30 August, 2014

কথা বোল না, চুপ করে থাকো !
জেনো তোমার নীরবতা
প্রতিবাদ হয়ে ওঠে -
যখন তুমি শাসকের সুরে
মেলাও না গলা,
তার কথায় চলে না তোমার পা
শাসকের চাবুকের আঘাতে
চোখে জ্বলে আগুন কিন্ত নিঃশব্দ তুমি,
নিঃশব্দ নীরবতা তখন -
সশব্দ প্রতিবাদ হয়ে
আঘাত করে শাসকের চেতনায়।

অনেক বলা কথার থেকে
অনেক চাবুকের তীব্র আঘাতের চেয়ে
অনেক তীক্ষ্ণ সে প্রতিবাদ,
নীরব সে প্রতিবাদ জ্বালায় আগুন -
আর তখন তোমার পিঠের ওপর নেমে আসা চাবুকটা
শক্ত মুঠিতে ধরে,
মুচড়ে দুমড়ে তুমি ফেলে দাও
ইতিহাসের আবর্জনায়।

তখন বিদ্রোহ জাগে !

29 August, 2014

হামাদের জ্বালা

ডাঙ্গা জমির পথে
লাল ধুলা গায়ে মেইখ্যে
কখনও চাঁরে চাঁরে
কখনও বা চইল্যে চইল্যে
হাঁটলম কতই না পথ !
ওই যেহানে মুরুং বারুর ঘর রঁইয়েঞ্ছে
তাঁর পায়ের তলে
পাহার তলে মোদের মাটি নিকান ঘর।
মোরা বড় সুন্দর ছিলাম
ইঁদুর – বাদুড় সাপ খেতাম
মানুষ খেইত্যে লারতাম।

বাবু মশাইরা হামাদের কোন জাত নাইরে
হামরা মানুষ খেইত্যে লারতাম
ইখন হামরা লিজেকে খাই।
তুরা হামদের কথা বুঝিস না – তাই তুদের ভাষায় কথা বুলি
নামাইলি মাটির অন্ধকারে
সারাদিন থাকি মারাং বুরুর পেটের ভিতরে
আর তুরা হামদের লিয়ে খেলিস
হামদের বউ – ঝি গুলা কয়লার কালো  অন্ধকারে
তুদের কোমরের তলায় আলো জ্বালায়
তারপর লিভে যায় !

হামদের কোন জাত লাই রে
হামরা মইরেছি চাষনালায়
হামরা মরি কারখানায়
হামরা মরি যখন চলে চলে এইস্যে
জল দিয়ে পিয়াস মিটাই – আর বইল্যে ফেলি
মা রে জল নাই – তোর মুখে জল দিলাম
একটা কুয়া করে দে না
তুই হামরে হাতকড়া পঁরাতে বলিস
পুলুস গুলো হামায় হামার মাটি ঘইসটে
টেনে লিয়ে যায়
হামার অহল্যা মাটি ঘিস্তে
হামায় টেনে  লেয়
মায়ের বুকের কাপড় যায় ছিঁড়ে
ওরা মাতে উল্লাসে – তোর মায়ের বুক দেখার উল্লাসে!
বুক দ্যাখ মায়ের দানব সাথী – বুন কে পঁরাইন দিব তেমনই
হামার বুন পইরব্যে জল ভিজান সাদা কাপড়
শুধু উপর লয় লিচটাও দেইখবি
বুনের সাদা – নীল কাপড় পড়া
সুন্দর শরীরটা দেখবি লা
যে শরীর তোরা খুঁজে যাস অপরাজিতার দু পা চিরে
যে মুখ তোরা দেখতে চাস মধ্যমগ্রামের মানবীর কাবাব শরীরে

মা তু কিমন ছেল্যার জন্ম দিলিরে মা
লিজের মায়ের শাড়ি ছিঁড়ে – তোর ছেল্যা বলে
লিজের বুনের কাপড় ছিঁড়ে – তোর চেইল্যে বুলে
মা – বুন ছোট কাপড় পইর‍্যে ঘুরছে বটেয়
উদের কে বাজারে বেইচ্যে দিলম
নিজের মা রে – লিজের বুন রে
কত টাকা পেলম !
হামার মা টা রে / হামার বুন টা রে
অকুল সাগরে ভাস্যে দিলম/ ওদের ইজ্জত টা রে

হামার বুন টাকে রে / হামার ইজ্জত টা রে

21 August, 2014


ধর্ষণ – সে কি শুধু মানবীর  ?
সে কি শুধু শরীরের-
সে কি শুধু ক্ষণিকের-
কামনার জ্বালা মেটাবার ?

ধর্ষণ –
শুধু নয় মানবীর-
শুধু নয় শরীরের-
শুধু নয় ক্ষণিকের-
ধর্ষণ –
জানো আজ আত্মার।

ধর্ষণ –
জানো আজ
সব কিছু ভুলিয়ে,
জীবনটা দুলিয়ে,
শুধু ভোগ করবার
ধর্ষণ –
জানো আজ বণিকের
অধিকার -
ধর্ষণ –
সব কিছু লুণ্ঠন করবার।

ওরা ধর্ষণ করে
মানবিকতাকে-
ওরা  ধর্ষণ করে
চেতনাকে-
তাই ওরা খুঁজে বেড়ায়
পর্দার আড়ালে থেকে,
খুঁজে বেড়ায়-
সেই মূর্খদের,
যাদের দিয়ে ওরা
ধর্ষণ করতে পারে।

আজ বাংলার আকাশে উড়ছে ওরা
মানবিক মানুষকে ধর্ষণ করে !
চিনে নিন সাথী

ডাক দিয়েছে সময়।

15 August, 2014

স্বাধীনতা

স্বাধীনতা !
অর্থ কি তার ?
বিদেশী বেনিয়াদের জায়গা নিল স্বদেশীরা!
রক্ত আর ঘাম করল না জায়গা বদল।

আমার এ সোনার দেশ
এ সোনার মাটি-
এ মাটিতে ঘাম ঝরানো
রামু কাকার ফসল,
এ মাটির বুক চিরে তুলে আনা-
রহিম চাচার কালো হীরে
যোগায় ওদের মুখের খাবার-
যারা বসে থাকে এয়ার কন্ডিশনড ঘরের
নিশ্চিন্ত আরামে !
স্বাধীনতা প্রতিদিন মুখ ঢাকে বেদনায়।

শব্দহীন বেদনা নিয়ে জল ভরা চোখে
স্বাধীনতা দেখে,
নিশ্চিন্ত আরামে বসে থাকা সুখী মানুষ গুলো
ধর্মের নামে – জাতের নামে লড়িয়ে দেয়
রাম – রহিমকে,
রাম – রহিমের রক্ত ঝরে-
ওরা পুলিশের নিশ্চিন্ত প্রহরায় উস্কানি মারে
স্বাধীনতা মুখ ঢাকে লজ্জায়।

লজ্জায় মিশে যায় স্বাধীনতা মাটিতে !
কারণ কিছু বন্ধ সুটকেস
কিছু কলমের আঁচড়
বিক্রীত হয়- দেশের সম্পদ
বিকৃত হয়- দেশের মাটি
তাঁর আঁচল – তাঁর সম্ভ্রম!

ছিন্ন আঁচলে – লুণ্ঠিত সম্ভ্রম নিয়ে
স্বাধীনতা মুখ লুকায়
রাতের নিরাপদ আঁধারে,
এইটুকু ভরসায়-
একদিন রাম – রহিমের ঘরে অন্ন উঠবে,
মরবে না ওরা দাঙ্গায়-
সেদিন স্বাধীনতা নতুন শাড়ি পরে
সুন্দর হয়ে সেজে দাঁড়াবে,
তেরঙ্গার তলে-

ভারত – ভাগ্য – বিধাতার আশীর্বাদ নিয়ে।

08 August, 2014

আমি সেই ধর্মকে ভালবাসতে চাই
যা মানুষকে ভালবাসতে শেখাবে
ভালবাসার কথা শোনাবে
আছি অপেক্ষায়

সেই মানব ধর্ম গুরুর ।
সৈনিকের হাতে অস্ত্র

কার সঙ্গে যুদ্ধ তার ?

পৃথিবী নতুন হবে

আকাশ ঢেকেছে আজ ঘন মেঘে
দিগন্তে বিদ্যুৎ চমক
আসছে প্রলয় !

এসো প্রলয় – তোমার রুদ্রমূর্তি নিয়ে
তাথৈ নৃত্যে ধ্বংস কর ধরা !

পৃথিবী নতুন হবে –
প্রেমে আর ভালোবাসায়
কারণ-

ধ্বংসের মধ্যেই জন্ম নেয় জীবন।
পড়ে মানুষ, জানে মানুষ
ইতিহাস – বিজ্ঞান – সাহিত্য
শিক্ষা নেয় না
তাই কি মানুষ উল্লাসে মাখে

মানুষেরই রক্ত ?

কে আমি

আমার এক সাথী @ Moni Seth পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উদ্যোগে “হিরোশিমা দিবস” – এর পদযাত্রায় আমাদের দেখে কমেন্ট করেছেন “শ্রীতোষদা আপনি আমাদের বিজ্ঞান মঞ্চের লোক”। কথাটা পড়ে নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করলাম আমি আসলে কাদের লোক – তখন যা মনে হল আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম।

যখন পথ চলি মানুষের সাথে – মানুষের পাশে
এক মিছিল থেকে অন্য মিছিলে
কেউ প্রশ্ন করে
তুমি আমাদেরই লোক !

মানুষ যখন গর্জে ওঠে প্রতিবাদে
আমার গলা যখন সেই প্রতিবাদে মেলায় গলা
শুনতে পাই
ও তুমি আমাদেরই লোক !

প্রতিবাদী গানে – কবিতায় – গল্পে – নাটকে
একটা প্রশ্ন চিৎকার করে প্রশ্ন করে
বল না
তুমি কি আমাদের লোক ?

আমি নিজেকে প্রশ্ন করি কার লোক আমি
কোন আমাদের লোক ?
উত্তর শুনতে পাই
তোমরা প্রতিবাদের লোক !
যেখানে অত্যাচারিত মানুষ-
যেখানে অত্যাচারিত বিবেক-
যেখানে বাঁচার অধিকার নিয়েছে কেড়ে,
যেখানে মানুষ স্বপ্ন দেখতে পারে না-
তোমরা রাতের সে কালো আকাশ চিরে
উজ্জ্বল আলো হয়ে
প্রতিবাদ নিয়ে আসো,

তোমরা প্রতিবাদের লোক।
যদি তুমি কলম ধরতে চাও
লিখতে চাও মানুষের কথা
হাতে রাইফেল ধর
কলম ধরার আগে।

যদি তুমি গান গাইতে চাও
পৃথিবীটাকে ভরিয়ে দিতে চাও সুরে
হাতে রাইফেল ধর
বীণ বাজানোর আগে।

যদি তুমি ভালবাসতে চাও
আনতে চাও নতুন জীবন
হাতে রাইফেল ধর

অধর চুম্বনের আগে।

03 August, 2014

কখনও একটা আকাশ ছিল
নদীর পারে একা
বয়ে যাওয়া মুক্ত বাতাসের সাথে।

কখনও বা একটু বাতাস ছিল
আকাশ পারে একা
বয়ে যাওয়া নদীটার সাথে।

কখনও একটা নদী ছিল
বাতাসের সাথে একা
আকাশের সাথে ।

তুমি – আমি – আমরা সবাই
আকাশ – বাতাস – নদীর সাথে
খেলা করতাম।
বড় প্রিয় আমাদের
আকাশ – বাতাস – নদী।

নীল আকাশ কালো ধোঁয়ায়
মিশেছে বাতাসে বিষ
নদীটা মজে গেছে
বদলে গেছি আমরা সবাই।

তবু আশা রাখি মনে
নীল আকাশে বয়ে যাওয়া মুক্ত বাতাস
খুঁজে পাবে নদীটাকে,
বদলে যাওয়া আমরা সবাই
বদলাব আবার
নীল আকাশের জন্য
মুক্ত বাতাসের জন্য

বয়ে যাওয়া নদীটার জন্য !

01 August, 2014

কোন এক অন্ধকার থেকে এসে
হারিয়ে যাব আর এক অন্ধকারে
মাঝখানে খুঁজে যাই – মানুষ !
দেখলাম – চিনলাম –                       
খুঁজেও পেলাম মানুষ !
তাই শেষের সে অন্ধকার জানি

আলোয় ভরা ।

মাতৃভাষা

আমার স্বপন আমার আশা
সে আমার মাতৃভাষা,
ভাষার টানে, প্রাণের টানে
সুরের আগুন জ্বালাই মনে।

তোমার ভাষা, আমার ভাষা
কান্না হাসি ভালোবাসা
সুর ছড়িয়ে মন ভরিয়ে
মায়ের মুখে মিষ্টি হাসা।

মায়ের হাসি, মনকে টানে
সুরের আলো জ্বালায় প্রাণে।

রক্তে রাঙা আমার আমার ভাষা
সেই স্মৃতিতে আজকে আসা,
হাঁটছি মোরা ভাষার টানে

সুর ছড়িয়ে গানে গানে।
কয়লা আর হীরা 
দুই – ই নাকি কার্বন
রসায়ন বলে ।
খনি থেকে তুলে আনে
কয়লার মত কালো মানুষ গুলো।
যারা হিরেকে দেখায় সূর্যের আলো
সেই কালো মানুষগুলো
ঢাকা পড়ে যায়

হিরের উজ্জ্বল ছটায়।