24 December, 2015

কি করে

আমি একসময়ে ভাবতাম লিখব কি করে
মানুষের মনের কথা কলমে আমার
আনব কি করে ?
কারণ
যা ভাবি
ভাবার জন্য তো পড়তে হয় একটু
দেখি সব কথা লিখে গেছেন ওঁরা
হরপ্পা – মহেঞ্জোদরো হয়ে
আরাকু গুহা গহ্বর থেকে জব্বল পুর বেয়ে
ভারতের ইতিহাস বয়ে
গুহাচিত্রে অথবা প্রস্তর কাজে
অজন্তা - ইলোরা আর খাজুরাহো ছুঁয়ে
সব কিছু বলে গেছেন মানুষের শিল্পী !
মহাভারতের এক সন্তান আমি
যে ভারত বলেছে আমার মধ্যে সে
“সোহং” – কত বিশাল ধারণা
যে দিয়েছে “আত্মন” এর ধারণা
কে তোমার আত্মা বা ওই আত্মন
ধর্মের সুজন্মা সন্তান
একটু বলুন না কে আত্মা
অথবা আত্মন
আমি এক মানুষ বলি –
ধর্মের সুজন্মা সন্তান আত্মা
কাজ আপনার
গীতা বলে
“আমি আত্মা আমাকে পারে না
মৃত্যু বিনাশ করতে,
অস্ত্র ছেদন করতে ব্যর্থ হয়
অগ্নি দগ্ধ করতে পারে না,
জল পারে না সিক্ত করতে
এবং শুষ্ক করতে পারে না বায়ু” |
আমি বিশ্বাসী আত্মায় !
আমায় গাল দিন আমার বামপন্থী বন্ধুরা
আমি হাসব আর তারপর
প্রশ্ন করি বন্ধু
তবে আত্মা কি
আত্মা মানুষের চিন্তন
সুকান্ত ছাই হয়ে গেছে চিতায়
তাঁর আত্মা জাগে এই শব্দ গুচ্ছে
“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আজ
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার”
নজরুলের হাড় আজ কবরেও নেই
গুঁড়ো হয়ে মিশে গেছে মাটিতে
তবু নজরুলের আত্মা বলে
“জাতের নামে বজ্জাতি আজ
জাত জালিয়াত (@Suman Pahari) রা খেলছে জুয়া”
রবি কবি তাঁর আত্মায় –
তাঁর চেতনায় আসা শব্দ লিখেছেন
প্রশ্ন করছেন
খোলা কাগজে
“আমার কবিতা জানি আমি
গেলেও বিচিত্র পথে হয় নাই সর্বত্র গামী”
তারপর কবি উত্তর দেন
যে আছে মাটির কাছাকাছি
সে কবির বানী লাগি কান পেতে আছি
লিখিত হয় ট্রামের চাকায় লেগে থাকা দেহাংশ নিয়ে
এক অসহায় কবির প্রশ্ন
“অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া”।
তাহলে আমি লিখব কোন শব্দ দিয়ে
মনের কোন অনুরণন তোমাকে চিন্তা করাবে
তোমাকে ভাবাবে –
সব শব্দ তো বলা হয়ে গেছে
সব কথা হয়ে গেছে শেষ
সব অক্ষর আঁচড় কেটে গেছে চিন্তায়
নতুন করে কি লিখব ?!
নতুন করে কি লিখব – তাই তো
দেখলাম চোখের সামনে
আজও মানুষ ভাবে দুটো রাতের মাঝে একটি দিন
আমি তো তা বিশ্বাস করি না
আমি জানি রবীন্দ্রনাথ – নজরুল – সুকান্ত
জীবনানন্দ হয়ে সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের পাশ থেকে
শঙ্খ ঘোষ আমায় বাস্তব দেখান
বিভুতি ভূষণ দেখান স্বপ্ন এবং
ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় আর দীপক চন্দ স্যার
আপনারা আমাকে সবসময় মনে করিয়ে দেন
দুটি দিনের মাঝে থাকে একটি রাত !
জীবন বাঁচে অন্ধকারে নয় আলোতে
আমি তাই আলোর কথা লিখি
লিখি আর বলি মনে মনে
"থোড়াসা রুমানি হো যায়ে"
আর লিখে চলি
বদজাতদের খিস্তি পাওয়ার
কিংবা খিস্তি খাওয়ার আনন্দে। শ্রীতোষ ২৪/১২/২০১৫

No comments:

Post a Comment