06 April, 2015



একটা গল্প অথবা সত্যি ঘটনা

অনেক দিন আগে শোনা
একটা ছোট্ট গল্প কবিতায় বলে যাই
নতুন ভাবে।

একটা ছোট্ট ছেলে ছিল
খুব অল্প বয়সে যখন সে মা’র কোলে শুয়ে
হাত –পা ছুঁড়ছে
বাবা চলে যায় সেই চির শান্তির দেশে।
মায়ের ভালোবাসায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে
ছোট্ট খোকন বড় হয়ে ওঠে।
মা ভাবে –
বাবার অভাব মিটিয়ে দেব আমি
আমি মা।
স্নেহছায়া ছড়িয়ে আগলে রাখল সন্তানকে
জীবনের যত দুঃখতাপ থেকে।
তাঁর প্রতিটি চাওয়া কর্তব্য মায়ের কাছে
ছোট অথবা বড়
হয়তো সামর্থ্য নেই তবুও –
ছেলেকে বাবার অভাব বুঝতে দেবে না কোনমতেই

পাওয়ার আনন্দে অভ্যস্ত তার
দাবি চলে বেড়ে
আজকে নতুন জুতোর ছবি দেখেছি
কাগজের বিজ্ঞাপনে আর তাঁর সাথে
উঁচু ওই বাজারটাতে নতুন মোবাইল
পাওয়া যাচ্ছে সস্তায়
এখুনি চাই তা।
বন্ধুদের হাতে – পায়ে যা আছে
আমারও চাই তা
স্বামীর রেখে যাওয়া টাকা শেষ প্রায়
মা ভাবে – কি করা যায় ?

মা – মা – মা
ছেলে আসে
কি বাবা – জুতোটা চাই ?
না গো মা
রেজাল্ট বেরিয়েছে
কোন ডিভিশন পেলি বাবা ?
দূর ! তুমি কিস্যু জানো না
এখন তো গ্রেড – অনেক উঁচু গ্রেড পেয়েছি
শোন - ওই সব গ্র্যাজুয়েট হয়ে হবে টা কি
ম্যানেজমেন্ট পড়ব –
কাছাকাছির মধ্যে আছে একটা
মাত্র লাখ দুয়েক লাগবে
হোস্টেলে থাকতে গেলে আরও ৪ – ৫
পড়ার খরচ আলাদা।

কিন্ত মা
আমি তো তোমায় ছেড়ে থাকতে পারি না
তাই ওই নতুন মডেলের যে বাইকটা এসেছে না বাজারে
কিনে দাও একটা –
কত আর দাম
লাখ খানেকের মধ্যে হয়ে যাবে
তেলের দাম তো কমছে এখন।
মাসে না হয় হাজার পাঁচেক দিও
চালিয়ে নেব ওতেই কোন রকমে,
কিন্ত বল তো মা –
বাড়ী থেকে যখন গমগমে আওয়াজে
রাস্তা কাঁপিয়ে চলবে গাড়ী – বলবে লোকে
মা বটে।

চার – পাঁচ বছরের তো মামলা
এক – দু বছর বাঙ্ক করলে ৬ – ৭
তুমি তো থাকবে ডার্লিং আমার সাথে।
বুঝলে মম্‌ সাত – আট বছর বাদে
তুমি হবে রাজরানী।

বাঁহাতে নতুন যৌবনকে বুকের কাছে জড়িয়ে
মা হাসে
এইটুকু চাওয়া মায়ের কাছে
আর কিছু চাইলি না
চাইলি না মায়ের আশীর্বাদ
গ্রেড পাওয়ার দিনে ?
তোকে দিয়েছি আমার প্রাণের কথা
তোর বাবা আর আমার দেখা স্বপ্ন মিলিয়ে
গড়ে তুলতে চেয়েছি তোকে।
তোর এইটুকু চাওয়া
পূর্ণ হোক – পূর্ণ হোক।
মা হাসে আর কাঁদে
কাঁদে আর হাসে !

এই গল্পের তো কোন শেষ নেই
প্রতিদিন এ’রকম কত গল্প লিখে চলে জীবন
কোন গল্প শেষ হয় বৃদ্ধাবাসে
কোন গল্পের পরিণতি হয়
বুল শিট বুড়ির গালি খাওয়ায়
খুব কম গল্প শেষ হয়
ভালোবাসা ঘেরা এক ভালো বাসায়।
এ গল্পের শেষ কোথায় আমি জানি না
আপনাদের কল্পনায় এ গল্প মেলুক ডানা।


একটি শিশু –
হাঁটতে চায়
পড়ে যায় বার বার
আবার চেষ্টা করে
সে তো জানে
একটা দেওয়াল আছে
অথবা
আছে একটা হাত
ভরসা দেবার
তাই সে চেষ্টা করে।

একটা স্বপ্ন জানে
স্বপ্ন দেখা সোজা
কাজটা বড় কঠিন
তবুও কাজটা আছে
ভরসা দেবার
তাই স্বপ্ন চেষ্টা করে।

একটা শিশু চেষ্টা করে
হাঁটবার
একটা স্বপ্ন চেষ্টা করে
সত্যি হওয়ার

কোন একদিন
এক সুন্দর সময়ে
এক শিশু হাঁটে
আর
এক স্বপ্ন বাস্তব হয়।


মানুষ – তার বিশ্বাস – চেতনা
মানুষ – তার প্রেরণা
বয়ে যায় দূরে – দূরান্তরে।
অসম্ভব কে সম্ভব করতে চাওয়া দৃষ্টি
স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যতের।
কল্পনা আর ভবিষ্যতের
তফাৎ থাকে না কোন।

যে মানুষ স্বপ্ন দেখে
পাগল বলে তাকে অন্য মানুষ
কিন্ত সেই মানুষের দেখা স্বপ্ন
তার চেতনা – তার বিশ্বাস
বদলে দেয় জীবন –
যেমন বদলে দিয়েছে আগে
তেমনি বদলাবে ভবিষ্যতেও।

ওই পাগল গুলো ছিল বলেই তো
মানুষ এখনও কবিতা লেখে –
গান গায় –
সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখে


যারা স্বপ্ন দেখতে পারে না –
ভয় পায় দিন বদলের স্বপ্নকে
রক্ত রাঙা সূর্য কে
তারা ওই স্বপ্ন দেখা মানুষের
শরীরটাকে মিটিয়ে ভাবে –
ব্যস্‌ - মৃত্যু ঘটে গেল স্বপ্নের
কিন্ত লাল রক্ত মাখা –
সেই পোড়া শরীর
আবার ওঠে জেগে
আবার স্বপ্ন দেখে।

আর – তাই
ঘাতককে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে
নিক্ষেপ করে
মানুষের স্বপ্ন – সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন
সত্য হয় ।।
গণশত্রু
বদলে গেছে নাম ওদের
বদলে গেছে চেহারা
বদলায় নি চরিত্র ওদের
ওরা গণশত্রু ।
আজ চিনে নিতে হবে
আজ দেখে নিতে হবে
আজ বুঝে নিতে হবে
মুখোশের আড়ালে
বদলে যাওয়া নামের আড়ালে
লুকিয়ে থাকা ওদের চেহারাগুলো
উন্মুক্ত করে দিতে হবে ওদের
ওরা গণশত্রু ।
ওরা ভয় পায় সুন্দর সমাজকে
ওরা ভয় পায় শান্ত সমাজকে
ওরা ভয় পায় ভালবাসাকে
ওরা ভয় পায় বেঁচে থাকাকে
ওরা ভয় পায় মানুষকে
ওরা ভয় পায় জীবনকে
ওরা গণশত্রু ।
ওরা ধ্বংসের গান গায়
ওরা হত্যার কথা কয়
ওরা পৃথিবীর মাঝে শুধু
হিংসা ছড়িয়ে দেয়।
ওরা গণশত্রু ।
ওরাই কংস নামে হত্যা করতে চেয়েছিল কৃষ্ণকে
এখন হয়ত ওদের নাম বি এইচ পি
ওরাই হিরণ্যকশিপু রূপে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল প্রহ্লাদকে
আজ হয়ত ওরা আর এস এস
ওরাই আক্রমণ হেনেছিল চৈতন্যের উপর কাজী রূপে
ওদের এখন জামাত বা আল – কায়দা বলে চেনা যায়
ওরাই ক্রুশ বিদ্ধ করেছিল যিশুকে
আজ ওরা হয়ত নিজেদের তালিবান বলে
আসলে ওরা প্রত্যেকেই গণশত্রু ।
যারা সক্রেটিস কে বিষ খেতে করেছিল বাধ্য
পুড়িয়ে মেরেছিল জোয়ান কে
অত্যাচারে – অত্যাচারে জর্জরিত করেছিল
ব্রুনো – কোপার্নিকাস – গ্যালিলিও কে
যারা সফদারের রক্ত নিয়ে মাতে উল্লাসে
মালালাকে করে গুলি
আর অভিজিত ওয়াশিকুরের রক্তে খেলে হোলি
প্রতিবাদীদের – যুক্তিবাদীদের রক্ত যাদের কাছে
তরল নেশা
তারা গণশত্রু ।
আজ এসেছে সময় সাথী
ওঠো জেগে
মানবজাতির স্বার্থে ওঠো জেগে
ওদের রক্তে স্নান করে
পৃথিবীকে পরিশুদ্ধ করতে হবে আজ
শোধ করতে হবে রক্ত ঋণ
মানুষের মানবিকতা বাঁচানোর জন্য
পৃথিবীকে সুন্দর করার জন্য
বড় দরকার
গণশত্রু দের নিকেশ করার
ধরো হাতিয়ার। শ্রীতোষ ০৫/০৪/২০১৫

27 March, 2015

কোন এক MOTHER'S DAY তে লেখা এই কবিতাটা খুঁজে পেলাম আজ সকালে। শেষ স্তবক জুড়ে দিয়ে রাখলাম আপনাদের কাছে।

DEDICATED TO ALL MOTHERS.

একটা গল্প অথবা সত্যি ঘটনা
অনেক দিন আগে শোনা
একটা ছোট্ট গল্প কবিতায় বলে যাই
নতুন ভাবে।

একটা ছোট্ট ছেলে ছিল
খুব অল্প বয়সে যখন সে মা’র কোলে শুয়ে
হাত –পা ছুঁড়ছে
বাবা চলে যায় সেই চির শান্তির দেশে।
মায়ের ভালোবাসায় সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে
ছোট্ট খোকন বড় হয়ে ওঠে।
মা ভাবে –
বাবার অভাব মিটিয়ে দেব আমি
আমি মা।
স্নেহছায়া ছড়িয়ে আগলে রাখল সন্তানকে
জীবনের যত দুঃখতাপ থেকে।
তাঁর প্রতিটি চাওয়া কর্তব্য মায়ের কাছে
ছোট অথবা বড়
হয়তো সামর্থ্য নেই তবুও –
ছেলেকে বাবার অভাব বুঝতে দেবে না কোনমতেই ।

পাওয়ার আনন্দে অভ্যস্ত তার
দাবি চলে বেড়ে
আজকে নতুন জুতোর ছবি দেখেছি
কাগজের বিজ্ঞাপনে আর তাঁর সাথে
উঁচু ওই বাজারটাতে নতুন মোবাইল
পাওয়া যাচ্ছে সস্তায়
এখুনি চাই তা।
বন্ধুদের হাতে – পায়ে যা আছে
আমারও চাই তা
স্বামীর রেখে যাওয়া টাকা শেষ প্রায়
মা ভাবে – কি করা যায় ?

মা – মা – মা
ছেলে আসে
কি বাবা – জুতোটা চাই ?
না গো মা
রেজাল্ট বেরিয়েছে
কোন ডিভিশন পেলি বাবা ?
দূর ! তুমি কিস্যু জানো না
এখন তো গ্রেড – অনেক উঁচু গ্রেড পেয়েছি
শোন - ওই সব গ্র্যাজুয়েট হয়ে হবে টা কি
ম্যানেজমেন্ট পড়ব –
কাছাকাছির মধ্যে আছে একটা
মাত্র লাখ দুয়েক লাগবে
হোস্টেলে থাকতে গেলে আরও ৪ – ৫
পড়ার খরচ আলাদা।

কিন্ত মা -
আমি তো তোমায় ছেড়ে থাকতে পারি না,
তাই ওই নতুন মডেলের যে বাইকটা এসেছে না বাজারে
কিনে দাও একটা –
কত আর দাম
লাখ খানেকের মধ্যে হয়ে যাবে
তেলের দাম তো কমছে এখন।
মাসে না হয় হাজার পাঁচেক দিও
চালিয়ে নেব ওতেই কোন রকমে,
কিন্ত বল তো মা –
বাড়ী থেকে যখন গমগমে আওয়াজে
রাস্তা কাঁপিয়ে চলবে গাড়ী – বলবে লোকে
মা বটে !
চার – পাঁচ বছরের তো মামলা
এক – দু বছর বাঙ্ক করলে ৬ – ৭
তুমি তো থাকবে ডার্লিং আমার সাথে।
বুঝলে মম্‌ সাত – আট বছর বাদে
তুমি হবে রাজরানী।
বাঁহাতে নতুন যৌবনকে বুকের কাছে জড়িয়ে
মা হাসে
এইটুকু চাওয়া মায়ের কাছে ?
আর কিছু চাইলি না
চাইলি না মায়ের আশীর্বাদ
গ্রেড পাওয়ার দিনে ?
তোকে দিয়েছি আমার প্রাণের কথা
তোর বাবা আর আমার দেখা স্বপ্ন মিলিয়ে
গড়ে তুলতে চেয়েছি তোকে।
তোর এইটুকু চাওয়া
পূর্ণ হোক – পূর্ণ হোক।
মা হাসে আর কাঁদে
কাঁদে আর হাসে !

এই গল্পের তো কোন শেষ নেই
প্রতিদিন এ’রকম কত গল্প লিখে চলে জীবন
কোন গল্প শেষ হয় বৃদ্ধাবাসে ।
কোন গল্পের পরিণতি হয়
বুলশিট বুড়ির গালি খাওয়ায় ।
খুব কম গল্প শেষ হয়
ভালোবাসা ঘেরা এক ভালো বাসায় !
এ গল্পের শেষ কোথায় আমি জানি না
আপনাদের কল্পনায় এ গল্প মেলুক ডানা। শ্রীতোষ ২৭/০৩/২০১৫