13 April, 2018

মিছিল

আজকে নাকি একটা মিছিল ছিল নগরের পথে। নাগরিক জীবনের অসুবিধা করে সে মিছিলের মানুষগুলো নাকি আনন্দ পেয়েছিল! মানুষের মিছিল দেখলে এই তো বলে বুদ্ধিGB GীB গুলো। না আজ কোন মিছিল ছিল না।
আজ নগর কলকাতার নাগরিক পথ মুখরিত হয়েছিল একটি মানুষের চলার শব্দে, যে মানুষের অন্তরে ছিল মানুষের প্রতি ভালবাসা, কণ্ঠে ছিল –“গাহি সাম্যের গান” যে মানুষ বলছিল “হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন—শক-হুন-দল পাঠান-মোগল এক দেহে হল লীন”। যে মানুষ জাতের নামে বর্ণের নামে হাতে অস্ত্র তুলে নেয় না, অন্যের হাতে অস্ত্র ধরায় না। যারা এ কাজ করে তাদের মত বিষাক্ত জীবগুলোর বিরুদ্ধে হেঁটেছিল একটি মাত্র মানুষ।
আমি সেই মানুষ হয়ে, অজস্র মানুষের ভিড়ে, অজস্র মানুষের কণ্ঠে নিজের কণ্ঠ মিলিয়ে, প্রতিজ্ঞায় উত্তোলিত অজস্র হাতের সাথে হাত ধরে পথ হেঁটেছি। ডাক্তারের বারণ একটানা বেশী রোদে থাকা, নিজে থাকতেও পারিনা, তবুও সব বাধা সরিয়ে আজ পথে নেমেছিলাম কারণ এই পথ হাঁটা বড় দরকার ছিল।
আমি দেখলাম কখনও নীরবে কখনও কবিতা, গান আর নাটক নিয়ে মানুষটা কেমন পথ হাঁটল। অবাক লাগছে তাই না, কখনও বলছি মানুষ আবার কখনো মানুষগুলো। আসলে যারা এই মিছিলটায় ছিলেন তাঁরা বুঝবেন যে আমি সত্যি বলছি। আসলে এই মিছিলে অনেক শরীর ছিল কিন্ত তাঁদের চেতনা ছিল এক, তাঁদের কণ্ঠে ছিল রবীন্দ্রনাথের কবিতা – নজরুলের গান। তাঁদের অন্তরে ছিল একটি মাত্র প্রতিজ্ঞা
রবীন্দ্রনাথ – নজরুলের বাংলাকে আমরা সাম্প্রদায়িক বজ্জাতদের হাতে তুলে দেব না।
শেষ পর্যন্ত থাকতে পারলে হয়তো অনেকের সাথেই দেখা হত কিন্ত পার্ক ষ্ট্রীটের ক্রসিং পার হয়েই দাঁড়িয়ে পড়তে হল। ঘাড়ে – মাথায় জল দিয়েও সুস্থ হতে পারলাম না। প্রায় ২০ মিনিট অপেক্ষার পরে বাড়ির পথ ধরতে হল। আমি ছিলাম মিছিলের সামনের দিকে গড়িয়া সুচর্চার সাথে, ২০ মিনিট পরেও দেখলাম মিছিল চলছে, একটি মানুষের মিছিল – শুধু আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম।

No comments:

Post a Comment