29 July, 2016

দিক ভ্রষ্ট ১৭র কৈশোর

১৭ র কৈশোর আজ অসহ্য
নেয় মাথা তোলবার ঝুঁকি
এ দুঃসময়ে বুঝতে চায় না ওরা
কোনটা সঠিক
কি বা জীবনের ফাঁকি।
১৭ র কৈশোর জানি
জীবনকে দেখতে চায়
নতুন রক্তের টানে
পথ খুঁজে খুঁজে চলে
স্বপ্ন জাগিয়ে প্রাণে।
১৭ র কৈশোর স্বপ্ন দেখে
বাঁচবে নতুন করে
কোন পথে যাবে
কোন সুরে গাবে
দেখিয়েছি কি মোরা তারে ?
তুমি তো ছিলেই – আমিও ছিলাম
১৭ র কৈশোরে
আজ কেন সাথী
ভুলে যাই বল
নিজেদের পথটারে ?
যাদের শিক্ষায় শিক্ষিত জীবন
যারা দেখিয়েছে পথ
আমরা কি তাদের উত্তরাধিকার
আমরা কি সূর্য রথ ?
১৭ র কৈশোর জমা হয়ে আছে
তোমার – আমার বুকে
আমরাই আজ ব্যর্থ বন্ধু
পথ দেখাতে তাকে !
নিজের দিকেই আঙ্গুল তুলে
প্রশ্ন করি বারে বার
আর কত বার আঘাত পাব
আর কত রক্ত ঝরাব
১৭ র সাথী আমার ? শ্রীতোষ ২৯/০৭/২০১৬

22 July, 2016

উত্তরাধিকার

তুমি কাজ করবে
দায়িত্ব পালন করবে সে
আমি কথা বলব।

এই কাজ টা ওই রকম ভাবে
করা উচিত ছিল –
আমি হলে না এই ভাবে করে ফেলতাম।

ফুটবল ম্যাচ দেখতে বসে যেমন বলি
ওইভাবে পাস বাড়ালে গোল হয় নাকি
ক্রিকেট হলে
বলটা আর একটু স্যুইং করাতে পারল না
অথবা হকি স্টিক টা দিয়ে আর একটু ফ্লিক
করাতে পারল না।

শোন ওর গলায় না
শুব্ধ সপ্তক লাগল না
বইরবি করে দিল ভৈরবী কে
এটা কোন নাটক হল -
আমরা কথা বলব।

আমরা ভাবব না কেন আমরা
আজকে এই অবক্ষয়ের মুখে
অন্যকে দোষ দিতে পারলে বড় আনন্দ পাই
আজ কত কথা শুনি
এ বলে বুড়ো দের তাড়াও
অন্যে বলে তোমরা করেছ কি?

কেউ নিজের দিকে তাকিয়ে বলে না
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করে না
আমি করেছি কি ?
অন্যকে দোষ দেওয়া বড় সহজ
আয়নার সামনে দাঁড়ানো
ততটাই কঠিন।

নেতা তার কাজ করেনি
কর্মী কি করেছে কাজ
ছোট্ট করে
মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে?
বল আমায়
যদি দাঁড়িয়ে থাকে কেউ
তাহলে সেই প্রকৃত কর্মী
যার পাশে থাকে জন সমুদ্র !

তাহলে চিন্তা নেই সাথী
সেই মানুষ আনবে নতুন প্রভাত
আর তা না হলে
দুঃস্বপ্নের গভীর অন্ধকারে মিলিয়ে যাবে,
হারিয়ে যাবে -
সমাজ বদলের স্বপ্ন।

 সেই স্বপ্নকে দিও না হারাতে বন্ধু
পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চ থেকে
নাও বিদায়
মানুষকে ভালোবেসে
মানুষ ই তো উত্তরাধিকার ! ২২/০৭/২০১৬

18 July, 2016

রূদ্ধশ্বাস

সেনাদল অথবা পুলিশে যারা
যোগ দেয়
একটি বুলেট নাকি লেখা হয়
তাদের নামে।

মেয়ে হয়ে জন্মায় যারা
একবার অথবা বহুবার
অশালীন মন্তব্যের আঘাতে
রক্ত ঝরবে মনে
অথবা ধর্ষিতা হবে বার বার
বাস্তবে ও মননে
লেখা হয় কি তা?

অথবা জন্মের পরে
শুধু মাত্র মা হয়ে জন্মানোর অপরাধে
শ্বাস রূদ্ধ হয় তার।

একটা বুলেটের চেয়ে
একটি ধর্ষণ,
কিছু অশ্লীল শব্দ কি
অনেক বড় আঘাত নয়?
বুলেট নিভিয়ে দিতে পারে
জীবনের দীপ ।

ধর্ষণ
অথবা শব্দ অশালীন
বাঁচিয়ে রেখে,
মারে প্রতিপলে৷

প্রশ্ন রেখে গেলাম
এক মানুষ হয়ে
মানুষ নামধারী
কিছু জীবের কাছে। শ্রীতোষ ১৮/০৭।২০১৬

15 July, 2016

অন্য এক নীল দর্পণের কল্পনায়

এক সময়ে নীলকর সাহেব দের অত্যাচারে বাংলার কৃষক মৃতপ্রায় ছিল। কৃষকের সরেস জমিতে (যে জমিতে ভালো ফসল হয়) সেখানে নীল বুনতেই হবে, না হলে টাকা দিতে হবে (আজকের অনিন্দ্য এবং আরও অনেক অনিন্দ্যের মত) । ঠিক আছে নীল বোনা চলছে কিন্ত তোমার ঘরে যদি যুবতী মেয়ে / বউ থাকে তাহলে তাকে নীল কুঠিতে যেতেই হবে (না গেলে আজকের ছেলে ঢোকানোর মত ঘরে পাইক ঢুকবে)।
নীল বুনে নিজের খরচায় কুঠিতে তুলে দেওয়ার পর টাকা চাইলে "রামচাঁদ" "শ্যামচাঁদ" জুটবে কপালে। এই লেখার একটি শব্দ যদি মিথ্যা হয় তাহলে আমি আদালতে দাঁড়িয়ে ১০০০ বার কান ধরে ওঠবস করতে রাজি আছি। নীল দর্পণ এবং ইছামতী উপন্যাসে বাংলার এই কালো দিনের কথা এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে তোলার কথা লেখা আছে। লেখা আছে শ্রদ্ধেয় কথা সাহিত্যিক দীনেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "নীল ঘূর্ণি" উপন্যাসে।
কাল থেকেই সরকারের এক অনুগত ভক্ত বলছে যেহেতু ফরাসি বিপ্লবের রং নীল - বাস্তিল দুর্গের পতনের ইতিহাস নীল তাই পরকিত বামপন্থী এই সরকার নীল রংকে গ্রহণ করেছে বি প ল বের প তীক হিসাবে।
ধরে নিলাম তা সত্য। প্রতিটি মতের বিরুদ্ধ মত থাকতেই পারে।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যদি বলে নীলকর সাহেবদের দেখে তাদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে বর্তমান সরকার নীল রং পছন্দ করেছে কারণঃ
১)যখন - তখন যে কোন মহিলাকে তুলে নিয়ে যাওয়া,
২) নীল কর সাহেবদের মত তাদের কথা না মেনে চললে চাবকানো -
৩) জোর করে নীল বুনতে বাধ্য করা (আজকের তোলা আদায়ের মত)
৪) বাড়িতে কোন একটা কাজ করতে চাইলে ওদের পা চাটা;
৫) এমনকি অটো / রিক্সা চালাতে গেলে উপযুক্ত দক্ষিণা দেওয়া
সেই নীলকরদের মত
একটি মজার কথা ওরা নীল রঙের চাষ করত আর ওদের পোশাক ছিল সাদা -
(ইতিহাসের ছবি চাইলে দেখে নিতে পারেন)
তাহলে কিছু ভুল বলা হবে কি?
তাহলেও কি বলা যাবে
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বড় পছন্দের রং নীল কারণ আকাশের রং নীল।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বড় পছন্দের রং সাদা কারণ সাদা সততার ___।
আমি বলি ভালো কথাঃ
নীলের গা থেকে রক্ত পড়ে চুইয়ে – লাল রক্ত
নর্দমায় যায় বয়ে – খুব ঘন নীলের মাঝে
জমাট বাধা কালো রক্ত যায় না চেনা
আজকের নীলকরের চাবুক খাওয়া সাধারণ মানুষ
তাদের রক্ত
অনিন্দ্যের জিভ যাদের রক্তে লাল।
তাহলে হোক না লেখা আর এক "নীল দর্পণ" ! শ্রীতোষ ১৫/০৭/২০১৬

মানুষ তোমাকে -



অভিজিতের সময় তুমি চুপ করে ছিলে বন্ধু
কারণ অভিজিৎ হিন্দু (মানুষ নয়)
ওয়াশিকুরের সময় তুমি রবীন্দ্রনাথ পড়ছিলে কারণ
ওয়াশিকুর মুসলমান (সেও তো মানুষ নয়)
সিরিয়াতে যখন মানুষ মরে তুমি
গালিবের কবিতায় যাও ডুবে কারণ
মুসলমানের হাত রাঙা মুসলমানের খুনে (ওরা কি মানুষ)
আমরা আজ হিন্দু / মুসলমান/ খৃষ্টান রূপে দেখি মানুষকে
মানুষকে মানুষ রূপে দেখি না।
মানুষকে মানুষ রূপে দেখতে আমরা
ভুলেই গেছি কবে!
 
তাই তো আমরা এক হয়ে আজ
যুদ্ধে নামতে পারি না
তুলে নিতে পারি না রাইফেল
বলতে পারি না
হিন্দু - মুসলিম - খৃষ্টান কেউ নয় ওরা
যাদের রক্তে পৃথিবীর মাটি চলে ভিজে
ওরা মানুষ -
তোমার - আমার মত একটা মানুষ। শ্রীতোষ ১৫/০৭/২০১৬

এই পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে যেখানে ধর্মের নামে - জাতের নামে বজ্জাতি চলছে - অত্যাচার চলছে - ঝরছে নিরীহ নিরপরাধ মানুষের রক্ত তার প্রতিবাদে।