20 June, 2023

রথের রাজনীতি

 

আমাদের ছোট বেলায় গড়িয়াতে একটাই রথ হত।
রথ তলা থেকে বাটার গলি পর্যন্ত।
ছোট বেলা থেকে বড় বেলা পর্যন্ত সেই রথ কেই চিনেছি।
১৯৭২ থেকে ২০১১ সালের পরেও বেশ কিছু সময়।
রথ তলা থেকে আগে পরে কিছু এলাকা জুড়ে রথের মেলা বসত।
জিলিপি - গজা আর পাঁপড়ের কি যে স্বাদ।
তখন অলিতে - গলিতে রথ টানত কচি কিছু মুখ
নিজেদের হাতে সাজানো সে রথে
তিন দেবতার সামনে থাকত কিছু নকুল দানা আর বাতাসা
কচি কচি হাত প্রসাদ দিত
কাকু - কাকিমা রা ১ পয়সা - ৫ পয়সা প্রণামী দিত।
কেউ যদি চারানা দিত
কি খুশি সেই মুখ গুলো।
কাল শুনলাম হুম্মচকে রথ চলবে শীতলা মন্দিরের সামনে থেকে
আজ বাড়িতে ফেরার সময় দেখলাম রথ চলেছে
কল্যাণ পরিষদ ক্লাবের সামনে দিয়ে
পাহারায় দুটো পুলিশ।
গলির সে রথ আজ কি আর চলে
আজ তো রথ রাজনীতির খেলা
কে বড় হিন্দু তা প্রমাণ করতে চাওয়া।
অলিতে গলিতে রথ টানা সেই শিশু মুখ গুলো
আজ আর নেই
রথ রাজনীতির চাকায় পেষা ওদের হাসি মাখা মুখ
রক্তে ভরেছে।
তবুও জানি
সময়ের রথ চলছে।
একদিন ওদের ওই হাসি মাখা মুখ
এক তীব্র ঝঞ্ঝা হয়ে গুঁড়িয়ে দেবে
এই সব ---- রাজনৈতিক ---- দের ----কে।
সেদিন আবার গড়িয়াতে একটাই রথ চলবে
আর অলিতে - গলিতে চলবে
কচি হাতের টানা অজস্র রথ।
সত্যিই বলছি সেই দিনের আগে মরব না
যদি মরি
সেই স্বপ্ন চোখে দেখেই মরব।
আমার কাছে ধর্ম মানে ধারণ করা
আমি সেই ধর্ম কে বিশ্বাস করি
যা সব মানুষকে আনন্দ দেয়।
একটি শিশুর হাসি
একটি শিশুর চাওয়া
আমাকে সেই ধর্মের সন্ধান দেয়।
শিশুর হাতে টানা রথ
সেই রথে বসে থাকা পুতুল গুলো যখন
এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় টালমাটাল হয়ে পড়ে যেতে চায়
পরম যতনে তাকে জড়িয়ে ঠিক করে বসিয়ে দেওয়া
আমাকে ভালোবাসা শেখায়।
আমি ঘৃণা করি রথের রাজনীতিকে।
শ্রীতোষ
২০/০৬/২০২৩

No comments:

Post a Comment