11 September, 2018

যাই হোক, প্রলয় বাবুর নির্দেশ মেনে পৌঁছে গেলাম নির্দিষ্ট দোকানের সামনে কিন্ত একটা কথা মনে হচ্ছিল যে তার আগের দিন প্রলয় বাবুর গলার সাথে আজকের গলার বেশ অমিল দোকানে ঢুকলাম, প্রলয় বাবু পরিচয় করিয়ে দিলেন এবার জিনিস পছন্দ করার পালা একটা ১৭০ লিটারের ফ্রিজ (গোদরেজ), একটা ৩২ ইঞ্চি এল ডি (প্যানোরামা) একটি মিক্সি (ফিলিপস্‌) এবং একটি এমারজেন্সি লাইট (এভারেডি) নেওয়া হল আমি অবাক হলাম দাম শুনে ৩২ ইঞ্চি এল ডি টি ভির দাম মাত্র ১৩,০০০ টাকা সব মিলিয়ে ৩১ হাজারের একটু বেশী বিল হল, পেমেন্ট করলাম মাত্র ১৫,০০০ বাকিটা আমার সময় মত দিলেই চলবে একটি টেবিল দুটি চেয়ারের দরকার ছিল, ওনার সাথেই চললাম আর এক দোকানে সেখান থেকে নেওয়া হল টেবিল চেয়ার এবং বলা বাহুল্য যথেষ্ট কম দামে যাওয়ার পথে শুনলাম ওনার এক নিকট আত্মীয় মারা গেছেন ভাবুন, সেই অবস্থায় তিনি এমন একজন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন যার নাম পর্যন্ত তিনি কিছুদিন আগে শোনেন নি এবং দেখা হয়েছে মাত্র একদিন আগে কি দিয়ে ব্যাখা করব এই দায়িত্ববোধ কে? জিজ্ঞাসা করুন সব্বাই বলবে যে তারা কেউ ভগবানকে দেখেনি আমি বলি, আমি দেখেছি জীবনের পথে চলতে চলতে এই রকম অনেক ভগবান কে আমি দেখেছিআমি দেখেছি তাঁকে বোলপুরের রাঙ্গামাটির পথে এক মুখ দাড়ি নিয়ে চলতে, আমি দেখেছি কাস্টমস্হাউসের বারান্দায়, দেখেছি, গভীর রাতে আমার বাড়িতে, ওয়েলকিনের ভিতরে এমনকি এই ভারচুয়াল দুনিয়াতেও আমি ভগবানকে দেখেছিআরও দেখছি, আরও দেখব হয়তো পাঠকের মনে হতে পারে আমার আবেগ কিন্ত বলুন তো মানুষ ভগবানের কাছে কি চায়? সে চায় তার বিপদের দিনে ভগবান যেন তার পাশে দাঁড়ান, তাকে সাহায্য করেন তাহলে আমার বিপদের দিনে যে মানুষরা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত, তাঁদের আমি ভগবান ছাড়া অন্য কিছু বলে তো ভাবতে পারি কি?

সব কিছু তো হলএবার দরকার ছিল একটা আলমারির কোন এক সুত্র মারফত জুটে গেল তাও

এরপর ৫ম পর্বে

অলমিতি

পরবাসী জীবনের কথকতা ৪র্থ পর্ব।


পরবাসী জীবনের কথকতা  ৪র্থ পর্ব

আগের লেখা শেষ করেছিলাম এই বলে যে দেরী করে বার হওয়া সত্ত্বেও আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এম জি মার্গে পৌঁছাতে পেরেছিলাম জীবনের এক অত্যাশ্চর্য অভিজ্ঞতা জীবনে এর আগে এমন অভিজ্ঞতা আর হয় নি বাড়ি থেকে বার হয়ে রাস্তায় উঠে আমরা শেয়ার ট্যাক্সির জন্য না দাঁড়িয়ে হাঁটা শুরু করেছিলাম যাতে যতটা সম্ভব বেশী পথ এগিয়ে থাকা যায় একটু চলার পরেই পিছনে একটা গাড়ির শব্দ ঘাড় ঘুরিয়ে দুজনেই হতাশ, একটি প্রাইভেট গাড়ি আবার চলা শুরু কিন্ত তা মাত্রই কয়েক মুহূর্তের জন্য আমাদের অবাক করে দিয়ে গাড়িটা আমাদের পাশেই থামল এবং ভিতরের সৌম্য দর্শন বয়স্ক মানুষ টি জিজ্ঞাসা করলেনআমরা কোথায় যাচ্ছি” , এম জি মার্গের কথা শুনেই নিজে দরজা খুলে বললেনউঠে আসুন অবাক হয়েছিলাম ঠিকই কিন্ত তখন পৌঁছানোর তাড়া থাকায় উঠে বসতেও দ্বিধা বোধ করি নি গাড়ি চলতে থাকলচলতে থাকল জীবনের কথকতা কথায় কথায় জানতে পারলাম ওনার নাম এম কে প্রধান, শিক্ষক ছিলেন এবং কোন একটি দপ্তরের ডিরেক্টর পদ থেকে অবসর নিয়ে এখন এক্সটেনশনে আছেন আমার জিজ্ঞাসু চোখের দৃষ্টি দেখে নিজেই বললেন, নাতিনাতনিদের দেখার, ওদের সাথে খেলা করার এক্সটেনশন বলেই খোলা কণ্ঠের হাসি আমার পরিচয় এবং বর্তমান নিবাস স্থল শুনে বললেন উনি আমার প্রতিবেশী এবং মিস্টার সিলালের সাথে মাঝে মাঝে তাস খেলতে আসেন এখন চলেছেন নাতিকে স্কুল থেকে আনতে আমাদের নামিয়ে দিয়ে উনি চলে গেলেন ওনার পথে সত্যিই ভাবি জীবনে হয়ত কিছু পাই নি কিন্ত তার চেয়ে পেয়েছি অনেকঅনেক বেশী তথা কথিত কিছু আত্মীয়ের নোংরা মনের চেয়ে এই সব মানুষের ভালোবাসা জীবনকে আরও ভালোভাবে গড়ে তুলতে শেখায় এবং শিক্ষা পাওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ এই বদলীর চাকরীর সাথে