26 July, 2015

শিক্ষামন্ত্রী

আজকে শুনলাম এক দক্ষিণপন্থী মহামানব বলছেন
“শিক্ষক না হলেও শিক্ষামন্ত্রী হওয়া যায়”
খুব সত্য বচন
শিক্ষা মন্ত্রী হতে গেলে শিক্ষক হতে হয় নাকি
“মানুষ যত বেশী পড়ে 
তত বেশী জানে – তত কম মানে”
শিক্ষামন্ত্রী হতে গেলে এই কথাটি
মানতে হয় –
পরিবর্তিত এই রাজ্যে !

তাঁর অমৃত বচন
“ভালো জিনিস দেখুন না”
সত্যিই ভালো জিনিস দেখতে হবে
দেখতে হবে “শহীদ স্মরণে হাততালি”
ভালো জিনিস !
দেখতে হবে জগ ছুঁড়ে মারা আরাবুল কে
তাজা নেতা !
অক্সিজেন কমা কেষ্টর কথা মানতে হবে !
শুনতে হবে চাকরী হওয়ার গল্প
প্রচুর চাকরী (কিসের বিনিময়ে অর্থ নাকি সম্ভ্রম)
ভালো কথা !

শিক্ষক পেটানো –
ছোট্ট ঘটনা –
সব ছোট্ট ঘটনা - তাই না
এই ছোট্ট ছোট্ট ঘটনা গুলো
একদিন আগুন হয়ে জ্বলে উঠবে
কবি সুকান্তের সেই দেশলাই কাঠি গুলোর মত
আগুন হয়ে তাড়া করবে আপনাকে
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী –
সেই আগুন নেভাবেন কোন জল দিয়ে ?

আমি এক দুঃসময়ের কবি
সেই আগুন জ্বালানোর জন্য
চকমকি পাথরে ঘষছি লোহা
জ্বলবে আগুন –
আমি থাকব না –
থাকবে না আমার মত অনেকেই
কিন্ত প্রতিবাদ থাকবে !

সাবধান –
কাগজ ও কলমের চকমকি পাথর
ও লোহায় চলছে ঘর্ষণ
মানুষের মনের সমিধ তৈরি
অহংকারী চিন্তনকে
হিটলারের শরীরের মত আধপোড়া করার জন্য !
আপনি থাকুন শিক্ষা নিয়ে কবন্ধ নাচে মগ্ন। শ্রীতোষ ২৫/০৭/২০১৫

দাঙ্গা

দাঙ্গা বেধেছে –
ভারতে –
দাঙ্গার শিকার –
মানুষ –
ভারত রাষ্ট্রের মানুষ !

আমি প্রশ্ন করি
কোন পিরজাদা মরেছে
মরেছে কোন বাল থ্যাকারে
মরেছে কোন সোনিয়া গান্ধী
উত্তর দাও বন্ধু !
কেন তোমার ঠোঁটে আজ শব্দ নেই ?

বেশ –
আর এক প্রশ্ন করি –
ত্বহা সিদ্দিকির বেগম কি ধর্ষিতা হল পথের মাঝে
হল কি সুষমা স্বরাজ
কিংবা প্রিয়াংকা বঢোধরা
না তো –
ওরা তো আরামে ঘুমায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা মাঝে !

মরলে তুমি –
মরলাম আমি –
ধর্ষিতা হল আমাদের মা – বোন
কি মজা তাই না
ধর্মের নামে জাতের নামে
আমি তোমার গলায় লটকে দিলাম
জ্বলন্ত টায়ার
আর তুমি ত্রিশূলের আগায় আমার
অনাগত সন্তানকে গেঁথে নিয়ে
নাচলে –
ওরা আনন্দে হাসল –

যেমন এখনও হাসছে
যেমন হেসেছিল কাল
হাসবে আগামীকাল
আমাদের নরম মাংস দিয়ে ওরা
ভাত খাবে অথবা
চিবাবে তন্দুরি রুটি
আমরা ধরব ছুরি অথবা লাঠি
ওরা আমার মা অথবা তোমার বোনকে
ওদের বিছানা গরম করার প্রেমে
জিভ চাটবে –

চল দাও উসকানি !
আমি কে ?
বাজে কথা বলে যাই যত
দোজখের অথবা নরকের জীব !
ওদের আর
ওদের কথা মেনে চলা
তোমাদের জীবনে -

তবু রাখো জেনে আমার পিছনে
আজ তৈরি মানুষ
শুনছি তার কলরোল ! শ্রীতোষ ২৫/০৭/২০১৫
নিবেদনঃ যেহেতু আমি ভারতীয় নাগরিক তাই ভারতের কিছু নাম ব্যবহার করেছি প্রতীক হিসাবে কিন্ত এ লেখা গোটা পৃথিবীর জন্য।

19 July, 2015

বেহেস্ত বা জন্নাত

ইরাকে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ - সংবাদ
মরল যারা তারা মুসলিম মারল যারা তারাও মুসলিম
মরল যারা তারা সাধারণ মানুষ - মারল যারা তারাও সাধারণ মানুষ।
বলবেন তফাৎ কি তাহলে - কেন লিখছ তুমি
কারণ যারা মারে আর যারা মরে সবাই পুতুল।
ঠাণ্ডা ঘরে বসে থাকা মানুষ গুলো দেয় উসকানি
বলে যাবে বেহেস্তে - পাবে জন্নাত !
ওরে শয়তানের দল -
বেঁচে থেকে জুটল না রুটি
মারলি জুতা,
কি হবে আমার বেহেস্তে যেয়ে,
কি হবে আমার জন্নাত পেয়ে
আমি বাঁচতে চাইরে ইবলিশের বাচ্চা
অন্তত একদিন আমার আম্মার গালে,
চোখের পানিতে না ভেজা এক টুকরো রুটি তুলে দিতে চাই
আমার আব্বার গায়ে নতুন কামিজ পরাতে চা্‌
সেই আমার বেহেস্ত - সেই আমার জন্নাত !

যদি সত্যই কোন খোদা থাকে
বলি তারে -
আমাদের দাও একটু ভালো ভাবে বাঁচার অধিকার
দু টুকরো রুটি দিনে আর রাতে,
আমার পৃথিবী হবে বেহেস্ত।
আর ধর্মের নামে জাতের নামে উসকানি দেওয়া বজ্জাৎ গুলোকে
নেতা গুলোকে ছুঁড়ে ফেলে দাও মরুভূমির উত্তপ্ত বালুতে
সেটাই ওদের স্থান -
খোলা আকাশের তলায় - তীব্র রোদে - জলের অভাবে
জ্বলে পুড়ে মরে বেহেস্তে যাক ওরা,
কারণ ওরাই তো বলেছিল
কষ্ট করলে বেহেস্ত পাবি ! শ্রীতোষ ১৯/০৭/২০১৫
এলেখা কোন বিশেষ সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে নয়। বেহেস্তের জায়গায় বসিয়ে দিন স্বর্গ, HEAVEN আর খুদা র স্থানে বসিয়ে নিতে পারেন ভগবান বা GOD - মানে একই থাকবে।

10 July, 2015

কুলাঙ্গার (উৎসর্গ আমার ছোট মেসো কে)

আমাকে কেউ কেউ কুলাঙ্গার বলে
আমি গর্বিত হই
কারণ কুলের আগুনে পুড়ে
তৈরি হয়েছে অঙ্গার
বাইরে তার কালো
অন্তর দেখায় সভ্যতার আলো –
জীবনের আলো
অঙ্গার বাঁচায় জীবন

হে বন্ধু - প্রিয় সাথী আমার
তোমাকে যদি কেউ বলে কুলাঙ্গার
এই শব্দ জেনো আশীর্বাদ তোমার
তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম কর
তিনিই প্রকৃত চিনেছেন তোমায়
তুমি জীবনের কঠোর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ
তাই তুমি কুলাঙ্গার

কুলাঙ্গার মানুষগুলো
পৃথিবীতে বিপ্লব এনেছে
টমাস আলভা এডিসনের মত
আলো জ্বালিয়েছে
সেই আলোতে তোমার মুখ
দেখে ওরা –
কিন্ত
তোমার চিন্তনের কাছে পারে না
পৌঁছাতে
তাই তুমি কুলাঙ্গার।

তোমার মত আরও কুলাঙ্গার আছে
আছে আমার মত
এসেছে সময়
চলো সাথী একজোট হই
একসাথে 
অলিম্পাস পর্বতের মশাল জ্বলুক
হিমালয় থেকে আল্পস্‌ হয়ে
সুদূর পিরানিজের মাথা ছুঁয়ে
আলোকিত হোক বিশ্ব।

 শ্রীতোষ ০৯/০৭/২০১৫

প্রতিরোধ

বিয়ের পর মেয়ে সন্তান পর হয়ে যায়
আজকে যখন কম্পিউটার খুলছিলাম
সন্ধ্যা টায়
শুনলাম কোন এক সিরিয়ালের ডায়লগ
"
বিয়ের পর মেয়ে সন্তান পর হয়ে যায়।"
সারা জীবনের অন্ধকার মুহূর্ত তৈরি হল
একটি সংলাপে 
"
বিয়ের পর মেয়ে সন্তান পর হয়ে যায়।"
আমি এক পুরুষ সন্তান
এই ভোগবাদী জীবনের উত্তরাধিকার বয়ে চলি
রামের আর যুধিষ্ঠিরের উত্তরাধিকার
সীতাকে বার বার অগ্নিপরীক্ষা দেওয়ানোর
আর দ্রৌপদীকে পঞ্চ স্বামীর দ্বারা ধর্ষণের উত্তরাধিকার
কুন্তীকে সূর্যের ভোগের অধিকার
আর বিবাহের পরে নপুসংক স্বামীর শরীর সুখ থেকে
বঞ্চিত এক অসহায়া নারীর 
পুরুষের বিকৃত কাম চরিতার্থ করার জন্য 
রাজনীতির জুয়া খেলায় আত্মাহুতি দেওয়ার জন্য
বারে বারে ধর্ষিত হওয়ার অধিকার।
শেষে আর আর আর 
না সইতে পেরে তার মত আর এক রমণীকে
মাদ্রী নাম যার 
কামাত্তাচারের কুণ্ডে বলিদান করার অধিকার
অর্জুনের সুভদ্রাকে কিংবা
সুগ্রীবের তারাকে ভোগ করার নিশ্চিন্ত অধিকার
উত্তরাকে বিলিয়ে দেওয়ার চিন্তা শূন্য অধিকার
কৃষ্ণের পরকীয়া প্রেম 
ব্রহ্মার নিজের সন্তান সরস্বতীকে ভোগ করার
প্রণম্য অধিকার।
দেবাদিদেব মহেশ্বরের জন্য পার্বতীর তপস্যা করার অধিকার
(
পার্বতী করেছিলেন তপস্যা মহেশ্বর নন)
নারী - পুরুষের চিরন্তন ফারাক !
বিজয়ী ভোগ্যা নারী
যেমন বিজয়ী ভোগ্যা পণ্য।
অধিকারনারী শরীর চটকানোর
শরীরের ক্ষুধা মেটানোর
নারী দাস 
কলেকারখানায় 
আফিসেপুলিসে
বড় সহজ লক্ষ্য নারীর শরীর
আমার লক্ষ্য তাই
বাসেতেট্রেনেতেচলার পথেতে
আমি নারী শরীর দেখি
ভোগ পারব না করতে
এক বিকৃত লালসায় নিজের জিভ চাটি
আসে
লড়াইয়ের দিন
আমি বলে উঠি নারী মহান
আমি তাঁর সন্তান
রাইফেল নিয়ে হাতে 
যেতে হবে 
যেতে হবে 
যেতে হবে
যেতে হবে
নিজের মায়ের সম্মান বাঁচাতে
নিজের বোনকে রক্ষা করতে
নিজের স্ত্রীকে নিজের অধিকারে বাঁচিয়ে রাখতে
কারণ
আমার মত আর এক পুরুষ 
আঘাত করছে দ্বারে
নিজ কামনার অধিকারে
আমি লড়ি
নিজের যৌন চিন্তার অধিকার
বাঁচিয়ে রাখার আকাঙ্খায়
আমি লড়ি
রামায়ণমহাভারত
ইলিয়াডঅডিসির প্রেরণায়
এক নারী শরীর ভোগ করার
অথবা সে অধিকার বাঁচানোর জন্য 
ক্লিওপেট্রা অথবা ম্যাডোনার উলঙ্গ শরীর কল্পনা করে
পামেলা কিংবা মন্দাকিনী
অথবা পাওলি দামের নগ্ন শরীর চেটেপুটে
খাওয়ার জন্য আমি 
যুদ্ধ লড়ি
খুব খারাপ লাগলো তাই না 
নিজের মাবোনস্ত্রীকে নিয়ে
কি লিখছে এই বিকৃত মানুষটা
আমি রাতের অন্ধকারে বাড়িতে
যখন নীল ছবি দেখি
কি কল্পনা করি
কোন এক নারী শরীরতাই না
সেও তো আমার
বোনমাস্ত্রী হতে পারতো
আবার আমার মত অন্য আর এক জন
অন্য এক অন্ধকারে বসে
আমার মত করে
একটি নীল ছবি দেখতে দেখে যায়
যাদের কল্পনা করে 
হতে পারে
তারা আমার মাবোন অথবা স্ত্রী
কোন এক সময়ে
অধিকারযন্ত্রণা মুখোমুখি হয়ে যায়
সামনে এসে দাঁড়ায়
আর সেদিন জাগে বিদ্রোহ 
এই পচা সমাজটাকে পাল্টে দেওয়ার
আগুন উঠে আসে পৃথিবীর গভীর থেকে

জাগো আগ্নেয়গিরি
তোমার দৃপ্ত আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দাও
জীবনের সব কালো
আমি মানুষ হই
প্রগতির কবিতা লিখি
কবির কলমে জাগুক ভালোবাসার আলো।। শ্রীতোষ ০৫/০৭/২০১৫