18 October, 2016

মানবিকতা র বার্তা বহন কারী কবি গুরু - তোমার প্রতি

এক অসাধারণ কবি সাধারণ মানুষকে দেখেন কাব্যে
অতি সাধারণ জীবন তার
তাই তিনি তার অক্ষমতার প্রচণ্ড অধিকারে
বলতে পারেন
যে আছে মাটির কাছাকাছি
সে কবির বাণী লাগি কান পেতে আছি

আজ পর্যন্ত - এই মুহূর্ত পর্যন্ত
কোন লেখক অথবা
কোন নিন্দুক প্রশ্ন করতে পেরেছে
কেন কবি - কেন এমন এই
সত্য কথা বললেন !
আর ছাত্র বলে
কবি কেন বললে তুমি
আমার কবিতা, জানি আমি,
গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সে সর্বত্রগামী।
হে কবি তোমার স্থান আজ ল্যাম্প পোষ্টে
তীব্র গরমে
সে সময়ে গান বাজে
"আজি অঞ্জন ঘন পুঞ্জ ছায়ায় হে গম্ভীর"
আর ঘন ঘন মেঘ গর্জায়
বরষণে কলকাতা নদী হয়ে যায়
ল্যাম্প পোষ্টে বাজে গান
বসন্তের
"এই তো ভালো লেগেছিল
আলোর নাচন পাতায় পাতায়" !
কবি কি ভাবছ একবার বল তো
তোমার শান্তিনিকেতন আজ ইট কাঠ পাথরের জঙ্গল
তোমার আদর্শ মেনে চলার
অধিকার নিয়েছিল ওরা
তাই তুমি ল্যাম্প পোষ্টের ফাঁসিকাঠে ঝুলন্ত আজ
ওদের সে জল্লাদের হাতে কারণ
ওরা তোমার নাম করে মানুষ খুন করে।
কবি তুমি অবাক হয়েছিলে
সত্য কথা স্বীকারের পর
কারণ ওরা
ওরাই তো তোমাকে বুর্জোয়া কবি বলেছিল
সময় হয়ে গেছে পার
তাই দেখি আজ
যারা তোমাকে বুর্জোয়া কবি বলেছিল
তারা তোমাকে নিয়েছে করে
প্রাণের মানুষ ।
যারা তোমাকে প্রাণের মানুষ বলে ডেকেছিল
তারা আজ তোমাকে ব্যবহার করে নিজ স্বার্থে
তাই তো তুমি ঝুলন্ত আজ
LAMP POST নামক এক ফাঁসিকাঠে
দুঃখের বিষয় তুমি বলতে পারনা
একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি
মা জননী আমার আমাকে আর এইভাবে বেইজ্জত
করিস না
আমাকে একটা পুরস্কার দে বিশ্ব বঙ্গ কবি ভূষণ !

অন্য এক প্রশ্ন !

আমায় অনেকেই বলে
তুমি একটু আধটু কবিতা লিখতে পার
তোমার হবে
(কবে কি হবে আমি জানি না সত্যি)
যদি তুমি তোমার স্বপ্নটাকে বাদ দিয়ে
লিখতে পার।
সমাজ কে দেখ কবির চোখে।

তুমি এক মানুষ
প্রতিদিন জীবন কে দেখছ
হয়তো সাধারণ মানুষের থেকে
একটু অন্য চোখে,
তাই তো তুমি কবিতা লিখছ।
তাহলে কেন উঠে আসে বারবার করে
প্রতিবাদ, স্লোগান, নতুন সূর্য
তোমার লেখায়?
শব্দ গুলো বড় ক্লিশে হয়ে গেছে
বড় সত্যি কথা।
একজন মানুষ নিজের চোখে
প্রতিদিন জীবন কে দেখে -
কেউ লেখে কবিতা, কেউ নাটক
কেউ বা গান
কেউ কিছুই লেখে না !
কিন্ত প্রত্যেকেই তো তার নিজের চোখে
জীবনকে দেখে – সমাজকে থেকে।
সমাজের প্রতিটি আচরণ
নিজের শিক্ষার দৃষ্টিতে দেখে,
নিজের আদর্শের দৃষ্টিতে দেখে,
তাই তার লেখনী বলে সেই সমাজের কথা
যে সমাজের কথা তার আদর্শ বলে।
হতে পারে বন্ধু – তোমার কাছে সে ভুল।
আমরা বাঙালিরা ঋণী যার কাছে
আমাদের লেখনীতে বার বার যার কথা উঠে আসে
তিনিও বলেছিলেন -
“আমার কবিতা জানি আমি, গেলেও বিচিত্র পথে
হয় নাই সর্বত্রগামী !”
যুগ যুগান্তরের কবির অমর উচ্চারণঃ
“যে আছে মাটির কাছাকাছি
সে কবির বাণী লাগি
কান পেতে আছি”।
অক্ষর হয়ে শব্দের পথ বেয়ে
জন্ম বাক্যের
বাক্য প্রকাশ করে মনের ভাব
নিজের মনের ভাবনাকে লুকিয়ে রেখে
চিন্তার বিরুদ্ধ পথে গিয়ে কোন মানুষ
বাঁচতে পারে কি ?
লিখতে পারে কি ?
সব সময় কোন এক মানুষ চলতে পারে কি ?
সারা জীবন না হয় পেটের জন্য
আপস করে গেলাম
তাই বলে কি নিজের মনের কথা
পারব না করতে প্রকাশ ?
যারা আমাকে অন্য ভাবে কবিতা লিখতে বলেন
তাঁদের কাছে এই প্রশ্ন রেখে গেলাম। শ্রীতোষ ০১/১০/২০১৬

আজকের টেনি দা

ক্যাবলাদের রকে বসে জমাটি আড্ডা হচ্ছে চার মূর্তিমানের। টেনিদা প্যালাকে দিয়ে পিৎজা আনিয়ে নিজেই সিংহ ভাগ খেয়ে এখন মাদার ডেয়ারির দোকানের দিকে মাঝে মাঝেই তাকাচ্ছে তারপরেই তাকাচ্ছে ক্যাবলার দিকে। ক্যাবলা তখনই আকাশের দিকে তাকাচ্ছে।
প্যালা ব্যাপক চটে গিয়ে ভাবছে কি করে টেনিদাকে শিক্ষা দেওয়া যায়। হঠাৎ করে মাথায় বুদ্ধি এসে গেল।
প্যালাঃ টেনিদা, আজ তো গান্ধীজীর জন্মদিন। তা বল তো গান্ধীজীকে "মহাত্মা" বলে প্রথম কে ডেকেছিলেন?
টেনিদাঃ এ তো সোজা প্রশ্ন - রবি ঠাকুর।
প্যালাঃ (একটু চমকে গেছে) আচ্ছা বল তো গান্ধীজীকে "জাতির পিতা" বলে প্রথম কে ডেকেছিলেন ?
টেনিদাঃ (একটু মুচকি হাসি হেসে) নেতাজী। হুঁঃ হুঁঃ বাবা এই টেনি শর্মা ও এখন নিয়মিত ফেসবুক করে। আচ্ছা এবার তোকে একটা প্রশ্ন করি - বলতো আমাদের দিদিকে "সততার প্রতীক" বলে প্রথম কে ডেকেছিলেন ?
শুধু প্যালা নয় সক্কলে ভীষণ ঘাবড়ে গেছে। এই প্রশ্নের উত্তর তো তাদের জানা নেই। আবার উত্তর না দিতে পারলে টেনিদার গাঁট্টা তো আছেই কেষ্ট দা যদি তার প্রিয় জিনিস টা ছুঁড়ে মারে।
কিছু করার নেই দেখে সারেন্ডার করল।
প্যালাঃ তুমি বল। এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই।
টেনিদাঃ বলতে পারি তবে তার আগে মাদার ডেয়ারির দোকান থেকে ৬ টা মিষ্টি দই নিয়ে আয়।
কি আর করা - দই আনতে হল। টেনিদা ৩ টে এবং প্যালার প্রায় পুরোটা খেয়ে যখন দেখল কাপে প্লাস্টিক ছাড়া আর কিছুই নেই - সেই সময় প্যালা বলল
প্যালাঃ এবার বল।
টেনিদাঃ আমিও জানিনা রে। আসলে কলিযুগে আমি তোদের এই প্রশ্নটা করব এটা মা কালী তাঁর দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পেয়েছিলেন। তাই তিনি লজ্জায় এমন জিভ কেটেছিলেন যে সে জিভ আর ভিতরে ঢোকাতে পারেন নি কারণ এ প্রশ্নের উত্তর তিনিও জানেন না।
এই অবধি দেখলাম তার পরেই গিন্নির ধাক্কায় ঘুমটা ভেঙ্গে গেল।

মানব জীবন

একটা কথা বলি বাবুমশাইরা
একটু ভাববেন
নীল আকাশে সাদা মেঘ বেড়ায় ভেসে
বড় সুন্দর লাগে
কবি কাব্য লেখে
তাই তো ?

এবার বলি বাবুমশাই
আর একটু ভাবেন
মেঘের রঙ বদলে কালো হয়ে যায়
বাতাস ওঠে – বৃষ্টি নামে
বাতাস ঘর বাড়ি ভেঙ্গে দেয়
যখন সে ঝড় হয়
বৃষ্টি ফসলের খেত ডুবিয়ে দেয়
যখন সে বন্যা হয়।
ভুল বললাম ?
বল না বাবুমশাই
সূর্য না থাকলে
পৃথিবীতে বাতাস বইত কি
বৃষ্টি নামত কি?
বল না ।
ও বাবুমশাই
প্রভাত আর সন্ধ্যা সূর্যের রঙ
পৃথিবীকে সেই বার্তা দেয়
বলে
যে যতই বল আর চিৎকার কর
প্রভাত ও গোধূলির রঙ
বদলাতে পারবে না ।
তাই না ?
তাই বলি বাবুমশাই
নীল আকাশে সাদা মেঘ ছাড়া
বাঁচতে হয়তো পার
সূর্য ছাড়া
প্রভাত আর গোধূলি ছাড়া
বাঁচতে পারবে না
পারবে কি -বল না ?
কারণ প্রভাত – গোধূলির মাঝেই
লুকিয়ে আছে
মানব জীবন ।। শ্রীতোষ ১১/১০/২০১৬

অভিনয়

আমার কাছে প্রতিদিন - মরণ দিন।
ঘুমাতে যাওয়ার সময় জানি না
পরের দিনের সূর্য দেখব কিনা -
ঘুমানোর পর কি হয়
তাও জানি না।
আসলে মানুষের জীবন তো তাই !
প্রভাত সূর্যের আলোয় মঞ্চে আসা
কত আলো পড়ে গায়ে
কত সংলাপ বলে যাই
কত - কত - কত !
এক সময় যে পথে মঞ্চে এসেছিলাম
যে পদক্ষেপে
অন্য এক পদক্ষেপে
সে পথে মঞ্চ ছেড়ে যাই
অথবা
ছেড়ে যাই মঞ্চ অন্য পথে
অন্য পদক্ষেপে !
আমরা সেই পরিচালকের নির্দেশে
জীবনের অভিনয় করে যাই

প্রশ্নের উত্তর আছে কি

চলেছে - চলছে - চলবেই
দূর্গার বিসর্জন তো হবেই !
ধর্ষিত দুর্গার !
মানুষ দ্বারা ধর্ষিত দুর্গার
প্রতিদিন - প্রতি মুহুর্তে
প্রতি ঘরে
মানুষ তথা হিন্দুরা যাকে
মা বলে ডাকে - সেই দুর্গার
সেই দুর্গা হয়তো বা মেয়ে
হয়তো বোন
হয়তো স্ত্রী
আমার - তোমার
তাই না !
কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার অপরাধে
আরও বেশী টাকা আনতে না পাওয়ার অপরাধে
দুর্গারা পুড়ে মরে
অনেক পুড়ে যাওয়া দেখতে পারা যায় না
অনেক অন্ধকার আলোর আঁধারে ঢাকা পড়ে যায়
নবরাত্র - রাবণ বধ - দান্ডিয়া নাচ অথবা
সতী নামে
দুর্গারা পুড়ে মরে
একটি পুরুষ তাঁর প্রিয়তমার জন্য
সহ মৃত হয়েছে ?
এই প্রশ্নের উত্তর আছে কি ?

মা ক্ষমতা

ও আমার স্বামী শম্ভু শূলপাণি
দেখছ কি হচ্ছে
ওগো আমায় দিয়ে স্যালুট দেওয়াচ্ছে
রক্ষা কর নাথ আমার - রক্ষা কর।
যার কালির আঁচড় নাই কো পেটে
যে ইংলিশ বলে ভুল বাংলাতে
আবার সব কথাতেই সত্য (!) বলে
বাধায় গণ্ডগোল !
হরি বোল - হরি বোল
হরি হরি বোল।
ও সে সব্ব ঘটে কাঁঠালি কলা
ধারটি করে ফুত্তি মারা
বাঁশ দিয়ে ও চিল্লে বলে
করেছি যে বেশ
ভোলা মহেশ্বর
ও যে
তোমার চেয়ে ও সরেস !!
রক্ষা কর নাথ - রক্ষা কর।