26 September, 2017

উমা আমার ঘরের মেয়ে
প্রতি বছরের মত বরের ঘর থেকে
মায়ের ঘরে আসে
কটি দিন মা - বাবার আদর পাবে বলে
আজ সে ঘরে এল।
আমার আদরের দুলালী
অন্নপূর্ণা।।



তার নিজের ঘরেই অন্নের অভাব
অথচ অন্যের মুখে তুলে দেয় অন্ন!

আমি কোন দিন তাকে খাওয়াই
শাক - চচ্চড়ি, কোন দিন
পান্তা ভাত আর আলুসেদ্ধ।
হাসি মুখে ভাগ করে খায় আমার মেয়ে
তোমরা তাকে পার্বতী ও বল।।


তবে যেদিন সে চলে যায়
চোখের জলে - মিষ্টি মুখে
পান - সিঁদুরে - কোলে করে
বিদায় দিই তাকে
চোখের জলে ভেসে বলি
আবার আসিস মা।।

এবার তো তা হবে না
আমি আজ বাবা নই
আমি হিন্দু আজ
ধর্ম ধ্বজা ধারী -
তাই - তাই - তাই - তাই এবং তাই
আমার হাতে অস্ত্র আজ।।

মিষ্টি মুখে নয়-
সিঁদুরে নয় –
ভালোবাসায় নয় -
মানুষের রক্তে বিদায় দিতে চাই
আমার ঘরের আলোকে,
আমার উমা মাকে।।

শুরু করেছি সে আয়োজন।


আমি নাচব তাতা - থৈ থৈ
অস্ত্র হাতে ।।

মা, আমার মতই
যারা তোকে ঘরের মেয়ে বলে ডাকে
থাকবে কি নীরবে
বল মা উমা।

যদি আজ থাকে নীরবে তবে
পরের বছর এই অন্ধকার ঘরে
তুই আসিস না মা।
ঘরের উঠান অন্নপূর্ণার প্রতীক্ষায়
উমার প্রতীক্ষায় থাকুক।।


শরতের আলোয় ভরে গেছে উঠান টা
ভরা ধানে ঢেকে গেছে জমি টা
আর আমি নারকেল নাড়ু পাকিয়ে রেখেছি
মেয়ে আমার কবে আসবে
কবে পাবে বরের ঘর থেকে ছুটি
মায়ের চিঠিটা ছিল ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা
মেয়ে যে লুটিয়ে আছে ধান জমির মাঝে
মায়ের ঘরে যাওয়ার পথে
অস্ত্র নিয়ে অসুর তাকে ছিঁড়ে খেয়েছে।।


শেষ স্তবকের জন্য কৃতজ্ঞতাঃ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যাঁর লেখা "কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়েছে গাছ টা" (যখনই পড়ি এবং অজিত পাণ্ডের গাওয়া গানটি যখন শুনি, চোখ ভরে ওঠে জলে।)।