28 July, 2025

দুই মানুষ

 

হাওড়া – শিয়ালদা
শিয়ালদা – হাওড়া
বজবজ, বজবজ
এটাই এক সাধারণ শব্দ বন্ধ
কিছু মানুষ কে উদ্দেশ্য করে।
প্রতিদিন বেচেন আর কেনেন
একটা টিকিট নয়
ওনাদের জীবন।
মানুষের কেনা একটি টিকিটের কমিশন
ওঁদের বাড়ির কোন একটা মানুষের মুখে
একবাটি মুড়ি এনে দেয়।
মানুষ বিরক্ত হয়
কারণ কোন এক মানুষের একটু খানি দেরী
সেই মুড়িটাই হারিয়ে যায়
হয়তো তাঁর জীবন থেকে।
সাধারণ মানুষ বাসে চড়ে
একটু সময়ের দাম অনেক তাঁর কাছে
বাসের কন্ডাক্টর এবং ড্রাইভার
(সরকারী এবং বেসরকারি)
একজন প্যাসেঞ্জারের দাম ও
অনেকই তাঁরও কাছে।
দুজনেই রুটির জন্য যুদ্ধ করে।
আমি দেখি আর ভাবি
দুই জন শ্রমজীবী মানুষ
রুটির জন্য যুদ্ধে
কিভাবে একে অন্যের প্রতিপক্ষ হয়ে যায়!
প্রতিদিন –
শান্ত এবং ক্লান্ত মুহূর্তে
একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়ে যায়,
ভুলে যায়
তারা একই কারণে লড়ছে
দিনের শেষে
এক মুঠো ভাতের জন্য
এক টুকরো রুটির জন্য।
মানুষগুলো খিদেতে চিৎকার করে।
খিদেতে চিৎকার করে মানুষ।
এই আর কত ভরবি
যাদব পুর – গড়িয়া - হাতিবাগান - বারাসাত
আমতলা – কল্যাণী – স্টেশন গেট
শ্রীতোষ ২৮/০৭/২০২৫

21 July, 2025

TO, LAST OF THE MOHICANS

 

TO
LAST OF THE MOHICANS
তোমরা যদি পার
যদি আমার কথা একটু খানি মনে রাখো
শেষ অনুরোধ
তোমাদের প্রশংসার শব্দ গুলো সরিয়ে নাও
আমি মানুষের মাঝে বেঁচেছিলাম
আমি মানুষের মাঝে বাঁচব।
তিনি সেই ভাবেই ছিলেন।
তাঁকে কমরেড বলার যোগ্যতা আমার নেই
আজিজুল হক বেঁচে থাকুন
আমার মানুষ না হতে পাওয়া
অযোগ্য জীবনে
GOOD BYE
GOOD BYE
শ্রীতোষ ২১/০৭/২০২৫

15 July, 2025

DOWN THE MEMORY LANE

 

DOWN THE MEMORY LANE
আজ মন চলে যাচ্ছে আজ থেকে ২৯ বছর আগে – ১৫ই জুলাই, ১৯৯১। হ্যাঁ, আজ থেকে ২৯ বছর আগে এক ২১ শের কিশোর পা রেখেছিল গঙ্গা পারের ওই বাড়িটার ভিতরে, লোকে যাকে চেনে কাস্টমস্‌ হাউস বলে। সেদিন তার দু চোখে ছিল স্বপ্ন আর বুকের ভিতরে ছিল এক গর্ব – এক লড়াই জেতার গর্ব। সে যখন ওই বাড়িটার ভিতর পা রাখছে, তখন তার মনে পড়ে যাচ্ছিল ১৯৯০ সালের ২৭ শে অক্টোবরের সকালের কথা। হ্যাঁ, সেই দিন সকালে সেই ছেলেটি তার প্রেমিকার বাবার সামনে দৃপ্ত ঔদ্ধত্যে বলেছিল “এক বছরের মধ্যে আমি নিজের ক্ষমতায় সরকারী চাকরী জোগাড় করব এবং জোগাড় করব কোন অসৎ পথ অবলম্বন না করে বা কোন ব্যাকিং এর সাহায্য না নিয়ে”। তারপরের দিন গুলো কেটে গেছিল কেমন ভাবে – সকাল ৪ টেয় দিন শুরু হয়ে রাত ১১ – ১২ টায় শেষ হত দিন। না, একবারের জন্যও তার মনে হয় নি সে কোন রকম পরিশ্রম করছে, তার মনে হত সে মন দিয়ে নিজের কাজ করছে। এর মধ্যেও সে আড্ডা মেরেছে, সিনেমা দেখেছে, টিউশনি করেছে – একটি সেই বয়সী মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান যা যা করে, সব কিছু করেছে। আর করেছে চেষ্টা। এই চেষ্টার পিছনে শুধু ভালোবাসা ছিল কি? ছিল অবশ্যই কিন্তু তার সঙ্গে ছিল আরও কিছু শব্দ।
ছেলেটির বাবা সেন্ট্রাল এক্সাইজ দপ্তরে ইন্সপেক্টর পদে চাকরী করতেন। স্বাভাবিক ভাবেই অনেক মানুষের সাথে পরিচিতি। সেই পরিচিতি আরও বেড়েছিল কারণ মানুষটি ছিলেন আদ্যন্ত পরোপকারী। অফিসের সহকর্মী দের যে কোন বিপদে তিনি সদা হাজির। একদিন ছেলেটি শুনল তার মা তার বাবা কে বলছেনঃ
“তোমার তো এত জানাশোনা, দাও না ওকে কোন চাকরীতে ঢুকিয়ে”
বাবার উত্তরঃ
“আমাদের ছেলেকে চাকরীতে ঢুকিয়ে দিতে হবে না, সে চাকরী জোগাড় করে নেবে তার নিজের ক্ষমতায়। ওর সে যোগ্যতা আছে এবং ওর উপর আমার সে বিশ্বাস আছে”।
আজ এতদিন পরেও সেই শব্দগুলো আজও তার কানে বাজে।
নিজের প্রতিজ্ঞা আর তার উপর তার বাবার বিশ্বাস – এই দুইয়ের মর্যাদা রক্ষিত হয়েছিল সেইদিন। আরও মজার কথা, সে কাস্টমস্‌ হাউসে ঢুকেছিল তার বাবার হাত ধরেই – ওই একই দপ্তরে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক হয়ে। এস এস সি পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরী – অন্য যে কোন দপ্তরেই হতে পারত কিন্তু ঘটনার এক আশ্চর্য সমাপতনে সে হয়ে উঠল এক ফ্ল্যাগ বেয়ারার।
কবি লিখেছেন “তোমার পতাকা যারে দাও / তারে বহিবারে দাও শকতি”। সে জানে না তার শক্তি ছিল না কি নেই, শুধু এটা জানে তার বাবা সেই বিভাগের যে পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন, এই মুহূর্তে সে তার থেকে এক ধাপ উঁচু পদে বসে আছে।
আজ আরও একটা কথা ছেলেটির মনে পড়ে যাচ্ছে। দপ্তরে যোগ দেওয়ার কিছুদিন পরে একজন সিনিয়র অফিসার (ডেপুটি অফিস সুপারিন্টেনডেন্ট) তাকে বলেছিলেন
“আজ এত কাজের উৎসাহ, আমাদের বয়েসে এলে দেখব কাজের সেই উৎসাহ কোথায় থাকে?”
আজ বিনীত ভাবে সেদিনের সেই ছেলেটি বলছে,
“কাজের সেই উৎসাহ, কাজের প্রতি সেই নিষ্ঠা এবং ভালোবাসা ও দায়িত্ব বোধ আজ ২৯ বছর পরে ও একই আছে। যোগ হয়েছে অভিজ্ঞতা। সে এখন যে জায়গায় কর্মরত সেখানে যোগ দেওয়ার পর থেকে একই সাথে একাধিক দায়িত্ব ভার নিয়ে তাকে চলতে হচ্ছে যার মধ্যে অন্যতম প্রধান দায়িত্ব “অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার” এর। এই লক ডাউন পিরিয়ডে গত তিন মাস ধরে মাত্র একজন জুনিয়র অফিসারের সাহায্য নিয়ে সে ডিভিশনে কর্মরত সমস্ত অফিসার যাতে সময়ে তাঁদের মাসিক বেতন পান, তা নিশ্চিত করে গেছে এবং এখনও করছে এবং সে বিশাল বড় কোন কিছু করছে না, প্রশংসা পাওয়ার মত কোন কাজও করছে না বড়বাবু, সে শুধু নিজের কাজ করছে, যে কাজ করার জন্য সরকার তাকে মাইনে দেয়।“
সেদিনের সেই একমাথা চুল ওয়ালা ছেলেটার মাথায় পড়েছে টাক, দাড়ি গেছে পেকে, সে আজ চাকরী জীবনের ২৯ বছর পার করে এসে পা দিল ৩০ তম বছরে (মনে হয় যেন সেদিনের কথা)। সেদিনের সেই ছেলেটার নাম হল প্রয়াত প্রাণতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ছেলে শ্রীতোষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
২৯ বছর আগের ১৫ – ১৯ই জুলাইয়ে তার সাথে একই সাথে যোগ দিয়েছিল আরও কিছু বন্ধু। বুলবুল চক্রবর্তী, গৌতম সরকার, পার্থ মিত্র, শেহনাজ আখতার, পীযূষ ঘোষ, প্রবীর ঘটক, সৌভিত গোস্বামী (এক দুজনের নাম কি বাদ পড়ে গেল)। এর মধ্যে বুলবুল ১৫ তারিখেই যোগ দিয়েছিল, পার্থ – গৌতম – শেহনাজ যোগ দিয়েছিল ১৬ তারিখে (বাকিদের তারিখ মনে নেই)। এঁদের সব্বাই কে জানাই কর্মজীবনের ৩০ বছরে পা দেওয়ার শুভেচ্ছা। আরও বেশ কিছু বন্ধু আছে যেমন রজত বিশ্বাস, অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় ইত্যাদিরা এঁরাও এই জুলাই মাসেই পা দিচ্ছে চাকরী জীবনের ৩০ তম বছরে। সব্বাইকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
একটি দুঃখের স্মৃতিও জড়িয়ে আছে আজকের দিনটির সাথে। (খুব সম্ভবত ১৯৭০ সালে) আজকের দিনেই প্রয়াত হন আমার "ভাইয়া" (দাদু) ঁসুধীর মুখোপাধ্যায় (যাকে আমি জ্ঞানের চোখে দেখিনি, শুধু ছবিতে দেখেছি আর জেনেছি নাতিদের মধ্যে একমাত্র আমিই তাঁর কোলে ওঠার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলাম)। যদি সন ঠিক হয় তাহলে ৫০ বছর হয়ে গেল এই মর জগতের মায়া কাটিয়ে তাঁর চলে যাওয়া।

30 June, 2025

প্রশ্ন

 এই মাত্র ১১১ নাম্বার ওয়ার্ড থেকে ওনার ভাইরা

দীঘার নাথ দেবের প্রসাদ দিতে এল 

রথ যাত্রা কবে ছিল যেন ?

কলেজে হাসপাতালে ধর্ষকরা

এখন

বাঙালী ঠুঁটো জগন্নাথ এর ঘবে ঘরে

সুভদ্রার ধর্ষণের পরে

প্রসাদ বিলি করছে

রেশনে নেয় নি বোধ হয়

মানুষ

চিন্তা

 চিন্তা করি 

এই জীব ... গুলো

আসলে

মানুষ

না অন্য কিছু

Answer পাই 

 ওরা আসলে

ওনার বোন আর ভাই

মানুষ

 এই মাত্র ১১১ নাম্বার ওয়ার্ড থেকে ওনার ভাইরা

দীঘার নাথ দেবের প্রসাদ দিতে এল 

রথ যাত্রা কবে ছিল যেন ?

কলেজে হাসপাতালে ধর্ষকরা

এখন

বাঙালী ঠুঁটো জগন্নাথ এর ঘবে ঘরে

সুভদ্রার ধর্ষণের পরে

প্রসাদ বিলি করছে

রেশনে নেয় নি বোধ হয়

মানুষ

মনে পড়ে?

 

ঘটনার প্রেক্ষিত দেখতে হবে!
যা হয়েছে তা হল খদ্দেরের সাথে দরাদরি।
মন্তব্য গুলো মনে পড়ে?
না পড়লে মনে পড়িয়ে দিই। সুজেট জর্ডনের ঘটনায় মহিলাদের সম্মান করা দলটির কিছু দো পেয়ে (যারা নিজেদের ওনার ভাই / বোন বলে) এই শব্দ গুলো উচ্চারণ করেছিল। তখনও এক অংশের মানুষ মোহ গ্রস্ত। ৩৪ বছরের কালো পশ্চিমবঙ্গের থেকে জন্ম নিয়েছে ভালো বিশ্ব বংগ।
অপরাধের লিগ্যালাইজেশন করার প্রচেষ্টা শুরু হল তখন। মূল অভিযুক্ত যার সঙ্গে মুম্বাইতে রাত কাটিয়েছিলেন (ওই ঘটনার পর) বলে অভিযোগ সেই নায়িকাকে এম পি করে (এখন আবার তাকে কেউ পোঁছেও না) এগিয়ে যাওয়া হল আর এক ধাপ।
তার পরের ধাপ হল মানবিক মুখ দেখানো। কি ভাবে? টাকা ছুঁড়ে মারা। প্রশাসনের ব্যর্থতা ঢাকতে, বিশেষ কিছু লোক কে বাঁচাতে ক্ষতিপূরণ নামক কিছু ছুঁড়ে মারা। চুল্লু খেয়ে মরলে এত টাকা, ধর্ষণ হলে এত টাকা, ধর্ষণ করে খুন করলে এত টাকা - রেট বেঁধে দেওয়া হল। অপরাধীর শাস্তি হবে কি না হবে সেটা বড় কথা নয় - বড় কথা হল টাকা ছুঁড়ে মারা। মানুষকে গেলানো হল দেখ কত মানবিক উনি। এর আগে কোন মুখ্যমন্ত্রী (মনে রাখবেন পশ্চিমবঙ্গের থেকে বিশ্ব বংগের সবচেয়ে বড় ফারাক হলঃ বিশ্ব বংগে সব কিছু একজনের অনুপ্রেরণায় হয়। সরকার কোন কিছু করে না, করে একজন। তা সেটা ল্যাম্প পোস্ট হোক বা পাবলিক টয়লেটের উদ্বোধন) এমনটা করেছে? অপরাধের লিগ্যালাইজেশনের ২য় এবং মস্ত বড় ধাপ।
এর সাথে যে নতুন সুশীল সমাজ গজিয়ে উঠেছিল তারা তখন কাড়া - নাকাড়া নিয়ে লাফিয়ে - ঝাঁপয়ে বেড়াচ্ছে (কারণ সবাই জানে) (তাদের কেউ কেউ মন্ত্রী, কেউ বা কমিটি / কমিশন সদস্য), তিনি যত বলেন এরা বলে তার সহস্র গুণ। গুন্ডা কন্ট্রোল কারিণী সততার প্রতীকের দাপটে তখন "ভয়ে প্রাণ কাঁপে / পিলে চমকে ওঠে"।
এবার ধীরে ধীরে কামদুনি হল, বারাসাত হল এবং মানুষের অভ্যাস হয়ে গেল। ধীরে ধীরে সিভিক গজাল। এরপর যা হল, তা লিখতে গেলে বই হয়ে যাবে। চাকরী চুরিতে দুর্নীতি হয়েছে, চুরি করে চাকরী নিয়েছিল, আদালতের আদেশে চাকরী গেছে - পরোয়া নেই। যাদের টাকা দিয়ে চাকরী পেয়েছ তারা তো আর ঘুষের টাকা ফেরত দেবে, মানবিক উনি পাবলিক মানি থেকে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন (আবার সেই অপরাধের লিগ্যালাইজেশন)।
ফলে অভয়া নয় সুজেট যদি বিচার পেত তবে আজকের ঠুঁটো জগন্নাথ বাঙালীর বোন সুভদ্রা ওনার ভাইয়ের হাতে আইন কলেজে ধর্ষিতা হত না।
আইন কলেজে ওনার ভাইয়ের হাতে আইনের ছাত্রীর ধর্ষিতা হওয়া - বিশ্ব বংগের অপরাধের মাত্রার চরম নিদর্শন।