = festival) নামে যেদিন প্রদীপ জ্বালানো হয় এবং নব বিবাহিত দম্পতী কে উপহার দেওয়া হয়। গুর্জর প্রতিহার রাজ্যের রাজকবি “রাজশেখর” (Rajashekhara) রচিত “কাব্যমীমাংসা” তে (যা কিনা ৮৮০ থেকে ৯২০ বছরের মধ্যে লিখিত) দীপাবলি উৎসব বর্ণনায় বলেছেন যে এই সময় বাড়ি – ঘর পরিষ্কার করে নতুন করে রং করা হত এবং বাড়ি – ঘর ও রাস্তা আলো দিয়ে সাজানো হত। প্রসিদ্ধ ফারসি ঐতিহাসিক ও পর্যটক আল বিরুনি একাদশ শতকে তাঁর ভারতবর্ষ ভ্রমণ কালের বর্ণনায় জানিয়েছিলন যে ভারতীয় হিন্দুরা কার্তিক মাসের অমাবস্যায় (New Moon Day) দীপাবলি উদযাপন করছে।
এছাড়াও উত্তর ভারতে বসবাসকারী মানুষের (মূলত হিন্দি বলয়) এর এক বড় অংশ বিশ্বাস করেন ১৪ বছরে বনবাস শেষ করে রাবণ হত্যাকারী রাম যখন সীতা, লক্ষণ ও হনুমান কে নিয়ে অযোধ্যায় প্রবেশ করছিলেন তখন নগর বাসী তাকে স্বাগত জানানোর জন্য নিজেদের বাড়ি – ঘর ও রাজপথ দীপমালায় সজ্জিত করেছিল। তার থেকেই দীপাবলি উৎসবের প্রচলন। কিছু অংশের মতে পাণ্ডবরা এই দিনেই তাদের ১২ বছরের বনবাস এবং ১ বছরের অজ্ঞাতবাস শেষ করে জন সমক্ষে এসেছিলেন।
ভারতের উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তে ৫ দিনের দীপাবলি উৎসবের প্রথম দিন পালিত হয় “ধনতেরাস”। এই দিনের আগে থেকে সেখানকার মানুষ তাঁদের বাড়ি ঘর, ব্যবসার জায়গা মেরামত করেন, পরিষ্কার করে, সুন্দর করে সাজান। মহিলা ও শিশুরা ঘরের ভিতরে, ব্যবসার জায়গায় এবং যাওয়া – আসার পথ ফুল – মালা দিয়ে সাজান, মেঝে সেজে ওঠে রঙ্গোলীর রঙ্গে। পরিবারের অন্যরা ব্যস্ত থাকেন তার বাইরের আলোক সজ্জা ও অতিথি আপ্যায়নের প্রস্ততিতে। (যে কথা না বললেই নয় - ভারতের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার শৈল্পিক একাত্মতা। ফুল ও রং দিয়ে তৈরি করা যে কারুকাজে সেজে ওঠে বাড়ি – ঘর, পথের দু পাশ, উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তের লোকেরা তাকে বলেন “রঙ্গোলী”। সেই একই কাজ বাংলার মানুষের কাছে নাম নিয়েছে “আল্পনা”। তামিলনাড়ুতে চলে যান দেখবেন নাম বদলে হয়ে গেছে “কোলাম”, রাজস্থানে ডাকে “মণ্ডনা (Mandana) এবং আরও কত। পরে এ নিয়ে আলাদা করে কিছু লেখার ইচ্ছা রইল।) ভারতের কিছু অংশের মানুষ “ধনতেরাস” এর দিনে সম্পদের দেবী লক্ষ্মী ও চিকিৎসার দেবতা “Dhanvantari”র (দুঃখের বিষয় অনেক চেষ্টা করেও বাংলায় লিখতে পারলাম না) জন্ম হয়েছে বলে বিশ্বাস করেন। এই দিনে বিশ্বাসী মানুষ সারা রাত তাঁদের ঘরে প্রদীপ জ্বেলে এই দুই দেবতাকে শ্রদ্ধা জানান ও প্রার্থনা করেন যে তাঁদের জীবন যেন সম্পদশালী ও নীরোগ হয়ে থাকে।
“ধনতেরাস” উৎসবের আর একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল, ভারতের উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তের মানুষ কিছু না কিছু সোনা – রুপোর গহনা বা অন্য কিছু জিনিস কিনে থাকেন। প্রথমে সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা, তারপর চলে বিক্রিবাটা। বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী এই সময় বিক্রিত পণ্যের উপর বিশেষ ছাড় ঘোষণা করে থাকেন। প্রসঙ্গত, সময়ের সাথে সাথে এই প্রথা আজ ভারতের অন্যান্য প্রান্তেও (বিশেষত পশ্চিম বাংলায়) বিস্তার লাভ করেছে।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন হল “নরক চতুর্দশী” যার অন্য আর একটি নাম ছোটি দিওয়ালী। হিন্দুদের একটি অংশের বিশ্বাস, এই দিনে কৃষ্ণ, সত্যভামা ও কালী তাঁদের মিলিত প্রচেষ্টায় নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। তামিলনাড়ু, গোয়া ও কর্ণাটকে এই দিনটিই “দিওয়ালি” হিসাবে পালিত হয়।
উৎসবের তৃতীয় দিন হল সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা। মানুষের এক অংশের বিশ্বাস এই দিনে সম্পদের দেবী লক্ষ্মী পৃথিবীতে নেমে আসেন। একই সাথে আরাধনা হয় গণেশ এবং কুবেরের। এই একই বিশ্বাসে ভারতের পূর্ব প্রান্তের এক বড় অংশের মানুষ দুর্গা পূজার পরের পূর্ণিমায় (কোজাগরী) দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করেন। আবার, পশ্চিম বঙ্গের এক বড় অংশের মানুষ (যারা এপার বাংলার লোক – চলতি কথায় ঘটি) এই একই বিশ্বাসে এই দিন (অর্থাৎ উৎসবের তৃতীয় দিনে) অলক্ষ্মী বিদায় করে মহালক্ষ্মীর আগমনে পূজার্চনা হয়। এইদিন বিশ্বাসী মানুষ, সম্পদের দেবীর আবাহনে সারারাত তাঁদের ঘরের জানলা – দরজা খোলা রেখে তাতে প্রদীপ (দিয়া) জ্বালিয়ে রাখেন যাতে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ থেকে তাঁদের ঘর বঞ্চিত না হয়। বাড়ির চারপাশে জ্বলে প্রদীপ, মানুষ একে অন্যের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, করেন মিষ্টি বিতরণ। এই উৎসবের দিনে বাচ্চা এবং বড়রা বিভিন্ন ধরনের আতসবাজিও ফাটিয়ে থাকেন।
চতুর্থ দিন। এই দিন মূলত স্বামী – স্ত্রীর মধ্যে মিলন বন্ধনের দিন। এই দিনের নাম পাডয়া, বালিপ্রতিপদ (Padwa, Balipratipada) এই দিনে স্বামী – স্ত্রী একে অন্যের সাথে উপহার বিনিময় করেন। ভারতের কিছু অংশে, এই দিনে পরিবারের সদস্যরা প্রতীকী জুয়া খেলায় অংশ নেন। কিছু স্থানে বিবাহিতা বোনকে তার দাদা / ভাই নিজে সঙ্গে করে বাপের বাড়ি নিয়ে আসেন।
পঞ্চম দিন। ভাই দুজ। এ দিনের সৌন্দর্য বোধহয় ভারত ও নেপাল বাদে আর কোন দেশে নেই – কোন দেশের মানুষ এভাবে ভাই – বোনের সম্পর্ক পালন করে না। নেপালে এই দিনটি পালিত হয় “ভাই টিকা” নামে, এই দিনটি নেপালিদের অন্যতম প্রধান উৎসবের দিন। ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নামে এই দিনটি পালিত হয় যেমন মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ, তবে মূল অনুষ্ঠান একই থাকে।
এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তাঁর কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। ভারতে যদিও এই অনুষ্ঠান মূলত ভাই – বোনকে নিয়েই তবুও এই অনুষ্ঠানের আর এক মাধুর্য ফুটে ওঠে যখন ঠাকুমা / দিদিমা তাঁর নাতিকে ফোঁটা দেন বা বৌদি ফোঁটা দেন তাঁর দেওরকে। বাঙালিরা এই উৎসবের নাম দিয়েছেন “ভাই ফোঁটা”। বোনেরা ভাইদের কপালে ফোঁটা দেওয়ার সময়
“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥
যমুনার হাতে ফোঁটা খেয়ে যম হল অমর।
আমার হাতে ফোঁটা খেয়ে আমার ভাই হোক অমর”
এই আশীর্বচন উচ্চারণ করে তাঁর / তাঁদের দীর্ঘ, নীরোগ জীবন কামনা করেন। ভাই(রা) ও প্রণাম / আশীর্বাদের মাধ্যমে বোনেদের কল্যাণ কামনা করেন। তবে পরিবার ভেদে এই ছড়াটির কিছু পরিবর্তন চোখে পড়ে।
এতো গেল “ধনতেরাস” উৎসবের কথা। ভারতের পূর্ব প্রান্ত বাংলায় দীপাবলি দুভাবে পালন করা হয়, যার কথা আগেই বলেছি। এছাড়া নরক চতুর্দশীর দিন বাংলার মানুষ উদযাপন করেন ভূত চতুর্দশী নামে। এই দিনে চোদ্দ শাক খাওয়া এবং বাড়িতে চোদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়ে বাঙালি এই দিন পালন করে। বাঙালি মনে করে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁর পূর্ববর্তী চোদ্দ পুরুষকে আলোদান করে বর্তমান প্রজন্ম। লোককথায় এও শোনা যায় যে এই প্রদীপসজ্জার মাধ্যমে পরিবারের পিতৃপুরুষদের অনুষ্ঠানে পদার্পণ করার জন্য নিমন্ত্রণ পাঠানো হয়, যাতে তাঁরা মায়ের বাৎসরিক আগমনে উপস্থিত হয়ে সবাইকে শুভাশীষ দিয়ে নিজেরা মায়ের আশীর্ব্বাদে মোক্ষ লাভ করবেন। আমার ছোটবেলায় দেখেছি অনেক বাড়ির ছাদে পুরো কার্তিক মাস ধরে আকাশপ্রদীপ জ্বলত। মানুষ মনে করতেন তাঁরা তাঁদের পিতৃ পুরুষের পথ আলোকিত করেছেন, যাতে তাঁদের স্নেহাশিস থেকে পরবর্তী প্রজন্ম বঞ্চিত না হয়। সংখ্যায় কমে গেলেও বহু বাড়ির ছাদে আকাশপ্রদীপ জ্বালানোর রীতি এখনও দেখা যায়। চোদ্দ শাক খাওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। এই সময়ে মরসুম পাল্টায় | বাতাসে জায়গা করে নেয় হিমেল পরশ | তাই শরীর ভাল রাখতে ১৪ রকম শাক খাওয়ার বিধি |
আসুন দেখে নিই এই শাকগুলো ( বা গাছের পাতা ) ঠিক কী কী --
১| ওল, ২| কেঁউ, ৩| বেতো, ৪| সর্ষে, ৫| কালকাসুন্দে, ৬| নিম, ৭| জয়ন্তী, ৮| শাঞ্চে, ৯| হিলঞ্চ, ১০| পলতা, ১১| শৌলফ, ১২| গুলঞ্চ, ১৩| ভাঁটপাতা, এবং ১৪| শুষণীশাক। বলা হয়, আয়ুর্বেদ এবং কবিরাজি শাস্ত্রে এইসব শাকের গুণ অসীম।
বাংলায় কালী পূজা খুব প্রাচীন নয়। ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে কাশীনাথ রচিত শ্যামাসপর্যাবিধিগ্রন্থে এই পূজার সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতকে তাঁর সকল প্রজাকে শাস্তির ভীতিপ্রদর্শন করে কালীপূজা করতে বাধ্য করেন। সেই থেকে নদিয়ায় কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। কৃষ্ণচন্দ্রের পৌত্র ঈশানচন্দ্রও বহু অর্থব্যয় করে কালীপূজার আয়োজন করতেন।পূর্ব বঙ্গের বাঙালী হিন্দুরা কালীপূজার পরের প্রথমা তিথিতে (প্রতিপদ)ভাইফোঁটা উৎসব উদযাপন করেন এবং এপার বাংলার মানুষ উদযাপন করেন দ্বিতীয়াতে। এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে পুনরুক্তি নিষ্প্রয়োজন।
এবার জানা যাক শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের মানুষ কিভাবে এই দিন পালন করেন।
১৬১৯ খ্রিস্টাব্দে শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র দীপাবলির দিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখরাও এই দিন টিকে বন্দী ছোড় দিবস হিসাবে পালন করেন।
জৈন মতে, ৫২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে মহাবীর দীপাবলির দিনেই মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করেছিলেন।তাই তাঁরা এই দিনকে “নির্বাণ দিবস” হিসাবে পালন করে থাকেন।
আর্য সমাজ এই দিনে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর মৃত্যুদিন পালন করেন। তাঁরা এই দিনটি "শারদীয়া নব-শস্যেষ্টি" হিসেবেও পালন করেন।
বৌদ্ধ মতে এই দিন সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই তাঁরা এই দিনটিকে “অশোক বিজয় দশমী” রূপে পালন করে থাকেন।
নেপালের নিউয়ার বুদ্ধিস্ট যারা বিভিন্ন বজ্রযানী দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাঁরা এই দিনে লক্ষ্মী আরাধনা করে থাকেন।
তাহলে আমরা দেখতে পেলাম, “দীপাবলি” শুধু মাত্র হিন্দুদের উৎসব নয় বৈচিত্রের মধ্যে যে ঐক্য মহাভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ তারই ধারামতে এ উৎসব আজ মানুষের উৎসব। এই ঐতিহ্যকে নষ্ট করার, একে ভুলিয়ে দেওয়ার, এক বিশেষ ধারামতে প্রবাহিত করার এক নির্মম – জঘন্য ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। এই পদ্ম গোখরো গুলোর বিষে ভারতীয় সংস্কৃতির মৃত্যু যাতে না হয় – আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে যাতে সেই জ্ঞানের আলো সঞ্চারিত হয়, তাই এই দীপাবলির প্রতিটি প্রদীপ থেকে জ্বলে উঠুক অজস্র মশাল আর সেই মশালের আগুনে পুড়ে খাক হয়ে যাক পদ্ম গোখরোর বিষ।
আপাতত বিদায়। যারা ধৈর্য ধরে এ লেখা পড়লেন তাঁদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
শ্রীতোষ ১৯/১০/২০১৭

৬৫

৬৫ মুহূর্ত
৬৫ মিনিট
৬৫ ঘণ্টা
৬৫ দিন
৬৫ মাস
অথবা
৬৫ বছর
৬৫ আজ এক প্রতিবাদের সময়।

26 September, 2017

উমা আমার ঘরের মেয়ে
প্রতি বছরের মত বরের ঘর থেকে
মায়ের ঘরে আসে
কটি দিন মা - বাবার আদর পাবে বলে
আজ সে ঘরে এল।
আমার আদরের দুলালী
অন্নপূর্ণা।।



তার নিজের ঘরেই অন্নের অভাব
অথচ অন্যের মুখে তুলে দেয় অন্ন!

আমি কোন দিন তাকে খাওয়াই
শাক - চচ্চড়ি, কোন দিন
পান্তা ভাত আর আলুসেদ্ধ।
হাসি মুখে ভাগ করে খায় আমার মেয়ে
তোমরা তাকে পার্বতী ও বল।।


তবে যেদিন সে চলে যায়
চোখের জলে - মিষ্টি মুখে
পান - সিঁদুরে - কোলে করে
বিদায় দিই তাকে
চোখের জলে ভেসে বলি
আবার আসিস মা।।

এবার তো তা হবে না
আমি আজ বাবা নই
আমি হিন্দু আজ
ধর্ম ধ্বজা ধারী -
তাই - তাই - তাই - তাই এবং তাই
আমার হাতে অস্ত্র আজ।।

মিষ্টি মুখে নয়-
সিঁদুরে নয় –
ভালোবাসায় নয় -
মানুষের রক্তে বিদায় দিতে চাই
আমার ঘরের আলোকে,
আমার উমা মাকে।।

শুরু করেছি সে আয়োজন।


আমি নাচব তাতা - থৈ থৈ
অস্ত্র হাতে ।।

মা, আমার মতই
যারা তোকে ঘরের মেয়ে বলে ডাকে
থাকবে কি নীরবে
বল মা উমা।

যদি আজ থাকে নীরবে তবে
পরের বছর এই অন্ধকার ঘরে
তুই আসিস না মা।
ঘরের উঠান অন্নপূর্ণার প্রতীক্ষায়
উমার প্রতীক্ষায় থাকুক।।


শরতের আলোয় ভরে গেছে উঠান টা
ভরা ধানে ঢেকে গেছে জমি টা
আর আমি নারকেল নাড়ু পাকিয়ে রেখেছি
মেয়ে আমার কবে আসবে
কবে পাবে বরের ঘর থেকে ছুটি
মায়ের চিঠিটা ছিল ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা
মেয়ে যে লুটিয়ে আছে ধান জমির মাঝে
মায়ের ঘরে যাওয়ার পথে
অস্ত্র নিয়ে অসুর তাকে ছিঁড়ে খেয়েছে।।


শেষ স্তবকের জন্য কৃতজ্ঞতাঃ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যাঁর লেখা "কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে গাছ টা" (যখনই পড়ি এবং অজিত পাণ্ডের গাওয়া গানটি যখন শুনি, চোখ ভরে ওঠে জলে।)।

12 July, 2017

দ্বেষ প্রেমিক

কপি - পেস্ট না করে পারলাম না। যদি কোন দ্বেষপ্রেমিক যুক্তি দিয়ে তর্ক করতে পারেন তাহলে খুশি হব। জানি পারবেন না তাই তাঁরা তাঁদের শিক্ষা অনুযায়ী কমেন্ট করবেন।
সৌজন্যঃ পাঁচফোড়ন
দেশদ্রোহীদের 'চিনে' নিন
Posted: 12 Jun 2017 07:19 AM PDT
এক যে ছিল রাজনৈতিক দল | দলটার জন্মমুহূর্ত থেকে আজ অবধি বিভিন্ন সময়ে নানা দেশবিরোধী কাজে যুক্ত | তাই কখনো তারা 'দেশদ্রোহী' কখনো 'চীনের দালাল' কখনো পাকিস্তানের চর | আসুন আজ কিছু চীনের দালাল 'দেশদ্রোহী' দের চিনে নি যারা স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দালালি করেবলে চাদ্দিকে খবর |
১) মুজফ্ফর আহমেদ - মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ব্রিটিশ সরকার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়, যার মধ্যে ৩ বছর সেলুলার জেল এ কাটে| স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য | সুতরাং চীন ও পাকিস্তানের দালাল |
২) গণেশ ঘোষ- চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের অন্যতম নায়ক | সূর্য সেনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জালালাবাদ পাহাড় এ লড়াই করেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে |১৬ বছর সেলুলার জেলে সশ্রম কারাদণ্ড | পরবর্তী কালে সিপিআই এর এম এল এ ৩ বারের জন্য ও সিপিএম এর এম পি| চীনের দালাল |
৩) কল্পনা দত্ত- প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর সহোযোগিনী এবং চট্টগ্রাম বিদ্রোহের অন্যতম মুখ | ৬ বছর এর দ্বীপান্তর | ফিরে এসে কমিউনিস্ট পার্টি তে যোগ দেন ও ভোটে দাঁড়ান | চীনের দালাল |
৪) সুবোধ রায় - চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন | জালালাবাদ পাহাড়ের যুদ্ধে কনিষ্ঠতম সৈনিক | ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয়, যার মধ্যে ৬ বছর সেলুলার জেল | সিপিএম রাজ্য কমিটি সদস্য আজীবন | চীন ও পাকিস্তানের দালাল |
৫) অম্বিকা চক্রবর্তী- চট্টগ্রাম বিদ্রোহের জন্য ১৬ বছর সেলুলার জেলে সশ্রম কারাবাস | স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টি তে যোগদান ও নির্বাচিত এম এল এ |
৬) অনন্ত সিং - চট্টগ্রাম বিদ্রোহের জন্য ২০ বছর (১৬ বছর সেলুলার জেলে ) সশ্রম কারাবাস | স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টি তে যোগদান | যিনি বোধয় কিউবার দালাল|
৭) শিব ভার্মা - ভগৎ সিংএর সহযোগী | লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় একসাথে গ্রেপ্তার হন| ভগৎ সিং এর ফাঁসি হয় ও এনার যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর আন্দামানে | ১৭ বছর পর ফিরে কমিউনিস্ট পার্টি তে | পরে সিপিএম উত্তর প্রদেশ রাজ্য কমিটির সেক্রেটারি | কারো একটা দালাল নিশ্চই |
৮) হরেকৃষ্ণ কোনার- ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপ এর জন্য ৬ বছর আন্দামানে এ দ্বীপান্তর | আন্দামানে বিপ্লবীদের নিয়ে কমিউনিস্ট কনসোলিডেশন গঠন ও পরে কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রধান মুখ | নিঃসন্দেহে চীনের দালাল |
৯) লক্ষী সায়গল - আজাদ হিন্দ বাহিনীর রানী ঝাঁসি রেজিমেন্ট এর ক্যাপ্টেন | আজাদ হিন্দ বাহিনীর হয়ে ইমফল ও কোহিমা ফ্রন্টে লড়াই করেন | স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টি তে আসেন | আমৃত্যু সদস্য ছিলেন | কিসের দালাল সংঘ পন্থীরা ভালো জানবেন |
১০, ১১, ১২ ) জয়দেব কাপুর , অজয় ঘোষ ও কিশোরীলাল- ভগৎ সিংএর সহযোগী | লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় একসাথে গ্রেপ্তার হন এবং যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর হয় আন্দামান সেলুলার জেলে | স্বাধীনতার পর মুক্তি পেয়ে কমিউনিস্ট পার্টি তে | এঁরা বোধয় রাশিয়ার দালাল|
১৩) সতীশ পাকড়াশী - মেছুয়াবাজার বোমা মামলায় ১০ বছর এর জন্য সেলুলার জেল এ | ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও সিপিএম বিধায়ক | দেশদ্রোহী |
১৪) পি সি জোশি- মীরাট ষড়যন্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন, যদিও মেয়াদের আগে মুক্তি পান | ৩ বছর কাটান সেলুলার জেলে | কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম জেনারেল সেক্রেটারি | ইংরেজ এর দালাল নাকি?
১৫)অরুণা আসাফ আলী - ১৯৪৬ এর নৌ বিদ্রোহের সংগঠক| কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে ৬৬ টা যুদ্ধ জাহাজ ও ১০০০০ নৌ সেনা নিয়ে গড়ে ওঠা ব্রিটিশ বিরোধী যে বিদ্রোহ কংগ্রেস, মুসলিম লীগ ও হিন্দু মহাসভার পিছন থেকে ছুরি মারায় অঙ্কুরে বিনাশ পায় | এই বিদ্রোহী দের মধ্যে আরো অনেক ' দেশদ্রোহী কমিউনিস্ট ' ছিলেন যারা ব্রিটিশ এর গুলিতে মারা যান, আর বাকিরা পরে চীনের দালাল হয়ে যান | উৎপল দত্তের 'কল্লোল ' নাটকে এর বিস্তারিত বিবিওরণ পাওয়া যায় |
১৬) বি টি রণদিভে - ১৯২৫ থেকে ১৯৪২ , ১৭ বছর ধরে ব্রিটিশ সরকার এর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে কৃষক শ্রমিক কে সংগঠিত করেছেন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে| নৌ বিদ্রোহের সমর্থনে সারা ভারত ব্যাপী হরতাল সংগঠিত করেন ও ব্রিটিশ সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করেন | স্বাধীনতার পর সিপিআই এ, পরে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি তে
১৭) ই এম এস নাম্বুদিরিপাদ - ১৯৩৪ - ১৯৪২ ব্রিটিশ সরকারের ' ওয়ান্টেড লিস্ট' এ | প্রায় গোটা যৌবন তাই আত্মগোপন করে কাটিয়ে দিয়েছেন | পরে কেরালার প্রথম কমিউনিস্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী |
১৮, ১৯ ) বীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত ও সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর - ছাত্রাবস্থায় পালিয়ে যান জার্মানি তে | ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স লীগ এর বার্লিন কমিটি এর সদস্য হয়ে ভারত বর্ষের বিপ্লবীদের অস্ত্র যোগান দেওয়ার দায়িত্ব নেন | নাত্সি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ও দীর্ঘ কারাবাস জার্মানিতেই | কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য |
২০ ) শওকত উসমানী- মীরাট ষড়যন্ত্র মামলার প্রধান অভিযুক্ত | কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য
আরো অসংখ্য নাম বাকি থেকে গেলো | আর তথ্য জোগাড় এর ধৈর্য ও ছিল না| মোদ্দা কথাটা হলো এঁরা সবাই কেন কে জানে , এত্ত সব দেশপ্রেমিক দল বাদ দিয়ে চীনের দালালি করা দলটাকেই বেছে নিলেন .... এমনকি চীন যুদ্ধের সময়েও চটজলদি 'দেশপ্রেমী' হতে পারলেন না | আসলে তখন তো সোশ্যাল মিডিয়া এর এত রমরমা ছিলোনা, তাহলে জানতে পারতেন....... যে কোনো উপায়ে দেশ এর এর সরকার ও সেনাবাহিনী কে অন্ধভাবে সমর্থণ করার নাম দেশপ্রেম... নিজের দেশের পেশী ফুলানোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়া তে প্রচার করাই দেশপ্রেম.....এটাও জানতেন না যে, দেশ আসলে দেশের মানুষ দিয়ে তৈরী হয়না. তৈরী হয় দেশের সেনা, প্রধানমন্ত্রী আর দেশের সীমানার কাঁটাতার দিয়ে | এঁরা বেজায় বোকা | ভেবেছিলেন, যে দেশের জন্য প্রায় গোটা জীবন দিয়ে উৎসর্গ করেছেন, সেই দেশের কোনো অবস্থান ভুল মনে হলে সমালোচনা করার অধিকার আছে... দেশের সরকার এর বিরোধিতা করার বা সেনাবাহিনীর কাজকর্মের বিরোধিতা করার অধিকার ও আছে | যেহেতু আমি এই দেশে জন্মেছি , তাই এই দেশ এর সেনাবাহিনী অবশ্যই দুর্দান্ত ভালো..... এই দেশের সরকার এর সব অবস্থান সর্বদাই একদম কেয়াবাত মার্কা প্রশংসার যোগ্য , সবসময় 'সাব্বাশ!'.বলে পিঠ চাপড়ে যেতে হবে.... এই সহজ দেশপ্রেম এর ধারণা টা এদের বোধগম্য হয়নি | আর তাই আজ রাম শ্যাম যদু মধু খুব সহজেই এদের দিকে, আঙ্গুল তুলে দেয় 'দেশদ্রোহী' ' দালাল' বলে. কখনো ফেসবুকে তে এদের গালে জুতো মারার প্রস্তাব দেয় অতি বড়ো কোনো 'দেশপ্রেমী' | একবার ভেবে দেখার দরকার হয় না যাদের উদেশ্য করে বলছি তাদের সংগ্রামের আর আত্মত্যাগের ইতিহাস টা উল্টে দেখি... সত্যি কি আমার কোনো যোগ্যতা আছে এদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার বা এঁরা কোন পরিস্থিতিতে কি অবস্থান নিয়েছেন সে সম্বন্ধে বিচারকের রায় দেওয়ার | আর কি জানেন, দেশ টাকে নিজের বলে ভালোবাসলেই দেশের ভুলভাল কাজকম্মো গুলো খুব গায়ে লাগে...... পড়শীর বাচ্চাকে কখনো সুস্থ স্বাভাবিক লোক শাসন করে না, নিজের বাচ্চা কেই করে | যাকগে, অনেক বাজে বকলাম | একটা ছোট্ট অনুরোধ দিয়ে শেষ করবো | ঢাক ঢোল বাজানো 'দেশপ্রেমী' পার্টির যারা আছেন তারা একটু তাদের দলের স্বাধীনতা সংগ্রামী সদস্য দের লিস্ট যদি দেন বড়ো ভালো হয় | এত্ত বড়ো দেশপ্রেমী দল.....নিশ্চয়ই এর চেয়ে অনেক বড়ো বড়ো আত্মত্যাগী লোকজনের লিস্ট ওদের কাছে থাকবে | গুগল করে কিন্তু কিছু পেলাম না বিশ্বাস করুন | সাকুল্যে ২-৩ টি নাম, তাও পাতে দেওয়া যায় না | ( নো অফেন্স ) | ............. আর ইয়ে, একটা কবিতার লাইন কেন কে জানে মনে পড়ে যাচ্ছে.... " তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ.....আমি আজ চোর বটে "...
তথ্যসূত্র ----- ১) উইকিপেডিয়া ২) শহীদ স্মৃতি , লেখক শিব ভার্মা , ন্যাশনাল বুক এজেন্সী ৩) মৃত্যুঞ্জয়ী -- তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ - পঃ ব: সরকার
৪) আজাদ হিন্দ ফৌজ, লেখক এস এ আয়ার, ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট ৫) কল্লোল, লেখক উৎপল দত্ত l

27 May, 2017

চাওয়া

গড - আল্লা - ভগবান কবে মরবে
মানুষ শান্তিতে বাঁচবে!
মানুষ বড় কাঁদছে - একটু বাঁচতে চাইছে। শ্রীতোষ ২৭/০৫/২০১৭

16 May, 2017

একটি বাসের কাহিনী।

আজ দুপুরে একটি এসি বাসে উঠছি - দরজা খুলতেই নাকে এসে লাগল ফুলের গন্ধ। ভাবলাম কোন যাত্রীর গায়ের সুগন্ধি আমার স্নায়ুতন্ত্রে নাড়া দিয়ে গেল।। সামনে তাকাতে অবাক! সেই মুহূর্তে বাসে একমাত্র যাত্রী আমি - এছাড়া চালকের আসনে বসে বাসের চালক। তারপর দেখি বাসের প্রতিটি জানলার পাশের বিটে একটি করে ছোট ফুলদানি এবং তাতে বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিকের ফুল। বাঃ ! অবাক হওয়ার বাকি ছিল তখনও। বাসের প্রতিটি জানলার কাঁচে হয় ফুলের অথবা অন্য কোন সুন্দর ছবি। দেখে অবাক লাগছিল। চালকের কাছে জানতে চাইলামঃ বাসটি এই ভাবে সাজাল কে? উনি বললেন "আমি"। আমি আরও অবাক। আর কিছু না বলে চুপচাপ নিজের সিটে গিয়ে বসলাম। টিকিট কাটার সময় পরিচালককে জিজ্ঞাসা করলামঃ বাসটি এইভাবে সাজালেন কেন ? উনি বললেনঃ দাদার ইচ্ছায়! মন ভরে উঠল এক অপার তৃপ্তিতে। কাজ আমরা সকলেই করি - নিজের কাজের জায়গাকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে জানি ক'জন? তাও আবার সরকারী কাজে।







এই বাসটির নাম্বারের শেষ চারটি সংখ্যা - ১৯৭০। WBTC বাসটির রুট নাম্বার AC50A। গড়িয়া থেকে রাজচন্দ্রপুর। বাসের চালকের নাম এস দে (S. DEY). বাসটির অন্দর সজ্জার ছবি ও ভিডিও তুলে দিলাম বন্ধুদের হাতে।

11 March, 2017

ভাবনা

কিছু জীব জানে
প্রতিবাদ করলে
লুকাতে হবে টেবিলের তলায়
প্রতিবাদ করলে
COMPULSORY WAITING এ যেতে হবে
তদন্ত কমিশন বসে যাবে
এখিক্স কমিটির মত
সাল পার হয়ে যাবে
তদন্ত কমিটির মিটিং ডাকার
তারিখ ঠিক করতে আরেক কমিটি বসবে !



ওই যেমন কালোবাজারিদের
নিকটতম ল্যাম্প পোষ্টে ঝোলানোর জন্য
নিকটতম ল্যাম্প পোস্ট আর
প্রকৃত শক্ত দড়ি
আজও পায় নি খুঁজে ভারত সরকার
মাঝে ৭০ বছর হয়ে গেছে পার!


তাই ওরা
হীরক রাজ আর হীরক রাণী যাদের পোষেন
(HARD WORK AND HARVARD এর তফাৎ জানিয়ে)
তাঁরা নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবেন !
ওদের দোষ কি ?


তাই যে মানুষ বলে মারব তোকে বোম
ব্যোম ব্যোম
মারনা ওকে বোম
ব্যোম ব্যোম
তাঁকে চেয়ার দেয় এগিয়ে
ওরা আসলে নিকট ভবিষ্যতের কথা ভাবে!

যন্ত্রণা

কখনও দিক দিগন্ত জুড়ে
ছড়িয়ে থাকা এক আঁধার পথে
তোমার দ্রুতগামী
মোটর বাইকের আলো নিভেছে কি ?

যদি নিভে থাকে
তবে তুমি বুঝতে পারবে
যে মানুষ পৃথিবীকে দেখেছিল
নিজের দু চোখে
তার রূপ - রস গ্রহণ করেছিল
হারাল দৃষ্টি
তার বুকের যন্ত্রণা বুঝতে পারবে।

সে মানুষের সঙ্গী যারা
যারা ছিল তার পথ চলার শরিক
তাদের অব্যক্ত আর্তনাদ
শুনতে পারবে।

আমরা প্রতিজন
জানি সে আঁধার পথে চলতে হবে
তবে সময়ের আগে নয়।

সময়ের আগে যদি কাউকে
সে আঁধার পথে চলতে হয়
যদি নিভে যায় চোখের আলো
তাহলে অশ্রু ঝরে
যেমন আলো নিভে যাওয়া
দুরন্ত সেই মোটর বাইক
পথচ্যুত হয়!
এক যন্ত্রণায় এ লেখা

অপেক্ষা

একটি মানুষ যে সূর্যের আলো দেখেছিল
যে চাঁদের আলো গায়ে মেখেছিল
হঠাৎ দেখল অন্ধকার
ভাবল সে
আমি পথ হারা এক
পথিক হয়ে গেলাম।

বন্ধুরা তার
বলে বার বার
তুমি এক নতুন পথের পথিক
চোখের আলোতে দেখা যায় না
দেখা যায় না সে পথ !
আসলে সে পথ আলোয় ভরা
অন্ধকার থেকে নিঃসারিত আলো।
অবিশ্বাসে মাথা দোলায় সে মানুষ
জানি একদিন
সেই মানুষ ই অন্ধকারার শিকল ভেঙ্গে
অন্ধকারকে ধুলোয় মিটিয়ে দিয়ে
আলো আনবে।
পথে চলবে
আরও অনেক মানুষ
পথ হাঁটবে
সেই মানুষের দেখানো পথে।
সেই মানুষের দেখানো পথে
যে মানুষের জীবনে
জীবনের মধ্য গগনে
অন্ধকার এসেছিল নেমে
সেই মানুষ আগামী দিনে দেখাবে পথ।
পৃথিবী চলবে তার দেখানো পথে
আমরা থাকলাম অপেক্ষায়
থাকলাম আমরা অপেক্ষায়।

ব্যর্থতা

যোনি থেকে গড়িয়ে পরা রক্তের আঘাতে
এক ধর্ষক ধর্ষিত হতে পারে
যদি সমাজ সে রক্ত ধর্ষকের মুখে মাখিয়ে দেয়
এখানেই ব্যর্থতা আমার
কারণ
আমি তো সমাজের বাইরে নই। 

নারী দিবসের প্রাক্কালে।

01 March, 2017

প্রণাম

কুমারী মা মেরী
এ কেমন সন্তানের জন্ম দিয়েছ
মা
যে তোমাকেই করে অপমান !
হে পরম পিতা যীশু
যে ধর্ষণ করে বাণীকে তোমার
তুমিই কি তাকে শিখিয়েছিলে
"পাপকে ঘৃণা কর পাপী কে নয়"
তোমার পূজারী পাপীর শিকার কে
ঘৃণা করার উপদেশ দেয়
পাপ কে নয় !
পাপের অনলে কি সেই পূজারী কে
পুড়তে হয় ?
মা মেরী - পরম পিতা যীশু
নিশ্চিন্তে থাক তোমরা
কারণ
আল্লা আর ভগবানের পূজারী
এমন অনেক আছে
তোমার পূজারী তো একা নয় !
তাদের কেউ ISIS বলে ডাকে
কেউ নাম দেয় তালিবান
কেউ বা মন্দিরে তাদের
সেবাদাসী বানিয়ে দেয়
দেয় সম্মান !
গড বা আল্লা অথবা ভগবান নামে
পুরুষের
কামাগ্নি নারীকে গ্রাস করে !
নারীর উপরে পুরুষের চিরন্তন অধিকার
পুরুষের পৌরুষ
তাই প্রতিনিয়ত নারীর অধিকারের বিরুদ্ধে
এরা আঘাত করে
কিছু নারী পুরুষের কাছে নত হয়
নতুন শিকার করে জোগাড়
যে পুরুষ
আম্রপালীর মত নারীকে
নগর নটী বানায় ।
কেরালার যাজক
তুমি তোমার গর্ভধারিণীকে দিয়েছ সম্মান
নারীকে দিয়েছ সম্মান
তোমাকে অন্তর থেকে জানাই প্রণাম! শ্রীতোষ ০১/০৩/২০১৭

24 February, 2017

একুশে ফেব্রুয়ারি

কত একুশ গেছে কেটে
একুশে ফেব্রুয়ারি পালন হয়েছে কত
উৎসবে - কবিতায় - গানে
"আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি"
বরকত - সালামের মূর্তিতে
কত মালা পড়ে
কত শহীদ বেদী ফুলে ফুলে ঢেকে যায়
তারপর ক্যালেন্ডারের পাতায়
থাকে অপেক্ষায়
অমর একুশ একটি তারিখ হয়ে
আগামী বছরের জন্য।
আজও বাংলায় এপারে ও ওপারে
রাত জাগে মানুষ নতুন ভোরের জন্য
না রাত জাগে মানুষ ইংরাজী নিয়মে
AFTER 24.00 HRS. এর ঘণ্টা বাজার জন্য!
ইংরাজি নিয়মে পালন হয় 21ST FEBRUARY.
তাই ক্যালেন্ডারের পাতায় ২১ শে
একটি তারিখ হয়েই থেকে যায়।
পরদিন সকালে
২১ শে পালন করা বাবা অথবা মা
শিশুর হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে
ইংরাজি স্কুলের গোড়ায়
তাকে HARRY POTTER দেয় কিনে
ঠাকুরমা আর ঠাকুরদার ঝুলি OBSOLETE আজ।
কিছু পাগল আজও কিন্ত রাত জেগে থাকে
থাকে অপেক্ষায়
প্রভাত সূর্যের প্রথম কিরণের
একটি নমস্কারে তারা
তাঁদের স্মরণ করে যায়
অমর ২১শ কে বলে যায়
তোমরা ছিলে তাই আছি আমরা
তোমরা সূর্য হয়ে দিলে আলো
আমরা প্রদীপ হয়ে জ্বলে যাব
দিয়ে যাব উত্তরাধিকার
নতুন সূর্যের হাতে। শ্রীতোষ - ২১/০২/২০১৭

৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮

২১ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
কেন নয় ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮
একই দিন
যেদিন রক্ত ঝরে
নিজের ভাষায় কথা বলার অধিকারে
নিজভূমিতে !

চলে গেছে আরও কত ২১শের দিন
নীরব কান্নায় কেঁদে চলে
৮ই ফাল্গুন
তোমরা মাতৃভাষায় কথা বলতে চাও
তাই ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮
নীরবে ২১ শে র প্রতি তোমাদের প্রণামকে
করে নমস্কার
আর বলে
আমি ৮ই ফাল্গুন
বাংলায় আমাকে ভুলে যাও তোমরা
আমার জন্য নেই কোন দিন
আমি ৮ই ফাল্গুন
ইংরাজি ভাষায় বলি
NO WHERE I WAS THERE BECAUSE
আমি ৮ই ফাল্গুন
আমার নেই কোন গুণ
আমি অব্যবহৃত তোমাদের মনে
২১ শে ফেব্রুয়ারির ছায়ায় ঢেকে থাকা
আমি ৮ই ফাল্গুন
আমি ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮

একুশের কথা

একুশ মানে মায়ের হাসি
কোমল চোখে চাওয়া,
একুশ জানায় আপন ভাষায়
খুশিতে গান গাওয়া।
একুশ মানে ঝড় উঠেছে
বৃষ্টি আসে ওই,
একুশ বলে মাগো আমার
কাজলা দিদি কই ?
একুশ মানে জাগল মানুষ
অধিকারের ডাকে
একুশে তাই রক্ত ঝরে
রুখবে তুমি তাকে ?
একুশ তোমার - একুশ সবার
গাই একুশের গান
মাতৃ ভাষায় বলব কথা
রাখব ভাষার মান। শ্রীতোষ - ২১/০২/২০১৭