19 July, 2019

পশ্চিমবঙ্গ অথবা বাঙালী 4 July at 19:25

আমি এক সামান্য মানুষ, কিছু সাধারণ কথা বলি। পশ্চিমবঙ্গ নাম যদি থাকেই (যার সাথে ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায় জুড়ে আছে) তাহলে পশ্চিমবঙ্গের হয়ে যে সমস্ত ক্রীড়া সংগঠন প্রতিনিধিত্ব করে এবং করছে তাদের নাম ইংরাজি তে BENGAL না রেখে WEST BENGAL রাখা হোক। এটা তো রাজ্যের অধিকারে।
সন্তোষ ট্রফিতে (এখন ব্রাত্য প্রায়, আধুনিক সময়ের কেউ হয়তো জানে না ওই ট্রফির কথা) পশ্চিমবঙ্গ আজও বেঙ্গল নামে খেলে। ক্রিকেট - রঞ্জি থেকে দলীপ ট্রফি হয়ে কোচবিহার ট্রফি - কোনটাতেই তো ওয়েস্ট বেঙ্গল টীম পাঠায় না, পাঠায় বেঙ্গল। টেবিল টেনিসে, অ্যাথলেটিক্সে, হকিতে - অর্থাৎ প্রতিটি খেলার জগতে কেউ বলতে পারবেন প্রতিনিধিত্ব করে বেঙ্গল।
বন্ধু আপনি কি নিজেকে বলেন পশ্চিম বাঙালী? আমি বলি না, হতে পারে এ আমার একান্ত ব্যক্তিগত আবেগ অথবা চেতনা, হয়ত বা একমাত্র আমিই নিজেকে পশ্চিম বাঙালী না বলে বাঙালী বলে পরিচয় দিয়ে থাকি।
(পশ্চিম বাঙালী) বাঙালী শ্রীতোষ যেমন ২১ শে ফেব্রুয়ারি কে মনে রাখে তেমনই সে ১৯ শে মে কেও ভোলে না।
"অনেক সীমন্তের সিঁদুর মুছে সীমান্ত হয়েছে আঁকা",
তাই হয়তো পশ্চিম বঙ্গীয় বাঙালী হয়েও আমি বেঙ্গল টীম গুলোকে সমর্থন করি -
নিজেকে পশ্চিম বাঙালী নয়
বাঙালী বলতেই সবচেয়ে বেশী ভালোবাসি।
এই যুক্তিতেই অথবা আবেগেই রাজ্যের নাম "বাংলা" হলে ক্ষতি কি
ইতিহাস বই থেকে ইতিহাস মুছে ফেলে শাসক
ইতিহাস কি কোনদিন মোছে
মানুষ শারীরিক ভাবে শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়
মন থেকে হয় কি?

কাফিল খান এবং শ্রীতোষ

কাফিল খান এবং শ্রীতোষ
সোজা কথা সোজা ভাবে বলা আমার অভ্যাস। তাই বলি কাফিল খান সংক্রান্ত কিছু পোষ্ট ফেসবুকে ঘুরছে যার বেশীর ভাগ কাফিল খানকে অন্যায় ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে। এর বিরোধী একটি পোষ্ট আমি নিজে শেয়ার করেছি। তাই এ লেখাঃ
আমি বলছি কাফিল খানকে অন্যায় ভাবে হেনস্থা করা হয়েছে এটা একটা
ফালতু পোষ্ট। এয়ারপোর্টে সিকিউরিটি স্ক্যানিং এর জায়গায় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ থাকে না, থাকে CISF এয়ারপোর্টে আমাকেও জুতো - বেল্ট খুলতে হয়েছে, মোবাইল, ল্যাপটপ (ব্যাগ থেকে বের করে) স্ক্যানিং এ দিতে হয়েছে। পকেট থেকে পেন, খুচরো কয়েন সব বার করতে হয়েছে। তারপর বডি স্ক্যান হয়েছে। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতা, মুম্বই, বাগডোগরা, গ্যাংটক (সবই ডোমেস্টিক)। আরও বলি, Official Duty তে Great Eastern Hotel এ ঢোকার সময় ও ব্যাগ থেকে ল্যাপটপ, পকেট থেকে কয়েন এবং পেন বার করতে হয়েছে। গেট সিকিউরিটি জানতেন আমরা যাব তবুও করতে হয়েছে এবং যে ৫/৬ দিন গেছি প্রতিদিন করতে হয়েছে। নিয়ম সকলের জন্য এক। শ্রীতোষ বা কাফিল খানের জন্য আলাদা নয়। জানুন তারপর পোষ্ট / কমেন্ট করুন। যারা করেছেন (কিছু মনে করবেন না) তারা বোধহয় গত কয়েক বছরে বিমান যাত্রা করেন নি।

 10 July at 19:24

অপরাধী কারা?

ইশরত জাহান কি অপরাধী? এক অংশের মানুষ বলবেন “না”। সেই অংশের মানুষই আবার আখলাক কে পিটিয়ে মারায় অংশ নেন, সরবে / নীরবে তাকে সমর্থন করেন অর্থাৎ আখলাক কে অপরাধী বলে মনে করেন, যেমন ওরা ইশরতকে অপরাধী বলে মনে করেছে। আপনারা সমাজের দুই অংশের মানুষ কিন্তু আপনাদের মূল চরিত্র একই। আপনারাই হলেন আসল অপরাধী। যে কোন সুস্থ, স্বাভাবিক, সচেতন, শিক্ষিত, যুক্তিবাদী মানুষের কাছে আপনারা হলেন সবচেয়ে বড় সমাজ শত্রু। তাই আপনাদের কাছে আমরা কমন এনিমি কারণ আমাদের মত যুক্তিবাদী মানুষ গুলো ইশরত এবং আখলাক এর উপর আক্রমণের বিরোধিতা একই ভাষায় করে থাকে। 

আপনারা হলেন সমাজের সেই অংশ যারা মাথা পিছনে ঘুরিয়ে সামনে হাঁটার চেষ্টা করেন। আপনারা হলেন সমাজের সেই অংশ যারা বিশ্বাস করেন একজন স্বাধীন মানুষ কি খাবে, কি পড়বে, কি ভাষায় একে অন্যকে সম্বোধন করবে – তা ঠিক করার দায়িত্ব শুধু মাত্র আপনাদের এবং যদি কেউ তার বিরোধিতা করেন, তাকে শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব ও আপনাদের। যদিও আপনারা বলতে পারেন না কোন মহাপ্রভু মহাশক্তিমান আপনাদের উপর এই কাজের গুরু দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন।

এটা জেনে রাখবেন, ইতিহাস যুক্তিবাদী চিন্তাধারার মানুষকে মনে রাখে, যেমন মনে রেখেছে আব্রাহাম কভুর, অভিজিৎ, ওয়াসিকুর, মালালা, গৌরী লঙ্কেশের মত মানুষদের – তাঁদের উপর আক্রমণকারীদের নাম কেউ মনে রাখে না।

সফদার হাসমি আজও বেঁচে আছেন মানুষের চেতনায় – মানুষের নাটকে কিন্তু তাঁকে যারা আক্রমণ করেছিল তাদের নাম কেউ বলতে পারবেন কি?

তাই সমাজের ঠিকাদারদের বলি, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের সংযত করুন না হলে আপনাদের এত নাচন – কোঁদনের ফল হবে একটি বিশাল “০”। সমাজ সামনের দিকে মুখ করেই এগোবে – এগোবে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে, আপনাদের মত পিছনের দিকে মুণ্ডু ঘুরিয়ে সামনে হাঁটার ভুল সমাজ কোনদিন করে নি, কোনদিন করবেও না।