10 July, 2015

আমরা যারা নিজেদের মানুষ বলি

আমরা যারা নিজেদের মানুষ বলি
খুব কি প্রয়োজন জাত বংশ নামে নিজের
পরিচয় দেওয়ার ?
আমি ধর্ম বললাম না কারণ
ধর্ম মানে ধারণ করা
অথচ ধর্মের নামে মানুষ মানুষের রক্ত ঝরায়
হিন্দু মুসলিম ক্রিশ্চান  
আবার হিন্দুদের মধ্যে বামুন কায়স্থ বৈশ্য
কায়স্থ গোয়ালা আছে
আবার খাঁটি কায়স্থ অথবা বামুন আছে
ভেদাভেদ আজও আছে
শিয়া সুন্নি অথবা ক্যাথলিক প্রটেস্টান্ট দের মত
এই ভারতেই দক্ষিণের বামুন
বাংলার বামুন কে ঘৃণা করে
করে উত্তর প্রদেশীয় বামুন
বলে বাংলার বামুন মছলিখোর !
গেরুয়া পোশাকে যারা অন্য ধর্মকে দেয় গালি
আজও তাদের গ্রামে শূদ্ররা জল পারে না নিতে
গ্রামের কুয়া থেকে হিন্দু তারা 
অথচ সে শূদ্র রমণীর প্রতি গেরুয়ার জন্মসিদ্ধ অধিকার
রাতের অন্ধকারে
দিনের বেলা যে রমণীর ছায়া মাড়ালে পাপ হয়
রাতের অন্ধকারে নিজ লিঙ্গের ছায়া পড়ে 
অচ্ছুত রমণীর যোনির গভীর অন্ধকারে
লিঙ্গ নাচে উল্লাসে আনন্দে !
না এসব কথা বললে চলবে না
ভারতের সনাতন ঐতিহ্য কে আঘাত করে 
এই লেখার প্রতিটি শব্দ !
তবুও বাস্তব এ লেখা।

সাথী
তোমাদের সাথে আমি প্রস্তত 
তোমাদের লেখনী নিয়ে হাতে
আরও অভিজিৎ কিংবা ওয়াশিকুরের
স্বপ্নে মানুষকে জাগাতে 
তোমাদের মত মালালার সাথী হয়ে !
আমি অ্যানা ফ্রাঙ্কের সেই ডায়েরি হতে চাই
আমি লেলিনগ্রাদের সেই তানিয়াহতে চাই
আমি হবিবুর রহমান হতে চাই
যিনি বলেছিলেন 
আমি সৈনিক আমাকে আদেশ মেনে চলতে হয়

আমি এক অগ্নি গিরির পা ছুঁয়ে যাওয়া 
এক শান্ত নদী হতে চাই
যে তৃষ্ণার্ত বিদ্রোহীকে জল দেবে
আমি সেই শান্ত নদী হতে চাই।
তবুও আগুন আমি শান্ত নদীর জলে
একবারের জন্যও বিষাক্ত বিষ হতে চাই
জানি জানোয়ার গুলোর রক্তে স্নান করে
পৃথিবী পবিত্র হবে শ্রীতোষ ১০/০৬/২০১৫

09 June, 2015

ধর্ষণ


দূষণ ছড়িয়েছে এ পৃথিবীতে আজ
দূষণ এ বঙ্গে
নয় সে প্রকৃতির দূষণ
দূষণ আজ মন সঙ্গে
এ দূষণ মননের - এ দূষণ ভাবনার
এ দূষণ সময়কে হারায়
উলঙ্গ সভ্যতার অঙ্গে।।
এ দূষণ রামের শূদ্র হত্যার উত্তরাধিকার,
এ দূষণ শশাঙ্কের বিষ্ণু মন্দির ধ্বংসের উত্তরাধিকার
এ দূষণ কালা পাহাড়ি সভ্যতার উত্তরাধিকার
এ দূষণ প্রতিবাদী মানুষকে মুছে দেওয়ার উত্তরাধিকার !
এ দূষণে বামিয়ান বুদ্ধ নিহত হয়
এ দূষণে অ্যাজটেক সভ্যতা নিহত হয়েছিল
এ দূষণে মহেঞ্জদড়ো অথবা হরপ্পা নিষ্পেষিত হয়েছিল
এ দূষণে সভ্যতা হয় নিহত
তাই সে দূষণে নারীর ইজ্জতের দাম করে নিশ্চয়
এক নারী -
মা গো !
তোমার চেতনা সেই দূষণের ঐতিহ্য বাহী
যে দূষণ ইহুদী জাতি গোষ্ঠী আর
সোভিয়েত রাশিয়ান জন জাতিকে মুছে দিতে চেয়েছিল
পৃথিবী থেকে
হিটলারের সেই দর্শন তোমাদের কাছে
নতুন কিছু কি ?
রাম ও তো শূদ্র হত্যা করেছিল
যদি রাম জন্মভুমি ও রাম হয় সত্য
রাম ও তো অনার্য হত্যা করেছিল।
নতুন কিছু কি ?
তাই জানি শবর জন্ম নেয় যুগে যুগে
তার কণ্ঠে জাগে প্রতিবাদ
কলম হবে না স্তব্ধ কোন দিন
কলমেই লেখা আছে
বিপ্লবী ইতিহাস
কলমেই লেখা হয় মানুষের ইতিহাস। শ্রীতোষ ০৯/০৬/২০১৫

08 June, 2015

প্রতিবাদ

নির্ভয়ার নগ্ন শরীর রাস্তায় থাকে পরে

অ্যানা ফ্রাঙ্কের ডায়েরিটা হাতে নিয়ে
অভিজিৎ আর ওয়াসিকুরের কোপান শরীরের পাশে
ওরা বাঁচতে চেয়েছিল – মানুষের মাঝে
যারা অন্ধকার বাথরুমে দামিনীর মুখ ধরে চেপে
সুজেট কে ভালোবাসে জোর করে
তারাই তো গুলি করেছিল মালালা কে
চেন না তাদের ?
তাঁরা অপরাজিতার পা চিরে
বদায়ুঁন বা চক্রাতা হয়ে
রাণাঘাটের মাদারের শরীরে নিজের কামনা মেটায়।

এরা – হ্যাঁ এরাই অনিতা দেওয়ান কে উলঙ্গ করেছিল বানতলায়
ধানতলায় নারীর সম্ভ্রম নিয়ে করেছিল খেলা
কাশীপুর – বরানগর কিংবা যাদবপুরে
এদেরই জন্য মা – বোনেরা লাল ব্লাউজ পরত না !
এ সব বড় সত্য কথা।

এরা আজকের নয় – চিরকালের
বিজয়ের চিরকালীন আনন্দ খুঁজে নেয়
রমণী শরীরে
বিজয়ী ভোগ্যা নারী –
বলা আছে মহাকাব্যে !
পালন করে আজও সব সেনাদল !
নিজের অথবা পরদেশে
এক উদাহরণ তার
মনোরমা !

এদেরই এক অন্য রূপ
স ক্রে টি সে র হাতে তুলে দেয় হেমলক
ব্রুনো কে করে অন্ধ
গ্যালিলিও – !
জোয়ান কে  মারে পুড়িয়ে
হয়তো ভুল ব্রুনোর হাতে তুলে দিয়েছিল হেমলক
গ্যালিলিও কে করেছিল -----
আর স ক্রে টি স কে পুড়িয়ে মেরেছিল !

মাইদানেক – অসউইৎজ – ল্যুবলিনে
তাদের দেখতে পাই
দেখতে পাই
ওপেন হাইমার আর ট্রুমানের মাঝে
হিমলার আর আইখম্যানের মত এক ভাবে
চার্চিলের চেতনায়।

সুখের কথা  - সুখের কথা
সেদিন কোন মোমবাতি ছিল না মিছিল করার মত
গিরগিটিরা তাই মোমবাতি মিছিল করতে পারে নি
সুখের কথা সেদিন কোন ফেস বুক ছিল না
প্রতিবাদী লেখক কে কেউ ফেস বুক বিপ্লবী বলতে  পারে নি
সেদিন অত্যাচার ছিল
সেদিনও প্রতিবাদী ছিল
সুবিধাবাদীরা সে দিনও ছিল
তফাত একটাই
সেদিন এই চাটুকার গুলো লুকিয়ে থাকতে পারত
আর আজ তারা উন্মুক্ত !
চাটুকার চটি চেটে চলে
আর প্রতিবাদী করে প্রতিবাদ
কলমে অথবা রাস্তায় !
চাটুকারদের মনে রাখে না কেউ

প্রতিবাদী হয় ইতিহাস ! 

02 June, 2015

অনিতা দেওয়ান – বাণ তলায় আঘাতে আঘাতে নির্মম কামনার তাড়নায় 
যোনিতে টর্চ ঢোকানো হয়েছিল 
সেই সময়ে – হ্যাঁ সেই সময়ে কোন এক VDO CLUB – এ
দেবপ্রিয়ার মত বাচ্চাদের ভালোবাসার ছবি চলছিল
এক্কজম ড্রাইভার প্রতিবাদ করেছিল – আর 
সেই জন্য
ড্রাইভারের মাথাটাকে ফুটবল ভেবে লাথি মারা হয়েছিল
অনিতা দেওয়ানের যোনিতে যে বাবা টর্চ ঢুকিয়েছিল
তার মেয়ে বাবার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিল
কোন কথা বলতে পারেনি
যোনিতে টর্চ ঢোকানো মায়ের দিকে তাকিয়ে
একটা মানুষ কেঁদেছিল
নিজের প্রচার চায়নি সে মানুষ
তার ছেলের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া এক মানুষ
সেই মানুষ – এক বিপ্লবী মানুষ
আজও সেই মানুষ সংগঠন করে -
জীবনের পথে হাঁটে
কেউ জানো কি তাঁর নাম
(এই লেখায় একটি মানুষের নাম বলা হয়েছে - আমরা যারা মানুষ তারা খুঁজে নিই না সেই মানুষটিকে)
খোলা মনে সব লিখতে পারি কোথায় ?
সব মিছিলে হাঁটতে পারি কোথায় ?
সব গান তো গাইতে পারি না 
সব পথে তো চলতে পারি না
তবু চেষ্টা করে যাই
তবু স্বপ্ন দেখে যাই
একদিন নীল আকাশে উড়ব
আকাশটাকে ধরব
সাত ঘোড়ার ওই রথে চেপে
জীবনটাকে দেখব
এক বার আমি নিজের মত লিখব
সবার সাথে গাইব
এক মিছিলে হাঁটব
সবার সাথে বাঁচব। শ্রীতোষ ৩০/০৫/২০১৫
একটা করে রায়
বাড়ায় অনেক ব্যয়
কোষাগার টা ফাঁকা
তাতে কি রে বোকা
রাজ্য চালাতে হলে
আইন মানলে চলে ?
মানব না কো আইন
যতই লাগুক ফাইন
পয়সা দেব গচ্চা
আমরা দিদির বাচ্চা
দিদির কথা মানব
সুঃ কোর্টে যাইব
যদি সেখানেও হারি
মুখ হবে তো হাঁড়ি
লোকের পকেট কাটি
আমরা মায়ের মাটি।

06 April, 2015



একটা গল্প অথবা সত্যি ঘটনা

অনেক দিন আগে শোনা
একটা ছোট্ট গল্প কবিতায় বলে যাই
নতুন ভাবে।

একটা ছোট্ট ছেলে ছিল
খুব অল্প বয়সে যখন সে মা’র কোলে শুয়ে
হাত –পা ছুঁড়ছে
বাবা চলে যায় সেই চির শান্তির দেশে।
মায়ের ভালোবাসায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে
ছোট্ট খোকন বড় হয়ে ওঠে।
মা ভাবে –
বাবার অভাব মিটিয়ে দেব আমি
আমি মা।
স্নেহছায়া ছড়িয়ে আগলে রাখল সন্তানকে
জীবনের যত দুঃখতাপ থেকে।
তাঁর প্রতিটি চাওয়া কর্তব্য মায়ের কাছে
ছোট অথবা বড়
হয়তো সামর্থ্য নেই তবুও –
ছেলেকে বাবার অভাব বুঝতে দেবে না কোনমতেই

পাওয়ার আনন্দে অভ্যস্ত তার
দাবি চলে বেড়ে
আজকে নতুন জুতোর ছবি দেখেছি
কাগজের বিজ্ঞাপনে আর তাঁর সাথে
উঁচু ওই বাজারটাতে নতুন মোবাইল
পাওয়া যাচ্ছে সস্তায়
এখুনি চাই তা।
বন্ধুদের হাতে – পায়ে যা আছে
আমারও চাই তা
স্বামীর রেখে যাওয়া টাকা শেষ প্রায়
মা ভাবে – কি করা যায় ?

মা – মা – মা
ছেলে আসে
কি বাবা – জুতোটা চাই ?
না গো মা
রেজাল্ট বেরিয়েছে
কোন ডিভিশন পেলি বাবা ?
দূর ! তুমি কিস্যু জানো না
এখন তো গ্রেড – অনেক উঁচু গ্রেড পেয়েছি
শোন - ওই সব গ্র্যাজুয়েট হয়ে হবে টা কি
ম্যানেজমেন্ট পড়ব –
কাছাকাছির মধ্যে আছে একটা
মাত্র লাখ দুয়েক লাগবে
হোস্টেলে থাকতে গেলে আরও ৪ – ৫
পড়ার খরচ আলাদা।

কিন্ত মা
আমি তো তোমায় ছেড়ে থাকতে পারি না
তাই ওই নতুন মডেলের যে বাইকটা এসেছে না বাজারে
কিনে দাও একটা –
কত আর দাম
লাখ খানেকের মধ্যে হয়ে যাবে
তেলের দাম তো কমছে এখন।
মাসে না হয় হাজার পাঁচেক দিও
চালিয়ে নেব ওতেই কোন রকমে,
কিন্ত বল তো মা –
বাড়ী থেকে যখন গমগমে আওয়াজে
রাস্তা কাঁপিয়ে চলবে গাড়ী – বলবে লোকে
মা বটে।

চার – পাঁচ বছরের তো মামলা
এক – দু বছর বাঙ্ক করলে ৬ – ৭
তুমি তো থাকবে ডার্লিং আমার সাথে।
বুঝলে মম্‌ সাত – আট বছর বাদে
তুমি হবে রাজরানী।

বাঁহাতে নতুন যৌবনকে বুকের কাছে জড়িয়ে
মা হাসে
এইটুকু চাওয়া মায়ের কাছে
আর কিছু চাইলি না
চাইলি না মায়ের আশীর্বাদ
গ্রেড পাওয়ার দিনে ?
তোকে দিয়েছি আমার প্রাণের কথা
তোর বাবা আর আমার দেখা স্বপ্ন মিলিয়ে
গড়ে তুলতে চেয়েছি তোকে।
তোর এইটুকু চাওয়া
পূর্ণ হোক – পূর্ণ হোক।
মা হাসে আর কাঁদে
কাঁদে আর হাসে !

এই গল্পের তো কোন শেষ নেই
প্রতিদিন এ’রকম কত গল্প লিখে চলে জীবন
কোন গল্প শেষ হয় বৃদ্ধাবাসে
কোন গল্পের পরিণতি হয়
বুল শিট বুড়ির গালি খাওয়ায়
খুব কম গল্প শেষ হয়
ভালোবাসা ঘেরা এক ভালো বাসায়।
এ গল্পের শেষ কোথায় আমি জানি না
আপনাদের কল্পনায় এ গল্প মেলুক ডানা।