18 December, 2014

আজকের প্রশ্ন



যখন আগুন লাগে
আগুন কি তাকিয়ে দেখে
ঘরটা পুড়ছে কার ?
হিন্দু – মুসলমান – খৃস্টানের !
কোন বই যাচ্ছে পুড়ে ?
কোরান – বাইবেল – গীতা !
দেবালয়ে বসে আছে কে ?
গড – রাম – মহম্মদ !
আগুন দেয় পুড়িয়ে –
তার কাজ পুড়িয়ে দেওয়া,
সে একমনে কাজ করে চলে।

যখন প্রলয় আসে –
বন্যা – ঝড় অথবা ভূমিকম্প হয়ে
কে রক্ষা পায় ?
রাম – রহিম – মাইকেল !
তার কাজ ধ্বংস করা,
সে একমনে কাজ  করে চলে।

আগুন নেভাতে কি কর বন্ধু
তরল পদার্থ দাও ছুঁড়ে -
কি নামে ডাক তাকে ?
জল – পানি – ওয়াটার !
তার কাজ আগুন নেভানো,
সে একমনে কাজ করে চলে।

তাই প্রশ্ন করি –
দেবে কি উত্তর আমায়
আগুন তার কাজ করে -
প্রলয় তার কাজ করে -
তরল তার কাজ করে –
আর তুমি কোন কাজ কর ?
কেড়ে নাও অজস্র প্রাণ
ধর্মের নামে – জাতের নামে – দেশের নামে
তুমিও কি একমনে কাজ করে চল,
প্রাণ কেড়ে নেওয়ার কাজ ?
উত্তর চায় সময়।

স্মরণিকা



সন্ত্রাসবাদের কোন ধর্ম নেই – জাত নেই – ভাষা নেই – দেশ নেই
ওদের পরিচয় একটাই ওরা সন্ত্রাসবাদী !

এখনও আমরা কথা বলছি !
কি করে ?
হারিয়ে গেছে কি আমাদের বিবেক,
আমাদের চেতনা !

এখনও আমরা বলে উঠছি
ঠিক হয়েছে – ওরাই তো জন্মদাতা
তাই এই পরিণতিই প্রাপ্য ওদের ।
বন্ধ কফিন গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে
আমরা বলে উঠছি !
বলে উঠছি কারণ – আমরা মানুষ !
বন্ধ কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে-
একবুক কান্না নিয়ে
মায়েদের সামনে দাঁড়িয়ে
হয়তো  মানুষই পারে একথা বলতে !

আমি তো পারছি না সাথী
আমি তো পারছি না কথা বলতে
চোখের জলে ভেসে কণ্ঠ রুদ্ধ আমার
হয়তো আমি মানুষ নই !
আমি হতে চাই না মানুষ –
হারিয়ে যাক আমার চেতনা
আমাকে তো আর দেখতে হবে না
ওই বন্ধ কফিনগুলো -
যার ভিতরে শুয়ে আছে
আরও অনেক ছোট্ট আমি।
আমি চলে যাব মাটি মায়ের কোলে !

যাওয়ার আগে – রুদ্ধ কণ্ঠে
আমার মত আরও অনেক আমি
বলে যাব –
চোখের জলে নামুক বন্যা
জাগুক সাগর -
ঢেউয়ের পর ঢেউ
ভাসিয়ে নিয়ে যাক
পাহাড় – কন্দর – নগর – প্রান্তর
ভেসে যাক রাইফেল – বোমা,
তারপর -
জল নেমে গেলে,
আমাদের কবরের উপর
গোলাপ ফুটুক
তোমাদের হাতের মোমবাতি
আগামীর প্রদীপ্ত সূর্য হয়ে উঠুক,
পৃথিবী সুন্দর হোক।

17 December, 2014

পাকিস্থানে জঙ্গি হামলায় ঝরে পড়া ১৩৫ টি নিস্পাপ ফুলের স্মরণে



যতদিন বাঁচব একটি প্রশ্ন কুরে কুরে খাবে,
যতদিন লিখব কলমে রক্ত ঝরবে,
যতদিন গাইব গানে কান্না মিশবে,
যত ছবি আঁকব ক্যানভাসে দানব ফুটবে -
যতদিন বাঁচব ততদিন!

ওই নিস্পাপ মুখগুলো প্রশ্ন করে যাবে -
ওদের ছেঁড়া বই খাতাগুলো উত্তর খুঁজে যাবে,
ওদের আর্তনাদে সরব হয়ে ওঠা ক্লাস ঘর গুলো
ওদেরকেই খুঁজে যাবে -
একটি প্রশ্নের উত্তর চাইবে,
কি দোষ ছিল আমাদের ?
কেন তোমরা আমাদের বাঁচতে দিলে না ?

এই কি শেখায় ধর্ম ?
এই কি নাম বিদ্রোহের ?
ভোরের আজান এই কি শেখায় ?


শুনছি আমি ভোরের আজান
রোজ শুনি -
ওই আজানের ডাকে আমার ঘুম ভাঙে,
প্রভাতী সূর্যের আলো গায়ে মেখে নিয়ে
দিন হয় শুরু।
বড় ভালো লাগে।

আজ কিন্ত ভালো লাগল না
আজ মনে প্রশ্ন জাগল,
আল্লা এ কেমন তুমি,
ঈশ্বর এ কেমন তুমি,
তোমার নামে তোমার বাগানের
ছোট ছোট ফুল গুলি যায় ঝরে !

আমি প্রত্যাখান করি তোমায়
মেনে চলা ওই দানবিক শক্তিকে -
পায়ের তলায় দলে মুচড়ে দিই সেই ধর্ম,
প্রত্যাখ্যান করি সেই জেহাদ -
আর সেটাই আমার উত্তর।
ওই কচি মুখ গুলোর -
ওই ঝরে যাওয়া নিস্পাপ কুঁড়ি গুলোর
(যারা ফুল হয়ে উঠবে না ফুটে আর)
ওদের করা প্রশ্নের এটাই আমার উত্তর।

আজ থেকে শুরু হোক প্রতিরোধ,
আজ থেকে শুরু হোক পথে নামা,
মানুষের সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিরোধে
লক্ষ কোটি মানুষের দৃপ্ত মিছিলে -
লক্ষ কোটি মানুষের তীব্র গর্জনে -
উচ্চারিত হোক সেই শপথ -
আর কোন শিশুকে প্রশ্ন করতে দেব না
কি দোষ ছিল আমাদের ?