04 May, 2020

চাওয়া

1.প্রিয় গন্ধ : নতুন বই।
2.শেষ কান্না : সেটা কি হবে জানি না কারণ শেষ কান্নার অনুভূতি লেখার শক্তি আমার হাতে থাকবে না (কারো হাতে ছিল বলে জানিও না)
3:প্রিয় ফুল : ফুল আবার ভালো খারাপ আছে নাকি, আমার তো সব ফুলই ভালো লাগে। (একটু আলাদা করে বললে শিউলি)
4:প্রিয় জীব : আলাদা করে দেখিনা, সবই সমান (তবে কিছু দো পেয়ে জীব যাদের মানুষের মত দেখতে হলেও মানুষ নয় তাদের অতিরিক্ত বেশী ভালোবাসি)
5:প্রিয় আইসক্রিমঃ বরফ আইসক্রিম তারপর চকোলেট (কেউ খাওয়াতে এলে মুস্কিল একসঙ্গে ৮/১০ টা খেয়ে নিই)
6:প্রিয় রংঃ নীল - আকাশী।
7:গান চলে তো? আমি সুর ভালোবাসি। ভারতীয় এবং পাশ্চাত্য ক্ল্যাসিকাল ভোক্যাল মাথায় ঢোকে না, মাথা ধরে যায় (তবে ক্ল্যাসিকাল বেস ভোক্যাল যেমন “কা ক্রু সজনী আয়ে না বালম” বা “বেহাগ যদি না হয় রাজি” জাতীয় গান অসাধারণ লাগে)
8:প্রিয় tv show : এক সময় দেখতাম। তেরো পার্বণ, নুক্কড়, আরও অজস্র নাম আছে। এখন দেখি না ।
9:ট্যাটু : ভালো লাগে না।
10: মিষ্টি : নরম, তুলতুলে রসগোল্লা।
11:বিড়ি , সিগারেট : ছেড়ে দিয়েছি
12:রাতচড়া না ভোরেওঠা : মুডের উপর নির্ভর
13:সপ্তাহের ভালো দিন : যদি মনে হয় তাহলে প্রতিদিন
14:ডাক নাম : অজস্র। বাবু, বাবুরাম, গোবলা, সোনা, মোটা, (আর একটা নাম শুধু একজন উচ্চারণ করে তাই তাঁর জন্যই থাক)
15:প্রিয় ঋতু: রুদ্র বৈশাখ আসে ধরাকে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে আসে নর্তন ছন্দে, ধ্বংসের উদ্দাম আনন্দে। সেই ধ্বংসের মাঝে ঝরে ধারা – জাগে সৃষ্টির বীজ। সেই বীজ কে পূর্ণতা দিতে আসে বর্ষা। রুদ্র বৈশাখ আর কিশোরী বর্ষার মিলনে ধরিত্রী জন্ম দেয় সন্তানের। আসে শরৎ! ছোট্ট ছোট্ট পায়ে ঠিক পৌঁছে যাব – ওই চাঁদের পাহাড় ঠিক দেখতে পাব। মাথা দোলায় ধানের শীষ – জাগে কাশ ফুল। পৃথিবী নবীন হয়। পা বাড়ায় পূর্ণতার দিকে.। নতুন ভাতের গন্ধ গায়ে মেখে আসে হেমন্ত। একই সাথে ডাক পড়ে চলে যাওয়ার – পাতা ঝরানোর সময় শুরু হয়। আসে যে পউষের বেলা। জীবনের শেষ তো শেষ নয়, সে আহ্বান জানায় নতুন জীবন কে – পায়েস মুখে দিয়ে আসে নতুন জীবন, আসে বসন্ত। তাই কাউকেই তো আলাদা করতে পারি না। সব্বাই আমার কাছে ভীষণ প্রিয়।
16:পাহাড় না সমুদ্র : পাহাড় , মালভূমি, সমুদ্র – আসলে প্রকৃতি এবং তাঁর সাথে মিশে থাকা মানুষ।
17:সদাই হারাই : নিজেকে।
18: বিরিয়ানি : বিরিয়ানি দূর! ওটা হল সিনেমার নায়িকা। প্রেমে পড়েছি সাদা – ভাত আর কষা মাংসের। পরকীয়া প্রেম পোলাও – কষা মাংস। প্রিয় বান্ধবী – খিচুড়ি এবং খিচুড়ি
19:স্কুলে ফিরে যাবো? কেন? : অবশ্যই। অনেক ভুল করেছিলাম, সে গুলো যদি আবার শুধরে নিতে পারি।
20:ভালোবাসা ও ভালোবাসার মানুষ : সে ছিল , আছে এবং থাকবেও চিরটাকাল ।
21:স্কুল বন্ধু নাকি কলেজ ? : অবশ্যই স্কুল । সময়ের সাথে সাথে অনেক নতুন বন্ধু যোগ হয়েছে।
22: ঘোরার ইচ্ছা : নিজের দেশ টাই দেখা হল না।
23:ধর্ম : মানুষকে ভালোবাসা
24:ঘৃণাঃ টিকি এবং দাড়ি ধারী সেই দো পেয়ে গুলোকে যারা ধর্মের নামে ঘৃণা ছড়ায়।
25: প্রিয় পোশাক : পাজামা - পাঞ্জাবি
26: চেষ্টা : যা এখনো পারি নি, একজন মানুষ হয়ে বাঁচা।
27: শেষ ইচ্ছা: মঞ্চে অভিনয় করতে করতে জীবনের উইংসে ঢুকে যাওয়া! No Curtain Call.
যদি ইচ্ছা হয় তাহলে নিজেদের মত করে লিখুন এবং সকলের সাথে নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিন।

কুর্ণিশ

করোনা যুদ্ধের সৈনিক দের ফুল ছড়িয়ে কুর্ণিশ সেনার
প্রবাসী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে ট্রেন ভাড়া চাইল রেল!
এই দুটোই সংবাদ।
তাই বলিঃ
ওই শ্রমিকরাই কিন্তু সেনারা এবং করোনা যুদ্ধের সৈনিক রা যে বাড়িতে থাকেন সেটা তৈরি করেন
ওরা যে টুথপেস্টে দাঁত মাজেন -
যে বাসনে খাবার খান -
যে ঘড়িটায় সময় দেখেন -
যে গাড়িটায় চড়ে কাজের জায়গায় যান -
যে ট্যাঙ্ক - রাইফেল দিয়ে যুদ্ধ করেন -
যে প্লেন টায় উড়ে গিয়ে ফুল ফেললেন (তার প্রতিটা নাট - বল্টু-
যে ইউনিফর্ম পরে আছেন তার বোতাম টা পর্যন্ত
প্যান্টের জিপটাও -
ওই রকম ই কোন শ্রমিকের শ্রমে তৈরি
ওরা চিরকাল ধরে থাকে হাল
রাজচ্ছত্র ভেঙে পড়ে
রণ ডঙ্কা শব্দ নাহি তোলে
স্লোগান যত উচ্চারিত রাজার প্রশস্তি গেয়ে
শব্দ গুলি অর্থ তার ভোলে
নগরে - প্রান্তরে একমাত্র ওরাই কাজ করে
তাই রাষ্ট্রের আঘাত নামে ওদেরই পরে
সহজ বধ্য ওরা
ওরা একতা হীন
ধর্ম নামক এক নির্মম বাঁধনে বাঁধা
কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের পোষা ---
ওরা কাজ করে
না একটা ফুলও প্রাপ্য নয় ওদের
তাজ মহল অথবা কুতুব মিনারের পাথরে
কোনারক অথবা অজন্তা - খাজুরাহোর প্রাকারে
ইতিহাস লিখেছে কি ওদের নাম?
দিল্লীর অথবা জয়পুরের যন্তর মন্তরে,
অশোকের ওই শিলা প্রস্তরে
জাতীয় প্রতীকের চার সিংহের উপরে
কেউ কি লিখে রেখেছে
স্রষ্টার নাম?
কে করেছিল সৃষ্টি তার?
কৃতিত্ব শুধুই রাজার!
শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্ন শেষ পরে
ওরা কাজ করে
তাই আজও হাততালি - প্রদীপ - ফুল
কিছুই নয়
ওদের তরে
ওরা লায়াবিলিটি আজ
বিনা পয়সায় ট্রেন যাত্রা নয় ওদের তরে।
ওরা কাজ করে

করোনা যুদ্ধের সৈনিক এবং তাঁদের সম্মান জানানো সেনাবাহিনীকে সম্মান জানিয়ে
ভারতের সেনাবাহিনীকে যারা এই অসামান্য কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁদের সম্মান জানিয়ে
ভারতের সংবিধান মেনে চলা এক সামান্য নাগরিকের অভিনন্দন বার্তা।
শ্রীতোষ ০৩/০৫/২০২০
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জ্বালা

বন্ধু আর যে লিখিতে পারি না
বড় বিষ জ্বালা এই বুকে
দেখিয়া শুনিয়া খেপিতে চাই
যাই চাই তাহা আসে না কো মোর মুখে
শুধু বলে যাই
যারা দিতে পারে না ওই শ্রমিকের মুখে তুলে
একটি গ্রাস
ওই শ্রমিকের বুকের জ্বালায় যেন লেখা হয়
তাদেরই সর্বনাশ!

স্মরণে ও নমনে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম

14 March, 2020

দেশপ্রেমিক ও সীমান্ত প্রহরী

দেশপ্রেমিক বক্তব্যঃ
তুমি চাও যখন
খাদ্য – বস্ত্র – বাসস্থান
আমি বলি
“হাতে নাও অস্ত্র
দেশের সীমান্তে কর অবস্থান।“

তোমাকে আমি বলতে শেখাই
(আমার নীতির বিরুদ্ধে যারা
তাদের প্রতি)
“সীমান্তে দাঁড়িয়ে আমি
তাই তোমরা নাগরিক সমাজের
কথা বল"!!!
আমি তোমাকে কখনও
বলতে শেখাব না
“সীমান্তে দাঁড়িয়ে আমি
তাই তোমরা আমার দেশকে
বেচে ফেল।
আমাদের নেই কোন ধর্ম
নেই কোন হিন্দু – মুসলমান।
সীমান্তে দাঁড়িয়ে আমি
তোমাকে দেশ বেচার অধিকার দিলাম”।

উত্তর আসেঃ
আমি সীমান্ত প্রহরী ছিলাম
আমার অস্ত্র তুলে
আমি আমার দেশের নারীর
সীমন্তের সিঁদুর রক্ষা করেছিলাম
অথবা তাকে বেওয়া হতে বাঁচিয়েছিলাম
তার বদলে আমি কি পেলাম
দেশের ভিতরে,
তোমার সৃষ্টি করা উত্তেজনায়
অজস্র সীমন্তের সিঁদুর গেল মুছে
অজস্র রমণী বেওয়া হল
অজস্র সন্তান তার বাবা অথবা আব্বাকে হারাল
আমি নীরবে দেখলাম।
হয়তো আমার স্ত্রীর সীমন্ত আজ খালি
আমার স্ত্রী ও আজ বেওয়া
তোমাদের তৈরি করা
রক্তের হোরি তে!

প্রতিটি দেশের আমরা
অস্ত্র তুলে ধরি,
অন্য দেশের
আমাদের দিকে,
তোমাদের কথায় নেচে।
আজ আমার দেশের এক আমি বলছি
সামনে আসছে সময়
যেদিন প্রতিটি দেশের আমরা
হোলি খেলব কারণ,
সেদিন আমরা আমাদের রাইফেল
তুলে নেব – ট্রিগারে থাকবে আঙুল
লক্ষ্য হবে স্থির।

আমাদের একের অন্যের দিকে নয়
তোমরা যারা আমাদের রক্তে দোল খেল
তোমরা যারা ভিন্ন ভিন্ন নামে,
ভিন্ন নামে গোটা পৃথিবী জুড়ে
আমাদের লুট কর,
আমাদের স্ত্রীদের সীমন্তের সিঁদুর মুছে দাও
অথবা বেওয়া বানাও
সেই তোমাদের বুকের দিকে।
লুটেরার দল
আসছে সে দিন
সব দেশের সৈনিকের নামে
আমি বললাম।
শ্রীতোষ ০৯/০৩/২০২০

03 March, 2020

আমি দেশপ্রেমী হব

চমকে উঠবেন না বন্ধুরা
এতদিন আমি মানুষ ছিলাম
এবার আমি দেশপ্রেমী হব
আমি ত্যাগের গেরুয়া পোশাক গায়ে পড়ব
আমি মুসলিম দের ঘৃণা করব
আমি পাকিস্থানে ভিসা হাতে নিয়ে
সব মুসলিমদের পাকিস্থানে পাঠিয়ে দেব
আমি দেশ প্রেমী হব।

তারপর আমি এক হিন্দু বামুন হব
পদবী বন্দ্যোপাধ্যায়
ফলে ব্রহ্ম জ্ঞান না থাকলেও
ব্রাহ্মণ হতে বাধা নেই কোন
দেশপ্রেমিক ভারতে।
আমি এক হিন্দু বামুন হব
সেদিন আমার পায়ে পদানত ঐ
ঘোষ গোয়ালার দল
আমার পায়ে পদানত বোস কায়স্থ
আমি সমাজ শ্রেষ্ঠ বামুন!
সেদিন আমি বলব
আমার কথা না শুনলে
ঘোষ কে গুলি করব!
সেদিন বাঙালী বামুন
ঘোষের মেয়েকে তার ফুল শয্যার রাত্রে ডেকে নেবে
নথ ভাঙ্গানীর জন্য!
ঘোষের জামাই প্রতিবাদ করবে?
ঘোষ কি বলবে কোন কথা
যদি বলে
বাঙালী বামুনের হাতা - পাতারা বলবে
গুলি মার শালাকে।
ওরে দেশ প্রেমিক বাঙালীর দল
কেন আমার বয়স আজ ৫০
আমার তো এখনই গুলি করতে ইচ্ছা হচ্ছে তোদের
তোরা যারা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়
অথচ ঘরে আছে কুমারী মেয়ে অথবা বোন
আন না হিন্দু ভারত
(হিন্দু শব্দের অর্থ না জানা তোদের ভারত)
আমি লুটে পুটে খেতে তৈরি
তোদের ঘরের
অনাঘ্রাতা কুমারী কন্যার যৌবন
রাতের অন্ধকারে!
(যে তোদের ছায়া মাড়ালে পাপ হয়
উচ্চ বর্ণের ভারতের - দিনের বেলায়)
মুসলমান হীন ভারত উন্মুক্ত করুক
মানুক চতুর্বর্ণ
নিজের মা - বোনকে উন্মুক্ত করুক
উচ্চ বর্ণের ভোগের অপেক্ষায়
এক বামুন আমি
আমার জিভ উন্মুক্ত গেরুয়া লালসায়
এক বাঙালী হয়ে থাকব কি অপেক্ষায়
কোন এক দ্বেষ প্রেমিক বাঙালীর উত্তরের অপেক্ষায়
শ্রীতোষ ০৩/০৩/২০২০

02 March, 2020

পেমা - একটি সিনেমার নাম

সিকিমের প্রথম ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হয়ে গেল গত ২৮/০২/২০২০ থেকে ০১/০৩/২০২০ পর্যন্ত। গতকাল বেলা তিনটের সময় ছিল "মিতিন মাসি"। আগে একবার দেখা, তবুও দ্বিতীয় বার দেখতে গেছিলাম কিন্তু তা দেখতে গিয়ে আর একটি সিনেমা দেখার সৌভাগ্য হল, তার কথাই লিখছি।

ছবির শুরু হচ্ছে এক বৌদ্ধ পুরোহিতের জবানিতে। তাঁকে ডাকা হয়েছে কোন এক জনের শেষ কৃত্যের সময় উপস্থিত থাকার জন্য। পথ চলতে চলতে তুলে ধরছেন তাঁর জীবনের কথা।

এক সময় তিনি অন্যদের মতই সংসারী ছিলেন। নিজের স্ত্রী কে খুব ভালবাসতেন - দুজনের ছিল ভালোবাসার সংসার। একদিন বাইরে থেকে এসে স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন পুঁতির মালা, স্ত্রী র মুখের হাসি দেখে মনে হয়েছিল নব রত্নের মালা তাঁর জন্য নিয়ে এসেছে কেউ। আর এক দিন তিনি ছবি আঁকছিলেন, স্ত্রী নিয়ে এলেন জলখাবার। হঠাৎ করে তাঁর দিকে চেয়ে তাঁর স্ত্রী প্রশ্ন করলেন
"আমি যদি আগে মারা যাই, তুমি সেই সময় আমার পাশে থাকবে তো?" উনি কোন উত্তর দেন নি, শুধু পরম ভালোবাসায় দুটো হাতে চেপে ধরেছিলেন স্ত্রীর হাত। আর এক দিন তিনি বাড়ি ফিরে স্ত্রীর খোঁজ করছেন, ঘরের দরজা বন্ধ। দু এক বার ধাক্কা দেওয়ার পরে দরজা খুললেন স্ত্রী, বললেন "শরীর ভালো লাগছিল না, তাই শুয়ে ছিলেন"। তাঁর মনে সন্দেহ, নিশ্চয় ঘরে ছিল অন্য কেউ। প্রচণ্ড রাগে তিনি তাঁকে বললেন, "তুমি চলে যাও, আর যেন তোমাকে না দেখি"। অভিমানে স্ত্রী তুলে নিলেন ঘরে থাকা নিজের ছবিটি - বললেন "তুমি আর আমায় দেখবে না কোনদিন"।


এরপর আমরা দেখি নিজের ছবিটি বুকে চেপে ধরে স্ত্রী দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক পাহাড়ি নদীর ধারে। ওদিকে স্বামী অপেক্ষা করে রয়েছেন, নিশ্চয় অভিমান কমে গেলে মনের মানুষ ফিরবে তার ঘরে। সময় কাটে, অস্থিরতা বাড়ে, তিনি ছুটে যান সেই নদীর ধারে, দেখতে পান পাথরের উপরে পড়ে আছে, সেই মালাটি। পাথরের উপর লুটিয়ে পরে মালাটি বুকে চেপে স্ত্রীর নাম ধরে চিৎকার ওঠেন তিনি। ঘর থাকে ঘরের মত পড়ে, তিনি ও ঘর ছাড়া মনের মানুষের খোঁজে, তাঁকে ফিরিয়ে আনতে।

একদিন চলে যান এক মনাস্ট্রিতে - শরণ নেন প্রভু বুদ্ধের কিন্তু প্রতি দিনের কাজের ফাঁকে একটি কাজে ছেদ পড়ত না কোন দিন - দিনের শুরুতে স্ত্রীর মঙ্গল কামনায় (নাকি ভালোবাসায়) একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া তে।

তিনি পৌঁছে গেছেন সেই বাড়িতে যেখান থেকে ডাক এসেছে তাঁর। জিজ্ঞাসা করেন "কে মারা গেছেন?" উত্তরে তাকে রাখা একটি ছবি দেখানো হয় তাঁকে। তাকিয়ে দেখেন তাকের উপরে রাখা সাদা - কালো ছবিটি তাঁর স্ত্রী পেমার। তিনি ভাবেন "যেদিন জ্বালানো হল না সে প্রদীপ, সে দিন ই নিভল তোমার জীবন প্রদীপ!" পোশাকের ভিতর থেকে বের করেন সেই মালাটি - রেখে দেন স্ত্রীর ছবির সামনে।

ছবি শেষ হয়। হ্যাঁ, নাম লিখতে ভুলে গেছি, ছবিটির নাম

"পেমা"

সাত মিনিটের ছবি - নেপালী ভাষায়

এ ছবিটি এক আদর্শ ছোট গল্প - "শেষ হয়েও যা হয় না শেষ"। ধন্যবাদ পরিচালককে সংযম বজায় রাখার জন্য কারণ ঐ মালা রেখে দেওয়ার দৃশ্য টিই ছিল ছবির শেষ দৃশ্য।

প্রসঙ্গতঃ লেখাটি লেখার সময় বাধ্য হয়ে নিজের মত করে ভাষা ব্যবহার করতে হয়েছে, এ জন্য রস গ্রহণে বাধা সৃষ্টি হবেই। আমি ক্ষমা প্রার্থী।

শেষে বলি, অনেক গল্প দেখেছি সিনেমার পর্দায় তার মধ্যে এ গল্পটি - এ ছবিটি অবশ্যই একটি স্থান নিয়ে থাকবে।

25 February, 2020

চরিত্রহীন

খবরের কাগজ টা বাঁধিয়ে রাখতে হবে
পোড়া দুটো শরীরের ছবি দিয়ে
এ কাগজ দস্তাবেজ।

যখনই কেউ বলবে চরিত্রহীন সমাজের কথা
দেখিয়ে দিতে হবে
চরিত্রহীন হলে পুড়িয়ে মারার অধিকার জন্মায়
এভাবে
এই ভাবে
এই ভাবেই!


আজ কেউ কোন প্রশ্ন কোর না
কারণ আমি পড়েছি
আমি দেখেছি এক দো পেয়ের সংলাপ
(দুঃখিত
কমেন্ট করলেও স্ক্রিন শট নিই নি
কারণ
কারণ হয়তো বা দো পেয়ে টা মানুষ হয়ে যেত
প্রচার পেয়ে যেত)
আসলে তো আমাদের সকলের মধ্যে আছে
ওই দো পেয়ে টা লুকিয়ে।

মেয়েদের চরিত্র হীন বলতে বড় ভালো লাগে
আসলে আমরা জানি না
অথবা জানলেও ভুলে যেতে চাই
প্রতিটা চরিত্রহীন মহিলার পিছনে
লুকিয়ে আছে এক ভদ্র পুরুষ!

রুদ্র বড় ভদ্র
তসলিমা চরিত্রহীন
অম্বালিকা চরিত্র হীনা
ভীষ্ম বীর্য শ্রেষ্ঠ!

দশরথ চরিত্র বান
সূর্পণখা চরিত্র হীন
দশরথের চার পুত্র কার পুত্র
প্রশ্ন থাকে রামায়ণে লীন!

তাই শূর্পণখার নাক নেই - নেই কান
আজকের পোড়া শরীর দুটোর মতই
লক্ষণ নাক - কান কেটে ছেড়ে দিয়েছিল
আজকের লক্ষণ - সাদ্দাম!

সেদিনের লক্ষণ - আর আজকের সাদ্দাম
সেদিন নাক - কান কেটে ছেড়ে দিয়েছিল
আজ পুড়িয়ে মেরেছে
সেদিন সূর্পণখা চরিত্র হীন
(তার নাক কান কাটা ছিল বড় দরকার)
আজকের মা - মেয়ে চরিত্রহীন
তাদের পুড়িয়ে মারাও বড় দরকার।

এই না হলে পুরুষকার!
রামায়ণ হয়ে বিশ্ব বংগ পুরুস্কার

মনে পড়ে যায় কেন জানি
দু দু বার ধর্ষিত হয়ে পুড়ে মরা
ওই ট্যাক্সি ড্রাইভারের মেয়েটার চিৎকার
পুলিশ লুঠ করতে চেয়েছিল লাশ তার!

চরিত্রহীন হলে পুড়িয়ে মারার অধিকার
জন্মায় কি আপনার?

ওই মেয়েটার পোড়া শরীর বলে
সুজেটের ধর্ষিত শরীর বলে
আপনি চরিত্রহীন।
ওই শরীর গুলো বলছে
তোমরা চরিত্র হীন,
কারা পুড়িয়ে মারবে
তোমাদের এই বার!

আমি এক অসময়ের লেখক
লিখছি আমি
আমরা চরিত্র হীন
কে পুড়িয়ে মারবে আমাদের এই বার?
কোন চরিত্র যুক্ত মানুষের আছে এই অধিকার?
শ্রীতোষ ২৪/০২/২০২০